করোনা ভাইরাসের মধ্যে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের মহোৎসব চলছে। গত এক সপ্তাহ থেকে এই পুকুর খননের কাজ চলছে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হলে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
জানা যায়, উপজেলার বিনোদপুর গ্রামের মৃত ভাদু মন্ডলের ছেলে অসিত মন্ডল হাবাসপুর বিলের মধ্যে কাঁচুর ডিপ টিউবয়েলের পাশে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে ৩ ফসলী জমিতে পুকুর কাঁটার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে অর্ধেক জমিতে পুকুর টাকা হয়েছে। এই পুকুর কাঁটার কারণে ট্রাক্টর অনবরত গ্রামের মধ্যে দিয়ে চলাচল করায় রাস্তা যেমন নষ্ট হচ্ছে, এই করোনা ভাইরাস ও রমজানে ধুলায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ।
উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের মন্টু মিয়া চাকিপাড়া বিলে ৪ বিঘা জমিতে পুকুর খনন করছেন। এখানে ভোর রাত থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত শ্রমিক দিয়ে এই পুকুর খননের কাজ করা হচ্ছে।
এছাড়া তাপস হোসেন ২ বিঘা জমির উপর পুকুর খননের কাজ করছে। পাশে ফিরোজ হোসেনের ২ বিঘা, রতন আলীর ৩ বিঘা, লিটন হোসেনের ৩ বিঘা, বাবুল হোসেনের ৪ বিঘা, মাসুদ আলীর ৪ বিঘা, বাদশা হোসেনের ১ বিঘা জমিতে পুকুর খননের কাজ চলছে।
নিশ্চিন্তপুর বিলে আপেল মাহামুদ ও আবদুল মতিন ৩ বিঘা জমিতে দুই দিন থেকে পুকুর খননের কাজ শুরু করেছে। আমোদপুর গ্রামের দেলজান আলীর পাড়ির পাশে পুকুর খনন করছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসন, পুলিশ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যখন ব্যস্ত তখনই এই সুযোগ নিয়ে উপজেলার চাকিপাড়া, হাবাসপুর, আমোদপুর বিলে পুকুর কাঁটার মহাউৎসব শুরু করা হয়েছে।
তিন ফসলি জমিতে পুকুর কাটছেন কেন এমন প্রশ্ন করা হলে বিনোদপুর গ্রামের অসিত মন্ডল জানান, আমি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুকুর কাটছি। তাহলে রাতের বেলায় পুকুর কাঁটার কাজ করছেন কেন, এমন প্রশ্ন করা হলে অসিত মন্ডল কোনো উত্তর দেয়নি। তবে দ্রুত পুকুর কাঁটার কাজ বন্ধ করে তিন ফসলি জমি ও গ্রামীণ রাস্তাঘাট রক্ষা করার দাবি জানান এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে পুকুর খনন বন্ধ ও জলাবদ্ধতা নিরসন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক হিরেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, জনগনকে সচেতন করে প্রশাসনকে সহযোগিতা করছি। ইতিমধ্যেই কয়েকটি পুকুর খনন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এগুলোও প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা জানান, পুকুর খননের খবর পেয়ে মঙ্গলবার (৫ মে) সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) পাঠিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারপরও পুকুর খনন করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।