আইয়্যামে জাহেলিয়া যুগের (অমব ড়ভ ওমহড়ৎধহপব) অবসানের পর ও সভ্যতার যুগের আবির্ভাবের পর থেকে দুনিয়ার শাসন, প্রশাসন, আইন, বিচারসহ বিভিন্ন পর্ষদ বা প্রতিষ্ঠানে সমস্যা ভিত্তিহীন কিছু নহে। তাতে সংযুক্ত রয়েছে দফতর, অধিদপ্তর, পরিদফতর, বিভিন্ন শাখা ও প্রশাখা। তারপর রয়েছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মক্তবসহ সরকারি বেসরকরি অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। যে দৃশ্যপট দুনিয়ার প্রচুর দেশের চালচিত্র হিসেবে স্বীকৃত। তারপর দুনিয়ার প্রচুর দেশ রয়েছে, যেখানে এখনও স্বৈরতন্ত্র ও রাজতন্ত্র বিদ্যমান। তদোপরি সৌদি আরব থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের নারীদের অমানুষিক নির্যাতনের উক্তি দেশী বিদেশী গণমাধ্যম ও ভূক্তভোগীদের নিকট থেকে শুনলে পাষন্ড হৃদয়ও শিহড়িয়ে ওঠে। ভারতের কাশ্মীরের মুসলমান, চীনের উইঘুর মুসলমান, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান, ইসরাইলের নির্যাতিত স্বাধীনতাকামি ফিলিস্তিনি মুসলমানদের উপর অমানুষিক বর্বরতার যেন শেষ নেই। সম্প্রতি ভারতের মুসলমান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিজেপি ও আর.এস.এসের দানবীয়তা বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। এ ছাড়া ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তান, লেবানন, লিবিয়া, ইয়ামেনসহ আরও প্রচুর মুসলীম দেশে চলছে আত্মঘাতি ও জাতিমূলক সহিংসতা। আর এ সুযোগে দুনিয়ার ক্ষমতাধর দেশগুলো এ সুযোগ কাজে লাগাতে মুহুর্তমাত্র দেরি করছেনা।
এক সময় উগান্ডার প্রেসিডেন্ট ইদি আমিন যেমন সারা দুনিয়ায় বেকুব ও পাগল হিসেবে আখ্যায়িত ছিল, এখন দুনিয়ায় এমন পাগলের লীলা খেলার যেন শেষ নেই। তবে পাগলেরও জাত বিজাত রয়েছে। ভবের পাগল বা আল্লাহর পাগল, ভাবের পাগল বা স্বার্থের পাগল, খাজা বাবার পাগল, টাকার পাগল ও রাজনীতির আড়ালে কৃষ্ণকর্ম সাধনে প্রচুর কিছিমের পাগল। যার শেষ নেই। আল্লাহ রাব্বুল আল আমিনের জন্য যারা ভবের পাগল, তারা এ দুনিয়ার মোহমায়া সবকিছু ত্যাগ করে আল্লাহ, রাসুল ও কোরআনের বাণী প্রচার ও প্রসারে নিয়োজিত। আজ যদি দুনিয়ার মুসলীম রাষ্ট্র ওআইসি (ঙৎমধহরুধঃরড়হ ড়ভ ওংষধসরপ ঈড়ঁহপরষ) একজোট বা ঐক্যবদ্ধ থাকত তবে মিয়ানমারসহ অন্যান্য দেশে কোনোভাবেই মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও নিগ্রহ চালানোর আদৌ সাহস পেতনা। পরবর্তী নিবন্ধে এ ব্যাপারে বিশদ আলোকপাতের অভিপ্রায় রেখে নিবন্ধের আলোকে দৃষ্টিপাত সাধন হলো।
স্বাধীনতার এত বছর ধরে ভাবের পাগলদের গতিবিধি, কৃষ্ণকর্ম, আচার, আচরণ ও স্বার্থপরতার উক্তি কমবেশী যেহেতু সবারই জানার উক্তি তারপরও উপমা, উদাহরণ, দৃষ্টান্ত ও দৃশ্যপটের যেন শেষ নেই। অন্ন, বস্ত্র, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান সমস্যা ও সমাধানের সাথে সংশ্লিষ্ট তদারকি কর্তৃপক্ষসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম, দুর্নীতি, অসংলগ্নতা, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দাপটের চিত্র মামুলি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিনিয়ত বেড়–চ্ছে সংশ্লিষ্টদের নিঃশ্বাস থেকে বিষাক্ত কার্বন-ডাই-অক্সাইড। শাসন, প্রশাসন, নিয়ম ও বিচার কার্যে প্রচুর ন্যায় নিষ্ঠাবান, আদর্শবান ও ভালো লোকের যেমন অল্পতা নেই, তেমনি ভাবের পাগলেরও অভাব নেই। সাধারণতঃ স্বার্থপর ভাবের পাগলদের পিজিপিএস (চৎবংবহঃ এড়াবৎহসবহঃ চধৎঃু ঝঁঢ়ঢ়ড়ৎঃবৎ) ছাড়া যেমন কোনো দল নেই, তেমনি তাদের কোনো দর্শন ও আদর্শ নেই। এ শ্রেণীটা সমাজে রংধনু,
