বিভাগের ছয় জেলায় এ পর্যন্ত মোট দুই হাজার ১৮ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ছাড়া সুস্থ্য হয়েছেন ৫২৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের।
রোববার দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের ছয় জেলায় ৬৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আর গেল ২৪ ঘণ্টায় বরগুনা ও ঝালকাঠি ব্যতিত বাকি জেলায় ২৬ জন রোগী সুস্থ্য হয়েছেন।
পাশাপাশি সর্বশেষ তথ্যা অনুযায়ী, সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করা নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোড এলাকার বাসিন্দা ও বরিশাল সদর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক ডাঃ মোহাম্মদ এমদাদুল্লাহ খান (৫৮), ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড়গালুয়া এলাকার আইয়ুব আলী (৫০), পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বগা বন্দর এলাকার জয়নাল আবেদিন (৬৩) ও একই উপজেলার দাসপাড়া খেজুরবাড়িয়া এলাকার জালাল উদ্দিনের (৯০) নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে করোনা পজেটিভ পাওয়া গেছে। ফলে এ চারজনকে নিয়ে বিভাগে মোট মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ৪১ জনে দাঁড়িয়েছে।
এদিকে করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে বিদেশি নাগরিকসহ ভিন্ন জেলা (সংক্রমিত) থেকে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফলে গত ১০ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বরিশাল সিটি কর্পোরেশনসহ বিভাগের ছয় জেলায় মোট ১৯ হাজার ১৭৭ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
যারমধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয় ১৭ হাজার ২৯২ জনকে। এরমধ্যে ১৪ হাজার ৪২৪ জনকে হোম কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিভাগের বিভিন্ন জেলার হাসপাতালে (প্রতিষ্ঠানিক) কোয়ারেন্টিনে থাকা এক হাজার ৮৮৫ জনের মধ্যে এ পর্যন্ত এক হাজার ১১১ জনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে শেবাচিম হাসপাতালসহ বিভাগের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসা নেওয়া রোগীর সংখ্যা এক হাজার ১০৭ জন। যাদেরমধ্যে ৫৬৬ জনকে ছাড়পত্রও দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে শেবাচিম হাসপাতালে আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে মোট ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যারমধ্যে ২২ জন করোনা পজেটিভ রোগী ও বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি মাসে বরিশাল বিভাগে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভাগে সংক্রমণ শুরুর পর জুনের শেষ ২১ দিনেই অর্ধেকের বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। আর বিভাগে কোভিডে আক্রান্ত ৪১ জনের মধ্যে ৩০ জনই মারা গেছেন শেষ ২১ দিনে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বিভাগে করোনা সংক্রমণের গতি মৃদু পর্যায়ে ছিলো। তবে এটা জুন মাসে হঠাৎ করে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে। সংক্রমণের এই গতি থামাতে প্রস্তাবিত জোনভিত্তিক লাল, হলুদ, সবুজ এলাকা চিহ্নিত করে যদি দ্রুত কঠোরভাবে লকডাউন পদ্ধতি সফল করা যায়, তাহলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এটা যত দ্রুত করা যাবে, তত সুফল পাওয়া যাবে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ বাসুদেব কুমার দাস বলেন, বিভাগের মধ্যে এ পর্যন্ত বরিশাল জেলায় এক হাজার ১৭১ জন, পটুয়াখালীতে ২৩৯ জন, ভোলায় ১৮৭ জন, পিরোজপুরে ১৩৪ জন, বরগুনায় ১৬৩ জন ও ঝালকাঠিতে ১২৪ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছে। যারমধ্যে গোটা বিভাগে ৫২৬ জন করোনা পজেটিভ রোগী সুস্থ্য হওয়ায় তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মৃত্যু হওয়া করোনা পজেটিভ ৪১ জনের মধ্যে বরিশাল নগরীসহ জেলায় ১৫ জন, পটুয়াখালীতে ১৩ জন, ঝালকাঠিতে ছয়জন, পিরোজপুরে তিনজন, ভোলায় দুইজন ও বরগুনায় দুইজন রয়েছেন।