নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ডাকবিভাগের জন্য ২৫০০ কোটি ডলার বরাদ্দ দিতে একটি বিল পাস করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ। শনিবার প্রতিনিধি পরিষদে এই ভোটাভুটি হয়। ডাকবিভাগের ব্যয়সংকোচন ও নিয়ম-নীতির যেসব পরিবর্তনের কারণে ডাকযোগে ভোটগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে, সেগুলো থামিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ওই বিলে। তবে ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাস হলেও রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রণাধীন সিনেটে তা পাস হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যুক্তরাষ্ট্রে সাপ্তাহিক কর্মদিবসে নির্বাচন হয় বলে অনেক মানুষ সশরীরে ভোট দিতে পারেন না। কাজের সূত্রে দূরে থাকার কারণেও কারও কারও ভোট দিতে সমস্যা হয়। এমন সব মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে সেদেশে ডাকযোগে ব্যালট পাঠানোর বিধান রয়েছে। এ বছর করোনা সংকটের কারণে অসংখ্য ভোটার সেই সুযোগ গ্রহণ করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে ডাকযোগে বা মেল ইন ভোটের দাবি জানানো হলেও ট্রাম্প শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করছেন। এমনকি ভোট-জালিয়াতি হতে পারে বলে ডেমোক্র্যাটদের দিকে আঙুলও তুলেছেন তিনি। ডাকবিভাগের বরাদ্দ কাটছাঁট করতেও দেখা গেছে তাকে। এমন অবস্থায় ডাকবিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত একটি বিল পাসে ভোটাভুটির আয়োজন করে প্রতিনিধি পরিষদ। শনিবার (২২ আগস্ট) এটি পাস হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী কোনও বিলকে আইনে পরিণত করতে হলে পার্লামেন্টের দুই কক্ষের অনুমোদনের পর তাতে প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের প্রয়োজন হয়। ট্রাম্প মনে করেন প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি অহেতুক পাস করা হয়েছে। রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রণাধীন সিনেটে বিলটি পাস হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। ডাকবিভাগের প্রধান লুই ডিজয় ট্রাম্পেরই সমর্থনপুষ্ট। রিপাবলিকান শিবিরের একজন অর্থদাতাও তিনি। ডিজয়ের নেতৃত্বে ডাকবিভাগে নতুন যে নীতিমালা প্রণয়নের কথা ভাবা হয়েছিল তার মধ্যে ছিল সব মেইল বক্স সরিয়ে নেওয়া, ডেলিভারি দেওয়ার সময় কমিয়ে আনা এবং সর্টিং মেশিন বন্ধ করে দেওয়া। ডেমোক্র্যাটরা আশঙ্কা জানিয়েছিল, এর মধ্য দিয়ে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় প্রতিনিধি পরিষদে জবানবন্দি দিতে শনিবার ডিজয়কে তলব করেন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। আর তার আগেই ডিজয় জানান, নতুন নীতিমালা প্রণয়নের সে সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে। শুক্রবার লুইস ডিজয় আরও আশ্বস্ত করেন, যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডাকযোগে ব্যালট পেপার পরিবহনে ইউএস পোস্টাল সার্ভিস (ইউএসপিএস)‘সবদিক দিয়ে সক্ষম এবং প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। তিনি বলেন, ভোটের বিষয়টি সবসময় অগ্রাধিকার পাবে এবং ডাকযোগে পাঠানো সব ভোট যথাসময়ে গণনার জন্য পৌঁছে দেওয়া হবে।