দর্শকপূর্ণ মাঠে দুই গ্রামের মধ্যে চলছিল ফুটবল খেলা। শেষার্ধের খেলা শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মাথায় গোলকিপার গোলবার ছেড়ে দিলেন দৌড়। হঠাৎ খেলার মাঠ থেকে গোলকিপারের দৌড় দেখে দর্শকরা হতভম্ব। দেখেন পেছনে দৌড়াচ্ছে পুলিশও। পরে গোলকিপারকে গ্রেপ্তারের পর জানা গেল তিনি একটি হত্যা মামলার আসামি।
মঙ্গলবার বিকেলে বগুড়া সদরের নামুজা মাদ্রাসা মাঠে এ ঘটনা ঘটেছে। গ্রেপ্তার গোলকিপারের নাম জুয়েল হোসেন (২১)। তিনি বগুড়া সদরের টেংড়া স্কুলপাড়া এলাকার জহুরুল ইসলামের ছেলে।
পুলিশ জানায়, বগুড়া সদরের কৃঞ্চপুর এলাকার জান্নাতুল ফেরদৌস শহরের রাজাবাজার এলাকার একজন মুদি ব্যবসায়ী। তার বাবার দেওয়া রাজাবাজারে দোকানেই ব্যবসা করে আসছিলেন তিনি। তার আপন ভাই রবিউলের সঙ্গে ওই দোকান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় ফেরদৌসকে। ফেরদৌসের পরিবারের কেউ সেদিন বাড়িতে ছিলেন না। এ সুযোগে রাত ২টার দিকে বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে খুন করেন রবিউল, তার ছেলে নাদিম এবং তাদের সঙ্গে থাকা পাঁচজন ভাড়াটিয়া খুনি। এ ঘটনায় ফেরদৌসের স্ত্রী টুনি বেগম একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ হত্যাকাণ্ডের পর দেড় বছরে একাধিক তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়। একপর্যায়ে এসআই সোহেল রানাকে এ মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারেন, এই হত্যার সঙ্গে জুয়েল নামের এক যুবক জড়িত।
পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, বুধবার সোর্সের মাধ্যমে জানতে পারেন যে, জুয়েল নামজা মাদ্রাসা মাঠে ফুটবল খেলতে গেছে। এরপর আশরাফুল ইসলাম ও এনামুল নামের দুই পুলিশ সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে সাদা পোশাকে ওই মাঠে গিয়ে দর্শক সারিতে বসে পড়েন। এদিকে খেলা হাফ টাইমের পর কিছুক্ষণ গড়ালে জুয়েলের কানে কে বা কারা পুলিশ আসার খবর জানিয়ে দেয়। এরপর দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন জুয়েল। পুলিশও পিছনে দৌড়াতে থাকে। দর্শকরা হতভম্ব হয়ে যায় এ দৃশ্য দেখে। জুয়েলকে গ্রেফতারের পর জানানো হয় যে, তিনি একজন ভাড়াটিয়া খুনি। পরে জনতা শান্ত হন।
বগুড়া সদর থানার ওসি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘দীর্ঘদিন পরে হলেও এ হত্যা মামলার জট খুলেছে। এখন প্রকৃত হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।’