দুনিয়াতে কোনো একনায়ক, দুর্দান্ত প্রতাপশালী দানব শাসক ও স্বৈরাচার সহজে বিদায় হয় না। ইতিহাসে রয়েছে যার ভুরি ভুরি, অজ¯্র প্রমাণ ও উদাহরণ। ফেরাউন (রামেসিস) নমরুদ থেকে শুরু করে তৈমুর লংগ, হালাকু খান, নাদির শাহ, চেঙ্গিস খান, হিটলার, মুসোলিনি, জার, চিয়াংকাইশাক, লেন্দুম দর্জি, টিক্কা, ইয়াহিয়া, নিয়াজি, চসেস্কুসহ আরও অনেক একনায়ক ও স্বৈরাচারের পতন ও নির্মমতা আজও ইতিহাসে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে অমর হয়ে রয়েছে। স¤্রাট অশোক স্বীয় সিংহাসন রক্ষায় ৯৯ জন জ্ঞাতি ভ্রাতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আওরঙ্গজেব বৃদ্ধ পিতা স¤্রাট শাহজাহানকে আগ্রার দুর্গে ১৬ মাস বন্দী করে রাখে। এমন অসংখ্য উদাহরণের যেন শেষ নেই। ঐতিহাসিক গীবন (ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ওহফরধ) বলেছেন, তৈমুরলংগ যখন দিল্লী আক্রমন করে তখন এত নৃশংসতা ও বর্বরতা চালিয়েছিল, যা বলে লেখে শেষ করার মতো নয়। নৃশংসতায় মানুষের রক্তে দিল্লীর নর্দমাগুলো উচলিয়ে রাস্তা দিয়েও রক্ত গড়াতে থাকে। ভয়াবহতায় রাস্তাঘাটে মানুষতো দূরের কথা ১৫ দিন পর্যন্ত দিল্লীর আকাশে বাতাসে একটি পাখীও পর্যন্ত উড়তে দেখা যায়নি। তদোপরি উত্তর কুরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন একটার পর একটা এমন নৃশংসতা চালিয়ে যাচ্ছে যা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
৭১ সালে বাংলাদেশে স্বাধীনতাকামী নিরীহ, নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করার নায়ক স্বৈরাচার, একনায়ক জল্লাদ ইয়াহিয়া, তার দোসর টিক্কা, নিয়াজি, রাও ফরমান আলী গংরা নির্লজ্জভাবে মুক্তিসেনাদের হাতে পরাজিত হয়ে থাকে। জানা যায় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দানব ও জল্লাদ ইয়াহিয়া মদ্যপ ও উলঙ্গ অবস্থায় মারা যায়। সংক্ষিপ্ত কলামের কারণে আর উপমা, উদাহরণ না টেনে লেখার শিরোনামের দিকে দৃষ্টি নিবন্ধ করছি। সম্প্রতি দেশী বিদেশী গণমাধ্যমে রোহিঙ্গা হত্যা, নির্যাতন, বর্বরতা, নৃশংসতা নিয়ে মিয়ানমারের ৪ সেনা সদস্য যে স্বীকারোক্তি দিয়েছে সেদিকে দৃষ্টিপাত ও আলোকপাত করছি। যা পড়লে কোনো বিবেক সম্পন্ন মানুষের তা সহ্য না করারই কথা। এ লেখাটির সময় অশ্রুধারা সংবরণ করতে রুমাল হাতে নিতে হয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনের রোহিঙ্গাদের সাঁড়াশি আক্রমন শুরু করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এই অভিযানে যে গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ চালানো হয় যা পরবর্তী সময়ে তা চাক্ষুস দেখেছিল গোটা বিশ্ব। ভিটে মাটি ছেড়ে প্রাণ হাতের মুঠোয় নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে লাখ লাখ রোহিঙ্গা।
পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরনার্থীকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাদেরকে মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছেন। সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সেই নিষ্ঠুর নির্মমতার বর্ণনা মিলল মিয়ানমারের সাবেক চার সেনা সদস্যের মুখে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পাওয়া গেল এমন স্বীকারোক্তি। তবে শুরু থেকেই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও অং সান সুচি।