বেনীআসহকলা ও ভিবজিআর হিসেবে পরিচিত। তাদের পাশে অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি, অপরাধ, অপকর্ম, ভাগম্বরীতা যেমন তুচ্ছ তেমনি লুটপাট ও ক্ষমতার অপব্যবহারই মূল পুঁজি (ঈধঢ়রঃধষ) হিসেবে স্বীকৃত। গণমাধ্যম, মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফেসবুকে দৃষ্টিপাত করলে অহরহ বিভিন্ন কিছিমের ভাবের পাগলদের হালহকিকত, দৃশ্যপট ও আমলনামা কারও না জানার উক্তি নয়। যদি এখন থেকেই লাগাম শক্ত হাতে ধরা না হয়, ফসকা গিরো ভাবের পাগল ও হাক্কা পাগলরা যদি ক্ষেত খায়, তবে দেশের মানুষের দুঃখ, বেদনা, হায় আফসোস ও অনুশোচনার কিছ্ইু শেষ না থাকারই কথা। তাই অনেকেই মনে করে হাক্কা পাগল, দুর্নীতির কুশীলব, কৃষ্ণকর্ম সাধনের হোতা ও ভাবের পাগলদের অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের পাশাপাশি জেহাদ ঘোষণা সাধন উচিত। তা না হলে চাটুকারদের জন্য অর্জন, উন্নয়ন ব্যাহত হলে করার কিছু নাও থাকতে পারে।
এক সময় আফগানিস্তানে আফিমের চাষ শুরু হলে প্রাথমিক অবস্থায় এর নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা (উঁংঃরপ অপঃরড়হ) গ্রহণ না করাতে এমন বিস্তৃত হয়েছে যা এখন সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ডোজার চালিয়ে ও পুড়িয়েও আয়ত্বে আনা যাচ্ছে না বলে সূত্রে জানা যায়। সমাজে অসংখ্য লোক রয়েছে যারা আজও প্রচুর মন্দ কাজের যেমন প্রতিবাদ করে তেমনি অনেকের ভালো কাজকেও প্রশংসিত, সাধুবাদ ও উৎসাহ জানিয়ে থাকে। অনেকে পুনরায় নিবন্ধে, প্রবন্ধে মতামত ও প্রতিবেদনে এসব কিছু জনগণের নিকট উপস্থাপন করতেও কুন্ঠাবোধ করে না। অনেকে পুনরায় সরকারের গ্রহণযোগ্য কাজকে যেমন উৎসাহ, উদ্দিপনা, প্রেরণা ও সমর্থন করে থাকে, তেমনি অবিচার কাজকেও নিরোৎসাহিত করতে সংকুচিত হয়নি। অর্থাৎ ভালো কাজকে উৎসাহিত সাধন ও সমর্থন সাধন যেমন দায়িত্ববোধের ভাগ তেমনি মন্দকাজকেও নিরোৎসাহিত করাও স্বচ্ছ মনমানসিকতা ও দায়িত্ব বোধেরই ভাগ বিশেষ। তাতে কে বা কাহারা মারহাবা দিল, খুশী হল আর কে বা কাহারা অখুশী হয়ে ডুগডুগি বাজাল তাও দেখার বিষয় নহে। যা বাস্তবতার প্রতিফলন হিসেবেই স্বীকৃত।
জানা যায়, স্বাধীনতার ৩/৪ বছর পর মাওলানা ভাসানী প্রতিষ্ঠিত টাঙ্গাইলের সন্তোষের কাগমারী মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজকে সরকারি কাজ সম্পাদন করতে আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তখন সন্তোষের ভাসানী দরবার হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মাওলানা ভাসানী মধ্যাহ্ন ভোজে আপ্যায়নের ব্যবস্থা করলেন। দরবার হলের আপ্যায়নে বঙ্গবন্ধু আসার পূর্বেই মাওলানা ভাসানী টাঙ্গাইলের ডিসি, এসপিকে নিয়ে দরবার হলে খাদ্য মেন্যু দেখতে গেলেন। গিয়ে দেখেন, একটি লোক এমনিতেই দরবার হলে এদিক-সেদিক ঘুরাফিরা করছে। তা দেখে মাওলানা ভাসানীর সাথে থাকা ডিসি ও এসপিকে জিজ্ঞাসা করলেন ওই লোকটি এখানে ঘুরছে কেন। তখন ডিসি, এসপি উত্তর দিলেন, হুজুর লোকটা উ™£ান্ত ও পাগল। তখন মাওলানা ভাসানী প্রতি উত্তরে বলেছিলেন, উ™£ান্ত ও পাগল লোকটি ভবের পাগল না হয়ে ভাবের পাগলও হতে পারে। এমনিভাবে ভাবের পাগল ও কৃষ্ণকর্ম সাধনের তাল বেতালের পাগল নিয়ে অংশ যে গল্প ও কাহিনি রয়েছে এর খবরই বা রাখে কজনা। স্ত্রী, পুত্র, পরিজন, আত্মীয়স্বজন পরিত্যাগ করে দুনিয়ার মোহমায়া ত্যাগ করে আল্লাহার দিদার লাভের জন্য ভবের পাগলের কথাও অল্প শুনা যায়নি।
