করোনা ভইরাসে যখন নিস্তব্ধ দেশ এ সুযোগে সরকারী খাল দখলের মহোৎসব চালাচ্ছেন সুরুজ্জামাল নামের একজন আ.লীগ নেতা ড্রেজার দিয়ে মাটি ভরাট করে ওই খালে স্থাপনা নির্মাণ করছেন তিনি। খালটি ভরাট করলে বাজারের পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা মারাত্বক ভাবে ব্যহত হবে।
শনিবার বেলা ১২টার দিকে উপজেলা যাদুরচর ইউনিয়নের কর্তিমারী বাজার সংলগ্ন এলাকায় গেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় সরকারী খাল দখলের মহোৎসব। খালটি পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা। খালের দক্ষিণ পাশে কর্তিমারী হাটবাজার। উত্তরে ব্যক্তি মালিকানা জমি। বাজারের পানি ও পয়োনিষ্কাশনের একমাত্র ড্রেনটি এ খালে এসে পড়েছে। পানি, ময়লা আবর্জনায় ভরা এ খালের মধ্যে সারি সারি বাঁশের খুটিতে টিনের চালা নির্মাণ করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিন দিয়ে পূর্বপাশ থেকে খালটিতে মাটি ভরাট ও অবকাঠামো নির্মাণের কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক।
কর্তিমারী বাজারের ব্যবসায়ী সাইদুর, রহিম, জালাল, হাবিবুর, খালেক বলেন, সরকারী খাল দখলের বিষয়টি একাধিকবার প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সে আওয়ামী লীগ করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সাহস কেউ পায় না। সে কাকড়া গাড়ি দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করে। আমরা জনসাধারণ মনের চাপা ক্ষোভ প্রকাশ করা ছাড়া আর কি করবো। খালটি ভরাট করলে বাজারের পানি ও পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা মারাত্মভাবে ব্যহত হবে। খালটি ভরাট করলে বাজারের পানি যাওয়ার কোন ব্যবস্থ্া থাকবেনা।
আ’লীগ নেতা সুরুজ্জামাল সরকার বলেন, আমি রৌমারী উপজেলা আ.লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক। খালটি আমার পৈত্রিক সম্পত্তি। মামলায় রায় মাধ্যমে ওই জমি পেয়েছি আমি। খালে আমার ৩৪ শতক জমি রয়েছে। তাই খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করছি।
যাদুরচর ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সবুজ বলেন, যাদুরচর মৌজার ১নং খতিয়ানের ৩৬৩২নং দাগে সুরুজ্জামালের পূর্বপুরুষের কোনো জমি ছিল না। আদালত থেকে একতরফা রায় নিয়ে তিনি সরকারী খাল দখল করছে। আজ থেকে প্রায় ৮/১০ বছর আগে তৎকালীন ইউএনও শওকত আলম মজুমদার ওই জায়গার ডিসিআর দিয়েছিলেন। পয়োনিষ্কাশনের চিন্তা মাথায় রেখে সেখানে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে দেয়া হয়নি।
তহশিলদার গোলাম মর্তুজা বলেন, আমি দখলকারীকে বারবার নিশেধ করার পরও তিনি কারো কথা মানছেন না। তাই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সাবেক এমপি রুহুল আমিন বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের প্রত্যক্ষ মদদে ওই আ.লীগ নেতা সরকারী খাল দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করছেন। তিনি আ.লীগের গুরুত্বপূর্ণ কিছু নেতার নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপকর্ম করছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে জেলা প্রশাসক, ইউএনও, এসিল্যান্ড ও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। কিন্তু কে শোনে কার কথা। তারা এখন করোনা নিয়েই ব্যস্ত। খালটি ভরাট হলে কর্তিমারী হাটবাজার অচল হয়ে পড়বে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, সরকারী খাল দখলের বিষয়টি শোনার পর সেখানে কোনো প্রকার মাটি ভরাট বা স্থাপনা নির্মাণ যেন না হয় সে বিষয়ে আমি তহশিলদারকে নির্দেশ দিয়েছি।