মায়ো উইন তুন ও জনাইংতুন নামের সেনাবাহিনীর সাবেক দুই সদস্য ওই নৃশংসতার স্বীকারোক্তি দিয়েছে। মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটসের উদ্ধৃতি থেকে জানা যায়, চলতি বছরের শুরুর দিকে পৃথক দুই লাইট ইনফ্যাস্ট্রি ব্যাটালিয়নের এই সেনা সদস্যকে ধরে নিয়ে যায় রাখাইনের সশস্ত্র গোষ্টি আরাকান আর্মি। এই গোষ্ঠির কাছেই এক ভিডিও স্বীকারোক্তি দেয় ওই দুই সেনা সদস্য। গত মাসে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যায় ওরা। বর্তমানে তারা নেদারল্যান্ডসের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের হেফাজতে রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভিডিও সাক্ষাৎকারে মায়ো উইন তুন ও জনাইংতুন গণহত্যার অভিযানে সরাসরি অংশ নেয়া ছয় সিনিয়র সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ১৯ জনের নামের একটি তালিকা দিয়েছে। তালিকায় তাদের দুজনের নামও রয়েছে। মায়ো উইন তুন বলে সেনাবাহিনীর ১৫তম মিলিটারি অপারেশন সেন্টারের এক কমান্ডারের আদেশ ছিল “সামনে যাকেই দেখবে গুলি করে হত্যা করবে।” সে আরও জানায়, এই নির্দেশের পরই গ্রামে একের পর এক অভিযান চালায় তাদের দল। পুরুষদের মাথায় গুলি করে হত্যা করে লাথি মেরে গর্তে ফেলে দেয়। মায়ো আরও বলে হত্যা করার আগে তারা নারীদের ধর্ষণ করতো। মায়ো নিজেও এক নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করেছে। কমান্ডারের নির্দেশে একটি অভিযানে অন্তত ৩০ রোহিঙ্গাকে হত্যা করে তার দল। এর মধ্যে আটজন নারী, সাতজন শিশু ও ১৫ জন পুরুষ ছিল। নিহতদের সবাইকে একটি সামরিক ঘাঁটির কাছে গণকবর দেয়া হয়।
প্রায় একই সময় পার্শ্ববর্তী আরেকটি এলাকায় একই ধরণের নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছিল জনাইংতুন। তার ওপরও নির্দেশ ছিল, “শিশু থেকে বৃদ্ধ যাকেই দেখবে সবাইকে হত্যা করবে।” জনাইংতুন বলে, আমরা প্রায় ২০টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন করেছিলাম। পরে শিশু ও বৃদ্ধদের লাশ একটি গণকবরে ফেলা হয়ে থাকে।
স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এই দুই সেনা সদস্য অন্তত ১৫০ রোহিঙ্গাকে হত্যা এবং কয়েক ডজন গ্রাম ধ্বংসে অংশ নিয়েছে। এই দুই সেনা সদস্যের বক্তব্যের সাথে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বক্তব্যের বেশ মিল রয়েছে। ২০১৮ সালে মিয়ানমার সেনা সদস্যদের রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণ, শিশু ও পুরুষদের হত্যা ও গণকবর দেয়ার প্রমাণ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা ফোর্টিফাই রাইটস। পার্থক্য শুধু আগের বর্ণনাগুলো ছিল ভূক্তভোগীদের আর এবারের কথাগুলো বেড়িয়েছে সরাসরি অপরাধীদের মুখ থেকেই। যে গ্রামে মায়ো উইং তুনের দল অভিযান চালিয়েছিল ২০১৭ সালের ২৬ আগস্ট দুই সন্তানসহ সেই কিয়েত ইয়ো পাইন গ্রাম থেকে পালিয়ে আসে ৩০ বছর বয়সী রেহানা। ৩০ আগস্ট বাংলাদেশের কক্সবাজারে এসে পৌঁছে রেহানা। একই দিন ফোর্টি ফাই রাইটসকে এক সাক্ষাৎকারে গ্রামবাসীর ওপর সেনাবাহিনীর নির্মম, অমানবিক ও নিষ্ঠুরতার বর্ণনা দেয় পালিয়ে আসা রেহেনা। রেহানা বলে, সেনারা ঝড়ের মতো আমাদের গ্রামে আসে। সামনে যাকেই পায় তাকেই হত্যা করে থাকে। কাউকে কাউকে মাথা কেটে হত্যা করে। সেদিন আমার স্বামী ও বাবাকেও একইভাবে হত্যা করা হয়। গুলির শব্দে চারিদিক ঝনঝন করছিল। আমরা দেখলাম, গ্রামে ঢুকে গুলি ছুঁড়ছে সেনারা। কিছুক্ষণ পরই দেখলাম, সবাই মরে লাশ হয়ে পড়ে আছে। ওই গ্রামে বহু নারী পুরুষ ও শিশু ছিল। গ্রাম ছেড়ে চলে আসার সময় আরও দেখলাম, এখানে সেখানে মাংসের টুকরো পড়ে আছে।
কিয়েত ইরোপাইন গ্রামে সেনারা কিভাবে ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের মায়ের কোল থেকে কেড়ে নিয়ে আগুনে ফেলে হত্যা করেছিল, তার বর্ণনাও উঠে আসে ফোর্টি ফাই রাইটসের রিপোর্টে। ৩৫ বছর বয়সী আট সন্তানের মা ওয়াইনি। বাংলাদেশে আসার পর ফোর্টি ফাই রাইটসকে এক সাক্ষাৎকারে নিজের সাথে ঘটে যাওয়া সেই বেদনা বিদুর দুঃস্বপ্নের কথা। সে বলে, মিয়ানমার সেনারা তার দুই বছর বয়সী এক শিশু কন্যাকে তার ১৪ বছর মেয়ের কোল থেকে কেড়ে নেয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুনের মধ্যে নিক্ষেপ করে। সে দিনের কথা স্মরণ করে ওয়াইনি বলে, আমরা কাছেই দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু আগুন থেকে আমার মেয়েকে সরাতে দেয়নি সেনারা। ছোট্ট মেয়ের এমনিভাবে পুড়ে যাওয়া দেখে আমরা তখন চিৎকার করছিলাম। এমন অজ¯্র হৃদয় বিদারক ঘটনার যেন শেষ নেই।
জানা যায়, আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিসি) রাখাইনের রোহিঙ্গার নিরীহ, নিরপরাধ জনগণের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানোর স্বীকারোক্তি দিয়ে মিয়ানমারের দুই সেনা সদস্য জনাইংতুন ও মায়ো উইংতুন সাক্ষ্য দিয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তির বিষয়টি নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এ বিষয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন ব্রিটেনের বিরোধী দল লেবার পার্টির বাংলাদেশী বংশদ্ভোত রুশনারা আলী এমপি ও ক্ষমতাসীন কনজারভেটিক দলের প্রভাবশালী এমপি জেরিমি হান্ট। বিবৃতিটি এমপি রুশনারা আলীর ব্যক্তিগত ওয়েব সাইটে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ইং প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
বিবৃতিতে বলা হয় মিয়ানমারের ওই দুই সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করার জন্য আইসিসির প্রতি আহবান জানিয়েছে শীর্ষ স্থানীয় সরকারি ও বিরোধী দলের দুই প্রভাবশালী এমপি। রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস হত্যা চালানোর কথা তারা স্বীকার করেছে। এমপিদ্বয় আরও বলেছেন, তাদের দুজনকে গ্রেফতার করা না হলেও আমরা মনে করি তারা আইসিসির হেফাজতে রয়েছে। এই প্রথমবারের মতো মিয়ানমার বাহিনীর কোনো সৈন্য সরাসরি হত্যাযজ্ঞের কথা ও গণহত্যায় অংশ নিতে মিয়ানমার সরকারের উর্ধ্বতন সেনা কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার কথা স্বীকার করল।
বিবৃতিতে রাইটস অব রোহিঙ্গা অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের কো-চেয়ারম্যান রুশনারা আলী এমপি ও জেরেমি হান্ট এমপি, এই দুই সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে আইসিসি কৌশুলিদের প্রতি জোরালো আহবান
জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, প্রকাশ্যে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বলা যায়, ওই দুই সেনা সদস্য মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত। তারা আদিষ্ট হয়ে এ জঘন্য অপরাধ করেছে কিংবা তারা কোনো জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা নয়, এই অজুহাতে আইসিসি বিষয়টি কোনো মতেই এড়িয়ে যেতে পারে না। কারণ আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আইন অনুযায়ী আইসিসি ন্যায় বিচার প্রয়োগ করার লক্ষ্যেই কাজ করছে। রাখাইনে শত শত নিরীহ, নিরপরাধ পুরুষ, নারী ও কোলের শিশুকে অমানবিক ও নির্মমভাবে হত্যা করা আন্তর্জাতিক অপরাধ। যারা এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞে অংশ নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ হওয়া উচিত। এই কারণেই আইসিসি সৃষ্টি হয়েছিল। আইসিসিতে অনেক দেশের মানবতা বিরোধীদের বিচার হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালত ইতোমধ্যে মানবতা বিরোধী একটি রায় দিলে তা আজও কার্যকর হয় না বলেও জানা যায়। মিয়ানমার এখনও রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ওপর যে অমানুষিক নির্যাতন, নৃশংসতা ও বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে, তা হৃদয় বিদারক। দৃশ্যপটে এ চিত্র ভেসে ওঠলেও আজও এর প্রতিকার নেই। রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততার স্বীকারোক্তি দিয়েছে আরও দুই সেনা সদস্য। তারা হচ্ছে চ্যাও মিও অং এবং পার তাওনি। চ্যাও মিও অং বলেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর ভয়াবহ নিপিড়ন চালিয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। অনেক কর্মকর্তা মাদকাসক্ত। মাদকের পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে তাদের। মিয়ানমারের সামরিক কর্মকর্তারা বলেন, এই দেশে ভিন্ন নৃগোষ্ঠির সবাই দাস। দুই জনের সাক্ষাৎকারের ভিডিও ফুটেজটি দৃশ্যমান হলে চ্যাওমিও অং ও পার তাওনির বক্তব্যের আরও ভয়াবহ ও লোমহর্ষক রোহিঙ্গা নির্যাতনের বর্ণনা জানা যাবে। তেমনিভাবে চীনের উইঘুর মুসলমানদের ওপর চলছে নৃশংসতা ও অমানবিক নির্যাতন। যা শরীর শিহড়িয়ে ওঠার মতো।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আরও স্বোচ্চার হলে বিশ্ববাসীর নিকট মিয়ানমারের সামরিক ঝান্তাদের (দানব) নির্বিচারে রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও কোলের শিশুদের ওপর নির্যাতন, নিষ্ঠুরতা, অমানবিক ও নৃশংসভাবে হত্যা ও ধর্ষণের চিত্র ভেসে ওঠবে। যারা নৃশংসভাবে রোহিঙ্গাদের হত্যা করছে তাদের মধ্যে সম্পৃক্ত দুইজন সেনা সদস্য তা সুস্পষ্টভাবে স্বীকার করেছে। যে দায় হতে আন্তর্জাতিক আদালতে আত্মস্বীকৃত দুই দানব ও মিয়ানমার সরকারের আদৌ রেহাই না পাওয়ারই কথা।
পাপ কখনও গোপন থাকে না। পাপী একদিন নিজেই নিজের চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের জালে ধরা পড়ে থাকে। মিয়ানমারের চার দজ্জাল সেনা সদস্যের স্বীকারোক্তি ইহারই বড় প্রমাণ। আল্লাহ রাব্বুল আল আমীন পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন আমি যা জানি তুমি তা জান না। আল্লাহ সীমা লংঘনকারীকে পছন্দ করেনি।
বাংলাদেশ সরকারের মানবতার আশ্রয়ে থাকা ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে যত তাড়াতাড়ি মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়া হয় ততই আমাদের দেশের জন্য মঙ্গল। ১১ লাখ রোহিঙ্গাদের বছরের পর বছর ভরণ, পোষন, বাসস্থান, রক্ষণ ও দায়ভার বহন করা বাস্তবিকই কঠিন ও দূরুহ। নির্যাতিত ও বিতাড়িত অসহায় রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে সরকার সাড়া দুনিয়ায় মানবতার যে নজির ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তা নজিরবিহীন ও অবিস্মরণীয়। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের পাশে যেভাবে ব্রিটেনের দুইজন এমপি এগিয়ে এসেছেন তাদেরকে সাধুবাদ। পরিশেষে বলব, এ ব্যাপারে জাতিসংঘ, ওআইসি (ঙৎমধহরুধঃরড়হ ড়ভ ওংষধসরপ ঈড়ঁহপরষ) এবং বিশ্বের মুসলীম দেশগুলো আরও সোচ্চার ও একজোট হয়ে এগিয়ে আসা দরকার। মিয়ানমারের রাখাইনের বিতাড়িত ও বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা আমাদের আপনজন। তাদের দুঃখ, ব্যাথা, বেদনায় আমরা মর্মাহত ও সমব্যথিত।
এ.কে.এম শামছুল হক রেনু
লেখক কলামিষ্ট