নওগাঁর পত্নীতলায় দ্রুত সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নতুন ভাবে তৈরী ও মেরামত করা গ্রামীণ সড়কগুলো। গ্রামীণ মানুষের সহজ চলাচল ও কৃষিপণ্য সহজেই শহরে নিয়ে যাওয়ার জন্য গ্রামীণ সড়কগুলো তৈরী করা হলেও সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই। আর এজন্য স্থানীয় বাসিন্দারা দায়ী করছেন বালি ভর্তি ট্রাকের অবাধ চলাচলকে। স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় নিয়ম ভঙ্গ করে গ্রামীণ সড়কগুলোকে ভারী বালি ভর্তি ট্রাক চলাচল করায় সড়কগুলো ডেবে গিয়ে অল্প সময়েই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বিধি লংঘন করে গ্রামীণ সড়ক দিয়ে বালি ভর্তি ট্রাক চালিয়ে বালি ব্যবসায়ী ও গৃহ তৈরী কারীরা লাভবান হলেও চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের।
সরেজমিনে অনুসন্ধানে জানা গেছে, একমাস আগেও উপজেলার কাঞ্চন মাজার সড়কটি ভাল ছিল। কিন্তু আত্রাই নদী থেকে বালি তুলে ভারী ট্রাকে করে এ সড়ক দিয়ে পরিবহন করার কারণে সড়কটি অল্প সময়ের মধ্যেই ভেঙ্গে খানাখন্দে পরিনত হয়েছে। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন গ্রামবাসী ছাড়াও অসংখ্য ধর্মপ্রাণ মানুষ আসেন হযরত জহর উদ্দিন চিসতী (রহঃ) মাজার জিয়ারত করতে। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার মাজারে হাজার হাজার মুসল্লির সমাগম ঘটে। রাস্তা নষ্ট হওয়ায় ভ্যান, ভুটভুটি, চার্জার, মাইক্রোবাস যোগে মাজার প্রাঙ্গণে যাওয়ার ক্ষেত্রে চরম প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। শুধু কাঞ্চন মাজার সড়কই নয় গ্রামীণ সড়ক দিয়ে বালি ভর্তি ট্রাক বহনের কারণে কাঁটাবাড়ী, ফইিমপুর, মামুদপুর, ইছাপুর,পত্নীতলা, গোপীনগর, ছালিগ্রাম সড়কের একই অবস্থা বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কাঞ্চন ফকির পাড়া গ্রামের রাসেল বলেন, অনেক কষ্টে ধার দেনা করে জীবিকার তাগিদে একটি অটোচার্জার কিনে চালাচ্ছি। কিন্তু রাস্তার কারণে গত এক মাসে চার্জারের চাকা দু বার খুলে গেছে। স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মোশারফ হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান, ময়েন হোসেনসহ বেশ কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী গ্রামীণ এসব সড়ক দিয়ে জোর করে বালি ভর্তি ট্রাক নিয়ে যেতে বাধ্য করছেন। এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে মারপিটসহ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বালি ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বালি ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন চৌধুরী জানান, ওই রাস্তা দিয়ে এখন আর কোনো বালি বোঝায় ট্রাক চলাচল করে না। রাস্তাটি এভাবে ডেবে যাবে আগে ভাবীনি। মানবিক দিক বিবেচনা করেই ট্রাক চলাচল বন্ধ করেছি।
এ বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা প্রকৌশলী সৈকত দাস বলেন, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে ১৫ লাখ টাকায় কাঞ্চন মাজার সড়ক রিপিয়ারিং করে। বর্তমানে সড়কটি দেখে আমি হতবাক। সুন্দর সড়কটি এখন বড় বড় খানা খন্দে ভরপুর। সড়ক নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে আইনগতব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলেও তিনি জানান। পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিটন সরকার জানান, সড়ক নষ্ট করে কাউকে বালির ব্যবসা করতে দেওয়া হবেনা। নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন অর রশীদ বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হলাম। গ্রামীণ সড়ক রক্ষায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে নির্দেশনা প্রদান করা হবে।