২০০৩ সালে জামায়াত-বিএনপির অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন রাজপথে থেকেছি, ছবি তুলতেন অনেকের মত সংবাদযোদ্ধা কাজল ভাই। তিনি এখন জেলে। তাঁর ছেলে প্রতিদিন মুক্তির দাবীতে রাজপথে থেকে কর্মসূচী করে যাচ্ছে। কার্টুনিস্ট কিশোর সহ অসংখ্য সংবাদযোদ্ধার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে, হয়রানি হচ্ছে, মামলা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। প্রায় প্রতিদিন নির্মম মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। চলছে ছাত্র-যুব-জনতার অধিকার হরণের রাজনীতি, দুর্নীতিতো আছেই। তার উপর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে একের পর এক সংবাদযোদ্ধাদেরকে হয়রানির শিকার করছে। স্বাধীনতার ৪৯ বছরে আলোকিত দেশ গড়তে গণমাধ্যমের ভূমিকা ছিলো অপরিসিম। গণমাধ্যম কর্মীরা ছিলেন নিবেদিত সবসময়; আছেন তারা রাজপথে-কাজপথে; থাকবেন নিরন্তর। আলোকিত দেশ গড়ার জন্য নিবেদিত থেকে কালোর বিরুদ্ধে লড়েছে ছাত্র-যুব-জনতার কথা ভেবে। আলোকিত মানুষদেরকে-সংবাদযোদ্ধাদেরকে কখনোই অস্বীকার করা যাবে না। যেমন অস্বীকার করা যাবে না নিবেদিত সংবাদযোদ্ধা তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, গোলাম সরওয়ার, নাঈমুল ইসলাম খান, মতিউর রহমান-এর মত কমপক্ষে কয়েক ডজন আলোকিত মানুষের কথা। তাদেরই ধারাবাহিকতায় বলতে পারি- বাংলাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক মতিউর রহমান চৌধুরী পত্রিকা জগতে এনেছেন ব্যাপক পরিবর্তন। বদলে দিয়েছেন অনেক কিছু। তিনিই প্রথম ঘোষণা দেন- মফস্বল নয়, জাতীয় সংবাদ। ১৯৯২ সালে এটা প্রমাণ করেছিলেন তিনি তার সম্পাদনায় প্রকাশিত বাংলাবাজার পত্রিকায়। সেখানে সারাদেশের খবরের পাতার নাম দিয়েছিলেন জাতীয় সংবাদ। এর আগে পত্রিকাগুলোর মফস্বলের পাতায় নাম ছিল গ্রামবাংলা, গ্রামগঞ্জ, রুপসী বাংলা ইত্যাদি। অনলাইন প্রেস ইউনিটির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বলতে পারি- দেশকে-সংবাদযোদ্ধাদেরকে করোনা পরিস্থিতিতে রক্ষার জন্য নিরন্তর এগিয়ে চলতে হবে-ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সংবাদমাধ্যমের সাথে দীর্ঘ প্রায় পঁচিশ বছরের পথচলার সুবাদে বলতে পারি- সংবাদযোদ্ধা মতিউর রহমান চৌধুরীই বাংলাবাজার পত্রিকার মাধ্যমে জেলা উপজেলার কোন ঘটনাকে চোখ বন্ধ করে প্রথম পৃষ্ঠায় লিড নিউজ হিসাবে প্রকাশ করেছেন। সে থেকে শুরু। বর্তমানে প্রতিযোগিতার মার্কেটে ছোটখাটো ঘটনাও স্থান করে নিচ্ছে পত্রিকার প্রথম কিংবা শেষ পৃষ্ঠায়। অবশ্য তথ্যপ্রযুক্তি এক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে অনেকখানি। আলোকিত দেশ গড়ার জন্য নিবেদিত থাকার সুবাদে করোনা পরিস্থিতিতে তারা বরাবরের মত অবিরত ছিলো লোভ মোহহীন। নির্মল কাজের কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি সংবাদযোদ্ধাদের চলমান সময়ে একের পর এক বিক্রি হয়ে যাওয়া আর অন্যায়-অপকর্ম দেখে কেবলই মনে হচ্ছে যে, জাতি অন্ধকার পথে হাঁটতে হাঁটতে অতল গহ্বরে হারিয়ে যাচ্ছে।
