প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের শুরু থেকে সংক্রমণ মোকাবেলায় সম্মুখসারির যোদ্ধাদের মতো দিন-রাত নিরলসভাবে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল মাহমুদ। বর্তমানে উপজেলার সবশ্রেণির মানুষের মুখে এখন তার নাম।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাস সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতনা ও অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য মাইকিং করেছেন, লিফলেট বিতরণসহ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের লক্ষে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে লোকজনদের বুঝিয়েছেন তিনি। কোন মানুষের দেহে করোনা ‘পজিটিভ’ হয়েছে এমন সংবাদ স্বাস্থ্য বিভাগ জানানোর পর থেকে যত রাতই হোক আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে এনে তাকে আইসোলেশন ও লকডাউন নিশ্চিত করা পর্যন্ত বাসায় ফিরেননি তিনি। শুধু তাই নয় পরদিন আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের অন্য সদস্যদের করোনা ভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার ব্যবস্থা করার খোঁজ-খবরও রাখছেন তিনি। আবার করোনা আক্রান্ত লকডাউন এলাকাগুলোতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে নিজেই বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা খাদ্যসামগ্রী স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নিয়ে দুঃস্থ অসহায় কর্মহীনদের হাতে তুলে দিচ্ছেন।
সরকারী সহায়তার পাশাপাশি অতিদরিদ্র ও দুস্থ জনগোষ্ঠীকে খাদ্য সহায়তার জন্য খুলেছেন তহবিল। বিভিন্ন মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে রাত ঘুরে ঘুরে উপজেলার প্রায় ৪ হাজার পরিবারের ২০ হাজার মানুষের খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন তিনি। এ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এছাড়া যদি কোন মাধ্যমে জানতে পারেন কোন পরিবার লজ্জায় খাবার চাইতে পারছেন না তাদেরকে গোপনে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি।
ঝিনাইগাতী সরকারী মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হারুণ অর রশিদ বলেন, আমাদের ইউএনও মহোদয় একজন মানবিক, তাকে স্যালুট জানাই। তার মত সরকারী কর্মকর্তা প্রত্যেকটি উপজেলায় দরকার।
৩০তম বিসিএসের এ কর্মকর্তা ২০১৮ সালের ৩০শে এপ্রিল এ উপজেলার ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি এক সন্তানের জনক।
ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রার্দুভাবের শুরু থেকে ভাইরাস সংক্রমণ রোধে রাত-দিন মাঠে কাজ করতে হচ্ছে। বিশেষ করে গত এক মাস ধরে উপজেলার অসহায় দুঃস্থ কর্মহীন লোকজনদের মাঝে খাদ্য সহায়তা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ এবং বিভিন্ন কারণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা চলমান রয়েছে।’