অনেকেই পুনরায় রাজনীতির আড়ালে কৃষ্ণকর্ম সাধনে টাকা, বাড়ী, গাড়ী, কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স, দেশের সাধারণ মানুষের রক্তে অর্জিত অর্থ লোপাট করতে সংকোচ বোধ করছে না। স্বার্থের কারণে রাজনীতির আড়ালে ভাবের পাগল সেজে আঙুল ফুলে কলাগাছ ও বটবৃক্ষ হয়ে দেশে বড় বড় বাড়ী, ফ্ল্যাট, ইন্ডাস্ট্রি, নামীদামী গাড়ী, কানাডা, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, আবুদাবী, ইংল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে যে হোম ল্যান্ড বানাচ্ছে এসবের সংবাদ রাখেই বা কজনা। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ইং একটি গণমাধ্যমের সংবাদ থেকে জানা যায়, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যে অর্থ পাচারকারীদের তথ্য জানতে দুদকের একটি টিম সেসব দেশে যাচ্ছে এবং অর্থ পাচারকারীদের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহে এফবিআই ও ইন্টারপোলের সহায়তা নেয়া হবে বলেও জানা যায়। এ ছাড়া এ সমস্ত দেশে অর্থ পাচারের কোন কোন প্রভাবশালী নেতা, গডফাদার, নাটের গুরু ও সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা জড়িত ও সহায়তাকারী তাদের ব্যাপারেও খোঁজ সাধন হবে বলে জানা যায়।
এতে পরিস্কার হয়ে ওঠেছে রাজনীতির আড়ালে কৃষ্ণকর্ম সাধন ও সরকারি পরিসরে থেকে দুর্নীতি করে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যবসা বাণিজ্য ও হোমল্যান্ড করেও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো কারণে দুদক যদি সফলতা লাভ না করে তবে দেশের মানুষের আফসোস করার মতো কোনো কিছু অবশিষ্ট না থাকারই কথা। এমনিতেই মানুষের মনে ক্যাসিনোর গডফাদার, নাটের গুরু, শাসন প্রশাসনের প্রচুর কাজের ব্যাপারে প্রধান ব্যক্তি ও কর্মচারীদের দুর্নীতির প্রতিচ্ছবি ক্ষমার অনুপযুক্ত দোষ (টহঃড়ষবৎধনষব ড়ভভবহপব) হিসেবে ব্যপ্তি ঘটে চলছে। যা দেখে মনে হয়, দেশটা যেন তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। স্বাধীনতার এত বছরে রাজনীতির আড়ালেও শাসন, প্রশাসন, আইনসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্বার্থসিদ্ধির জন্য সব অর্জনকে ম্লান করে দিয়ে এগিয়ে চলছে দুর্নীতি। ১৯৭৪ সালে স্পেশাল পাওয়ার এ্যাক্ট, ৭৫ সালে সামরিক শাসন, ৮২ সালে সামরিক শাসন, ২০০২ সালে অপারেশন ক্লিনহার্ট, ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেন ও বর্তমানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিশেষ এলার্ট থাকলেও দুর্নীতি যেন সোনামির মতো সামনে এগিয়েই চলছে।
যুবলীগের গডফাদারদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো অভিযানের পর নতুন করে নরসিংদী যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক পাপিয়া চৌধুরী ও তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মাদক, নারী বাণিজ্য, বে-আইনী অস্ত্র ও আয়ের সাথে সংগতিহীন
বিপুল অংকের টাকা জব্দ করে র্যাব। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ২৪/০২/২০২০ ইং প্রকাশিত হয়। পাপিয়া অভিজাত ওয়েস্টিন হোটেলে তিন মাসে ৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে এবং এই হোটেলে মদ ও নারীর র্যান্ডাম ব্যবসা চলত বলে গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়। রোববার তাদের বাসায় অভিযান চালিয়ে ১টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, ৫ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকাসহ আরও কিছু জিনিস উদ্ধার সাধন হয়। জানা যায়, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, পতিতা ব্যবসার পাশাপাশি ব্ল্যাকমেইল করে পাপিয়া ও তার স্বামী গড়ে তুলেছে সম্পদের পাহাড়। কিউ এ- সি নামে নরসিংদীতে ক্যাডার বাহিনী গঠন, চাকরির প্রলোভন দিয়ে মেয়েদেরকে ঢাকায় এনে অনৈতিক কাজে বাধ্য করা, মদ বাণিজ্যসহ আরও বে-আইনী কাজে প্রলুব্ধ করা, জাল টাকার ব্যবসা ও বিভিন্ন চলছাতুরি ও ব্ল্যাক মেইলিং। এ ছাড়া থাইল্যান্ডে তার স্বামীর ব্যবসা ও ফ্ল্যাট থাকার কথাও জানা যায়। সেখানেও মদ ও নারী বাণিজ্য জমজমাট। এ ছাড়া রাশিয়া থেকে ১০টি নারীকে এ ব্যবসার জন্য আনা হয়। যার সাথে রয়েছে প্রচুর নামীদামী কুশীলবদের সংস্পর্শ।
এ নিবন্ধটি লেখার সময় আমার পাশে উপস্থিত এক সময়ের ছাত্র ইউনিয়ন ও ভাসানী ন্যাপের রাজনীতিক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বন্ধুবর দোস্ত। দোস্ত বললেন, বাংলাদেশ আমাদের গর্ব। বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা আমাদের অহংকার। প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা ঐতিহাসিক ২১শে ফেব্রুয়ারি, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, মাওলানা ভাসানীর ঐতিহাসিক ১৬ মে ফারাক্কা লংমার্চ দিবসসহ আরও গুরুত্বপূর্ণ দিবস যথাযথ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন করে হয়ে থাকে। স্বাধীনতার ৪৯ বছরে দেশের প্রচুর অর্জন ও উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তবে পাল্লা দিয়ে দুর্নীতি এমনভাবে সামনে এগুচ্ছে যা দেখে মনে হয় সব অর্জন ও উন্নয়নকে কপোঘাত ও ম্লান করে দিচ্ছে। এসব থেকে পার হওয়া ঘটাতে না পারলে ক্ষোভ ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। আরও বললেন, দেশের উন্নয়ন ও অর্জনের পাশাপাশি অনিয়ম, দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারে এখনই দাঁড়াতে হবে। দেশের সাংবাদিক সমাজ সোচ্ছার না হলে অর্জন ও উন্নয়ন ঘূর্ণিঝড়, সোনামি ও গোর্কির তান্ডবের ন্যায় লন্ডভন্ড হয়ে গেলে কপালে হাত ও ক্ষোভ ছাড়া আর কিছু থাকবে না। আজ দেখা যায়, সাংবাদিকরা যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে, নাজেহাল হচ্ছে তাও দেশের জন্য সুসংবাদ নহে। তারপর ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে ভোট অনুষ্ঠানে অনিয়মের কথাও তোলে ধরেন। যেখানে ২৭.১৫ পার্সেন্ট ভোট পড়ে এবং ১৩.১৭ পার্সেন্ট ভোট নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়। আরও বলেন, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মত প্রকাশে বাধা, ব্যারিকেড কারও বাঞ্ছনীয় নহে। মোদ্দা উক্তি প্রবাসী বন্ধুবর দোস্তের বক্তব্য ছিল, দুর্নীতির বিদায়, উন্নয়ন, অর্জন, উক্তি ও কাজের সমন্বয়, রাজনীতির আড়ালে কৃষ্ণকর্ম, ভাবের পাগলদের সংযত করণ। সাংবাদিকদের মত প্রকাশে উৎসাহ ও রাজনীতির আড়ালে কৃষ্ণকর্ম সাধন ও ভাবের পাগলদের থুথু মেরে বিদায় দেয়াসহ শাসন, প্রশাসন ও অন্যান্য স্তরে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের পেছনে অমূছনীয় মালিন্য লেপন করে বিদায় করে দেয়া। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ও দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছে। তাদের অবদানকে কোনো ভাবেই বেঁটে করে দেখার সুযোগ নেই। ওরা আমাদের গর্ব ও অহংকার। বন্ধুবর প্রবাসী দোস্ত ক্ষোভ করে আরও বললেন, একসময় কিশোরগঞ্জের ন্যাশনাল সুগার মিল, কিশোরগঞ্জ টেক্সটাইল মিল, কালিয়াচাপড়া সুগার মিল ব্যক্তি মালিকানায় বিক্রী হওয়াতে দুটি মিল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে ও একটি অস্থিত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ায় এলাকার শত শত কর্মোদ্যোগী মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। আর যারা মিল দুটি কেনা করে চালানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তাও বন্ধ করে রেখেছে। তাদেরকে এলাকার কর্মহীন, বেকার ও সাধারণ মানুষ ভাবের পাগল বলতেও কুন্ঠাবোধ করছে না।
দেশের শাসন, প্রশাসন, আইন, সরকারি, বেসরকারি পর্ষদ, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, মক্তবসহ সর্বক্ষেত্রে যদি কৃষ্ণকর্ম ও রাজনীতির আড়ালে ভাবের পাগলের প্রাধান্য থাকে, ক্যাসিনো ও পাপিয়াদের মতো কাড়িকাড়ি টাকা কামানো, মদ, বাণিজ্য ও বেলাল্লাপনা নারীদের সংশ্রব থাকে তবে কোনো সুষ্ঠু রাজনীতি, অর্জন ও উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে অনেকেই মনে করে থাকে। দরকার কথা, পেশা ও প্রতিশ্রুতির সমন্বয়। দেশের প্রতি দরদ, জাতীয়তাবোধ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের অপরিসীম ত্যাগকে অনির্বান শক্তিতে বিকশিত করা। জাতীয় উন্নয়ন, কল্যাণ, সংহতি প্রতিষ্ঠা ও সকল প্রকার বৈরীতার অবসান কল্পে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, সুমহান গণতন্ত্র ও সংবিধানের পথই হোক পাথেয়। যারা রাজনীতির আড়ালে কৃষ্ণকর্ম ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা দুর্নীতিতে সিদ্ধহস্ত এ ধরণের গডফাদার, গডব্রাদার, পাপিয়ার মত গডসিস্টার, নাটের গুরু ও ভাবের পাগলদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক স্বচ্ছ, সুন্দর রাজনীতি ও উন্নয়নই জনপ্রত্যাশা। পরিশেষে মাওলানা ভাসানীর উক্তি টেনে বলব, উ™£ান্ত ও পাগল ভবের পাগল না হয়ে ভাবের পাগলও হতে পারে। ইংল্যান্ডের একজন নামদামী লেখক ফ্রিডম এ- ডেমোক্রেসি বইয়ে লিখেছেন বিাচর বিভাগের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের মূলমন্ত্র। অথচ দেখা যায়, ০৩/০৩/২০২০ ইং একজন জেলা ও দায়রা জজ জামিন আবেদন বাতিল করায় তাহাকে সরানো সাধন হয় এবং ৩ ঘন্টার মধ্যে পুণরায় জামিন দেয়া হয়। এসবকে নজির বিহীন আইনের লংঘন ব্যক্ত করে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। এ ব্যাপারে কি কারণে জেলা ও দায়রা জজকে আপসারণ সাধন হয়েছে হাইকোর্ট তা জানতে চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট রুল নোটিশ জারি করেছে বলে জানা যায়। এ ঘটনাকেও কৃষ্ণকর্ম ও ভাবের পাগলের দৃশ্যপট বললে অত্যুক্তি হওয়ার মত তেমন কিছু নাও থাকতে পারে বলে অভিজ্ঞজনরা মনে করে থাকে।
এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট