ফরিদপুরে বন্যা পরিস্থিতির আবার অবনতি ঘটছে। গত ২৪ ঘন্টায় গোয়ালন্দ পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৪ সে.মি বৃদ্ধি পেয়ে রোববার সকাল ৬টার দিকে বিপৎসীমরা ১১৫ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের নয়টি উপজেলার মধ্যে সাতটি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের ৫২৪ টি গ্রাম বন্যা কবলিত হয়েছে। পানি বন্দি ও পানিতে নিমজ্জিত হয়ে রয়েছে ৪১ হাজার ৭৪টি পরিবার। পানিবন্দি লোকের সংখ্যা ১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৩৩ জন।এ পর্যন্ত বন্যায় ৪টি গবাধি পশুর মৃত্যু হয়েছে।
ফলে ফরিদপুর বন্যা পরিস্থিততির পুণরায় অবনতি ঘটেছে। ফরিদপুর-চরভদ্রসন সড়ক পুনরায় পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। গত শুক্রবার রাতে ফরিদপুর-চরভদ্রাসন আঞ্চলিক সড়কের সদরের খুশির বাজাজার এলকায় ২৫ মিটার ডেবে গেছে। ওই অংশের মেরামত কাজ শেষ হওয়ার পর রোববার থেকে পুনরায় ওই সড়কে যান বাহন চলাচল শুরু হয়েছে।
আলীয়াবাদ ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সাদীপুরের বিল গজারিয়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধের কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসী ও পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা ু বাঁশের পাইলিং দিয়ে দিয়ে মেরামত কাজ অব্যাহত রখেছে।
বন্যায় এ পর্যন্ত ৪ হাজার ১৬৭ হেক্টর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধ ভেঙ্গে গেছে ৪০ মিটার। রাস্তা ভেঙ্গে গেছে ১ হাজার ৪০০ মিটার। ৩২টি আশ্রয় কেন্দ্র ২ হাজার ৫৬৮ জন মানুষ ও ১ হাজার ৩৪৪টি গবাধিপশু আশ্রয় নিয়েছে। এ ছাড়া বেড়ি বাধে ২ হাজার ২৫০ জন মানুষ ও ৪০০ গবাধী পশু আশ্রয় নিয়েছে। মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে ২৫টি।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ বলেন, পদ্মা নদীর পানি আবার বাড়তে শুরু করেছে। তিনি বলেন, জাতীয় বৃদ্ধি এ ঈংগিত দিচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি দির্ঘায়িত হবে। তিনি বলেন, আমরা সহজে এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবো বলে মনে হচ্ছে না।
এদিকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম রেজা জানান, বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষগুলো আশ্রয় নিয়েছে শহর রক্ষা বাঁধে। বাধে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলো গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েচেন। আর এসব মানুষের কথা চিন্তাকরে আমরা রান্না করা খাবার ও গবাদি পশুর জন্য খাবার বিতরণ করছি। বন্যা যতদিন থাকবে আমাদেও কার্যক্রম অব্যহত থাকবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বন্যার্তদের মাঝে পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, বানভাসী মানুষদের জন্য রোববার পর্যন্ত ৩৬৫ মেট্রিক টক চাল, ২ হাজার ৬০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও নগদ ৫ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।