যদি তাই না হবে! তাহলে কেন এখন কোন কোন নিউজ পোর্টাল-এ লেখা হচ্ছে- ‘জনপ্রিয় স্যাটালাইট চ্যানেল বাংলাভিশনের সদ্য চাকরিচ্যুত সিনিয়র সাংবাদিক এবং হেড অফ নিউজ মোস্তফা ফিরোজের আবেগময় ফেইসবুক ষ্ট্যাটাস এ সাংবাদিক সমাজ এবং সচেতন দর্শক মহলে সম্প্রতি মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মোস্তফা ফিরোজের দাবি অনুযায়ী তাকে অন্যায়ভাবে বাংলাভিশন থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। তিনি এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী করেছেন মরহুম মেয়র এবং বাংলাভিশনের মালিকপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সাদেক হোসেন খোকার পুত্র ইশরাক হোসেনসহ বাংলাভিশনের পরিচালনা পর্ষদের বর্তমান কর্তাব্যক্তিদের। তবে নাগরিক টিভির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত অনুসন্ধানে পাওয়া গিয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রবাসী দর্শকদের থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে চাঁদা নিয়ে তার বিনিময়ে আমন্ত্রণ জানাতেন মোস্তফা ফিরোজ। টাকা ছাড়া তার অনুষ্ঠানে কোনো অপরিচিত মুখ আমন্ত্রণই পেতো না। তাছাড়া রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী টক্ শোগুলোতে সাহেদ এর মতো বিতর্কিত ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানাতেন মোস্তফা ফিরোজ। সাহেদকে বাংলাভিশনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোস্তফা ফিরোজ। প্রতারক সাহেদের সাথে তার ছিল বিরাট সক্ষতা। সাহেদের থেকে কত টাকা নিয়ে তিনি তার উত্তরাতে ৬ কোটি টাকার বাড়ির কাজ সম্পন্ন করেছেন এ প্রশ্ন করেছেন তার ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষ যারা সঙ্গত কারণেই নাম প্রকাশে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। কলা বাগানে কিনেছেন ফ্ল্যাট, যশোরে করেছেন ডুপ্লেক্স বাড়ি। কোথায় পেলেন এত টাকা? তাঁর বেতন কত টাকা ছিলো? এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি কি দিতে পারবেন ? তারপরও তিনি নিজেকে দাবি করেন গরীব। দাবি করেন অফিস সহকারী ইকবালের কাছে টাকা ধার করে চলেন! ফেইসবুক এ নিজের আর্থিক সমস্যার কথা জানিয়ে দেয়া তার স্ট্যাটাসটি যে নিছক ভন্ডামি সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না!’
এমন চলছে সারাদেশে, তবে বাংলাদেশের রাজপথে থাকতে থাকতে তৈরি হয়েছি ছাত্র-যুব-জনতাকে সাথে নিয়ে দেশ-মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে। পাশাপাশি সর্বোচ্চ আন্তরিকতায় আমি লিখছি কলাম-মন্তব্য প্রতিবেদন এবং বিভিন্ন ধরণে সচেতনতা বিষয়ক নিবন্ধ। তারই সুবাদে দেখার সুযোগ হয়েছে অনেক অন্যায়ের গভীরতা; জানারও সুযোগও হয়েছে। সংবাদযোদ্ধাদের সাথে আলাপ থাকার সুবাদে জেনেছি- এসিআই কোম্পানির মালিকানাধীন স্বপ্ন সুপার শপ যখন মরা মুরগি জালিয়াতি করে ধরা খেলো বাংলাভিশনের এক রিপোর্টার এর কাছে, তখন সেই সংবাদটি চেপে যান মোস্তফা ফিরোজ। এভাবে নানা সময়ে বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির খবর প্রকাশে মোস্তফা ফিরোজ বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তার সহকর্মীদের কাছে। এসব বাঁধার নেপথ্যে মোস্তফা ফিরোজ সেসব কোম্পানির থেকে মোটা অংকের সুবিধা আদায় করে প্রবাসে ভ্রমণ, কেনাকাটা সহ বিলাসবহুল জীবন যাপনে নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। মোস্তফা ফিরোজ তার অফিস সহকারী ইকবালের স্ত্রীকে গাজীপুর নিয়ে রঙ্গমঞ্চ করেছেন । শুধু তাই নয় সহকারী প্রযোজক রিয়াজ রনির প্রথম স্ত্রীর সাথেও করেছেন শারিরিক সর্স্পক। অফিসের অনেক সহকর্মীর বাসায়ও যেতেন নারী নিয়ে। মোস্তফা ফিরোজের ব্যক্তিগত গাড়িচালক তার প্রতিটি নারীঘটিত ঘটনার নীরব সাক্ষী। সুন্দরি রমনি নিয়ে থাইল্যান্ড, মালেশিয়া ও সিঙ্গাপুরে যেতেন হরহামেশা।
কাঁদা ছোড়াছুৃড়ির মত করে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন ধরণের রিউমার ছোটানো হচ্ছে সংবাদযোদ্ধাদের নামে। হয়তো একারণেই লোপা তালুকদারের মত নারীও নিজেকে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও ব্যস্ত রেখেছিলো মানুষ পাচারের কর্মযজ্ঞে। যেভাবে মোস্তফা ফিরোজের যৌন লালসা থেকে বাঁচতে অনেক প্রেজেন্টার চাকরি ছেড়েও দিয়েছেন। তারপরও যৌন লালসার ফাঁদ থেকে সরে আসেননি মোস্তফা ফিরোজ। অনেক প্রেজেন্টার লজ্জা, ভয় এবং সমাজিক অবস্থা চিন্তা করে মুখ খুলছেন না। শুধু তাই নয়; কথিত আছে- মোস্তফা ফিরোজ দিপু রুমা নামে এক মেয়েকে তার নিজের প্রতিষ্ঠান ভয়েস বাংলায় চাকরি দেন। পরে প্রলোভন দেখিয়ে শারিরিক সর্স্পক গঙে তোলেন। তার বাসা ভাড়া দেন সাংবাদিক ফিরোজ। পরে সু- কৌশলে বাংলাভিশনে নিউজ প্রেজেন্টার হিসেবে চাকরি দেন। তারপর থেকেই রুমাকে স্ত্রী মত ব্যবহার করেন। প্রেজেন্টার রুমা ও মোস্তফা ফিরোজকে প্রায়ই এক সাথে ঘুরাঘুরি, কেনাকাটা একসাথে থাকা সবই চলছে সমান তালে। এমন নোংরা খেলার মধ্যে সংবাদযোদ্ধারা ভাগাভাগি হয়ে যাওয়ায়; ঐক্যবদ্ধ না থাকায় গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ব্যাপক প্রয়োগের প্রেক্ষাপটে এ আইনের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া নিয়ে দেশে-বিদেশে আবারও জোর আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। ২০১৮ সালের অক্টোবরে আইনটি জারির হওয়ার আগেই আইনটির বিষয়ে মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমগুলো যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল, তার থেকে ভিন্ন কিছু হয়নি। গত মে মাসে সম্পাদক পরিষদের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা দমনের অস্ত্র হিসেবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহারের শঙ্কা ‘এখন গণমাধ্যমের জন্য দুঃস্বপ্নের বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে’।
আসলে এই দুঃস্বপ্নের সূচনা হয়েছিল এই আইনের খসড়া তৈরি থেকেই। তবে এটাও ঠিক, মার্চ মাসে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া শুরু হলে এই আইন ব্যবহৃত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। সরকার ও তার সমর্থকদের অপছন্দ হলে জামিন–অযোগ্য ধারায় মামলা হচ্ছে, পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের আটক করছে। অনেক ক্ষেত্রেই আটকের পরে এই ধারায় মামলা করা হচ্ছে। একাধিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে, সাদাপোশাকে বাড়ি থেকে তুলে নেওয়ার পর আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে। এই আইনের কতটা ব্যাপক প্রয়োগ হচ্ছে, তা বোঝা যায় আন্তর্জাতিক সংগঠন আর্টিকেল ১৯-এর সংগ্রহ করা তথ্যে। তাদের হিসাবে গত জানুয়ারি থেকে জুনের শেষ পর্যন্ত এই আইনে মামলা হয়েছে ১১১টি, অভিযুক্ত হয়েছেন কমপক্ষে ২০৫ জন, আটক হয়েছেন ১১১ জন। আরেকটি হিসাবে বলা হচ্ছে, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এখন প্রতিদিন গড়ে তিনটি করে মামলা হচ্ছে’ (প্রথম আলো, ২৬ জুন ২০২০)। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে কতজন জামিন পেয়েছেন, তার পুরো হিসাব নেই। এই আইনের ২০টি ধারার ১৪টিই অজামিনযোগ্য; ফলে মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ও কারাগারে প্রেরণের ঘটনা ঘটে দ্রুত। ক্ষেত্রবিশেষে এত দ্রুত যে তাতে এটা বিশ্বাস করতেই কষ্ট হয়, এই দেশেই পুলিশ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত এমন একজন ব্যক্তিকে ১০ বছর খুঁজেই পায়নি, যিনি বঙ্গভবনে গেছেন, ক্ষমতাসীন দলের সভায় থেকেছেন, সরকারের সঙ্গে মন্ত্রীর উপস্থিতিতে চুক্তি করেছেন এবং নিয়মিতভাবে টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন।
এই আইনের পূর্বসূরি ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন ২০০৬, যা ২০১৩ সালে সংশোধন করা হয়। ২০০৬ সালে এই আইনের প্রবর্তন হলেও ২০১৩ সাল পর্যন্ত এই আইনে মামলার কথা তেমনভাবে শোনা যায়নি। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে এই আইনের সংশোধনের মধ্য দিয়ে, বিশেষ করে ৫৭ ধারায় শাস্তি বাড়ানোর মধ্য দিয়ে, ভিন্নমত দমনের সহজ পথ খুলে দেওয়া হয়েছিল। ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও এই আইনের ব্যাপারে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার সমর্থকেরা, যার মধ্যে সাংবাদিকেরাও আছেন, নানা যুক্তি দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে আইসিটি আইন বাতিল করে আরও ভয়াবহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ চালু করা হয়। কিন্তু ইতিমধ্যে যাঁরা আইসিটি আইনের আওতায় অভিযুক্ত হয়েছেন, তাঁদের বিচার অব্যাহত আছে। ২০১৬ সালে আইসিটি আইন নিয়ে প্রবল বিতর্কের মুখে জানা যায়, সে পর্যন্ত ৯৪ শতাংশ মামলা হয়েছে বিতর্কিত ৫৭ ধারায়। ‘আদালতে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৬৬ শতাংশ মামলারই সব আসামি খালাস পেয়েছেন। তার মানে, মাত্র ৩৪ শতাংশ মামলা প্রমাণিত হয়েছে। তদন্ত পর্যায়েই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে ১৩ শতাংশ মামলা। পুলিশ সেগুলোর বিষয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে।’ জানা যায়, ‘তদন্তে ঘটনার সত্যতা না পেয়ে গত তিন বছরে ৪৬টি মামলায় পুলিশ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে’ (প্রথম আলো, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬)। পরের হিসাবে দেখা যায়, ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত মামলা হয়েছে ১ হাজার ৪১৭টি। এগুলোর মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ মামলা হয়েছিল ৫৭ ধারায়। এই সব তথ্যেই এটা স্পষ্ট ছিল যে এই ধরনের আইনের কথিত অপব্যবহার অনিবার্য। তারপরেও ক্ষমতাসীনেরা মনে করেছেন, তাঁদের সুরক্ষার ব্যবস্থা দরকার; তার পরিণতি হচ্ছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮। সরাসরি মতপ্রকাশের কারণে ওই বছরে ৫৭ ধারায় মামলা হয় ৩৭টি এবং নতুন আইনে হয় ৩৪টি; ২০১৯ সালে নতুন আইনে ৬৩টি। এরপর থেকে জোয়ারের মতো মামলা হচ্ছে, আটক হচ্ছে, কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। সর্বশেষ বরিশালে মামুনুর রশীদ নোমানী সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেছে স্থানিয় জনপ্রতিনিধি। এখন কথা হলো- এভাবে বাংলাদেশের রাজপথে থাকা সংবাদযোদ্ধাদেরকে কেন হয়রানি করা হচ্ছে একের পর এক মামলা দিয়ে? কারণ একটাই অবাধ সুষ্ঠু সংবাদ প্রবাহ বন্ধ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা। এই চেষ্টাকে এখনই প্রতিহত করতে তৈরি হতে হবে সবাইকে-সকল সংবাদযোদ্ধাকে। তা না হলে অন্ধকার চারপাশে ঘণিভূত হতেই থাকবে। যা আমাদের কারোই কাম্য নয়...
মোমিন মেহেদী : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি