বগুড়ার নন্দীগ্রামে হাটে দাম বেশি হওয়ায় সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিচ্ছেন না কৃষকরা। আর চুক্তিবদ্ধ মিলাররাও চাল সরবরাহ করছেন ধীরগতিতে। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে ২ হাজার ৫৮৮ মেট্রিক টন বোরো ধান এবং ৩৬ টাকা কেজি দরে ৩ হাজার মেট্রিক টন চাল ক্রয় করা হবে। কিন্তু গত এক মাসে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে ৪০০ টন এবং চাল সংগ্রহ করা হয়েছে ৬০০ টন। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার জন্য খাদ্য বিভাগ উপজেলায় কৃষি বিভাগের কাছ থেকে তালিকা নিয়ে লটারীর মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করেছেন। কিন্তু সেই নির্বাচিত কৃষকরা ধান বিক্রি করতে আসছেন না খাদ্য বিভাগের কাছে।
এর কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, খাদ্য বিভাগ ধান কিনছেন ২৬ টাকা কেজি দরে অর্থাৎ ১০৪০ টাকা মন দরে। অথচ নন্দীগ্রাম উপজেলার হাট বাজারে এক হাজার টাকা থেকে ১১০০ টাকা মন দরে ধান বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার কাথম গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন তিনি ১৪ বিঘা জমিতে মিনিকেট ও কাটারী ধান আবাদ করেছেন। তিনি ১১০০ টাকা মন দরে হাটে ধান বিক্রি করেছে।
আবার করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে অনেকেই বাড়িতেই ধান মজুদ করছেন। এ কারণে কৃষকরা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিতে আগ্রহী না। ধানের দাম আরো বাড়বে উল্লেখ করে কৃষক বলছেন, জরুরী প্রয়োজন ছাড়া হাটে কেউ ধান বিক্রি করছেন না। খাদ্য বিভাগের সাথে যে সকল মিলাররা চুক্তিবদ্ধ হয়েছে চাল সরবরাহের জন্য তারাও হাটে পর্যাপ্ত ধান পাচ্ছেন না। আবার ধানের দাম বেশী হওয়ায় ধান কিনে চাল আকারে খাদ্য বিভাগে সরবরাহ করতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়ছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলার কয়েকজন মিল মালিক।
উপজেলা চাউল কল মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক বেলাল হোসেন বলেন, সরকারি খাদ্য গুদামে চাল দিতে ২৭ জন মিল মালিকরা চুক্তিবদ্ধ করেছে। কিছুদিন আগে ধান-চালের দাম কম ছিল। এখন ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় খাদ্য গুদামে চাল দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক আশরাফুল আরেফিন বলেন, লটারীর মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। এ ছাড়া চুক্তিবদ্ধ মিল মালিকরা খাদ্য গুদামে চাল দিচ্ছেন। আগস্ট মাস পর্যন্ত সময় আছে। আশা করছি এরমধ্যে লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে।