আব্দুল জলিল পেশায় পান বিক্রেতা। প্রতিদিন রেলগেটের ফুটপাতে বসেন। সারাদিন পান, বিড়ি, সিগারেট বিক্রি করে যে আয়ই করে তার দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন তিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ৪ দিন পর ফুটপাতে বসেও মিলছে না ক্রেতা। সোমবার বেলা ১১ টার দিকে বগুড়ার সান্তাহার রেলগেটের ফুটপাতে পানের দোকানে বসে কর্মহীন অলস সময় পার করার এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
আব্দুল জলিল একা নয়, তার মতো যাদের দিন এনে দিন কাটে টেনেটুনে, তিন বেলা ভাত জোটানো তাদের জন্য কষ্টকর করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার চেয়ে তাদের কাছে তিন বেলা খাবার খেতে পাওয়াটাই এখন বড় চিন্তা। সকাল থেকেই পৌর শহর অপেক্ষাকৃত ফাঁকা। নেই লোক সমাগম। রাস্তায় টহল দিচ্ছেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ঘর থেকে বের না হতে ঘোষণা দিয়ে চলছে মাইকিং। আনুষ্ঠানিকভাবে লকডাউন করা না হলেও ২৬ মার্চ থেকে কার্যত পুরো শহর অলিখিত লকডাউন হয়ে আছে। এ সময়ের মধ্যে ফার্মেসি আর নিত্যপণ্যর দোকান ছাড়া সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। মানুষ কে ঘরে রাখতে চলছে নানা কার্যক্রম। আর এই স্বেচ্ছায় বন্দিতে বিপাকে পড়েছেন দিন মজুর ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো।
পান বিক্রেতা আবদুল জলিল বলেন, রোগের ভয়ের চেয়ে পেটের ক্ষুধার জ্বালা অনেক বেশি। ঘরে বসে থাকলে খাবার দেবে কে? তাই বের হয়েছি। কিন্তু শহরে তো মানুষ নাই। পেট চলবে কেমনে ? জুতা, স্যান্ডেল ঠিক করা কারিগর ভোলা রবিদাস বলেন, প্রতিদিন জুতা, স্যান্ডেল সেলাই করে যা আয় হতো তা দিয়ে সংসার চলতো। কিন্তু বর্তমানে মানুষের সমাগম বন্ধ করার জন্য আমাদের দিনপথ তো চলছে না, কি করে সংসার চলবে। এখন আমরা গরিব মানুষ কোথায় যাব। এখনও পযর্ন্ত সরকারী কোন অনুদানও পায়নি। এভাবে কিছুদিন গেলে না খেয়ে থাকতে হবে।
এ ব্যাপারে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ,কে,এম আব্দুল্লা বিন রশিদ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ত্রাণ এসে পৌঁছেছে, কিছু ত্রাণ আসছে। কর্মহীন মানুষের মাঝে এসব ত্রাণ সামগ্রী যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিতরণ করা হবে।