কষ্টের কতা কি কমো বাহে। কয়া কি লাব। পত্যেক বারের নাকান এবারও হামার ধান খায়য়া গ্যালো। একন হামরা খামো কি, তাক নিয়ে চিন্তাত আচি। গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার উপজেলার বোনারপাড়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন এভাবেই আক্ষেপ করে কথা গুলো বলেন। ওই কৃষকের আড়াই বিঘা রোপা আমন ধান মঙ্গলবার সকালে তলিয়ে গেছে। একইই গ্রামের আবদুল জোব্বারের তিন বিঘা, শাহজাহান মিয়ার দুই বিঘা ও আবদুস সামাদের এক বিঘা, তেলিয়ান গ্রামের আফজাল হোসেনের দুই বিঘা, বাটির আফসার আলীর দেড় বিঘা, আজিজার রহমানের এক বিঘা সহ অন্তত ১০ হাজার জন কৃষকের উঠতি রোপা আমন ধান তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতির পরিমান দাড়িয়েছে প্রায় এক’শ কোটি টাকার।
গত ২৪ ঘন্টায় পানি বেড়ে উপজেলার ১০ ইউনিয়নের উঁচু নিচু সব জমির উঠতি রোপা আমন ধান তলিয়ে গেছে। এছাড়াও পানির প্রবল তোরে বুধবার সকালে উপজেলার কামালেরপাড়া-জালাল তাইর পাকা সড়ক ভেঙে পানি প্রবেশ করে আরও নতুন করে অন্তত তিন শ’ বিঘা রোপা আমন ও শাকসবজির আবাদ তলিয়ে গেছে। উপজেলার তেলিয়ান গ্রামের কৃষক মফিজল হোসেন জানান, তার পৌনে দুই বিঘা জমির রোপা আমন তলিয়ে যাওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ব্যাপক উৎপাদন খরচ করে এখন ধানের থোড় আসার সময় ব্যাপক ক্ষতির শিকার প্রান্তি কৃষকদের মাথায় আকাশ ভেঙে পরার উপক্রম হয়েছে।
ধার দেনা করে আবাদ করেছেন বলে জানালেন উপজেলার অধিকাংশ প্রান্তি কৃষক। উপজেলার বোনারপাড়া, কালপানি, ভুতমারা, বুরুঙ্গি, রামনগর, কচুয়া, চন্দনপাট, দলদলিয়া, বাটি, গাছাবাড়ি, পদুমশহর, বড়াইকান্দি, বালুয়া সহ এ উপজেলার উঁচু নিচু প্রায় অধিকাংশ জমির রোপা আমন ধান তলিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৭শ’ ৫০ হেক্টর জমির রোপা আমন, ১০ হেক্টর জমির শাক সবজি ও ১০ হেক্টর জমির মাস কালাই সহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রায় ১০ জন হাজার জন কৃষকের ৮০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে অন্যন্য ফসলের।
৪ মাস আগেই দুই দফা বন্যায় প্রায় ৭শ’ ৫০ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়েছে। অন্তত ৫ হাজার কৃষকের ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান জানান, বন্যায় কৃষকদের তলিয়ে যাওয়া রোপা আমনের ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা ঘুরে দেখছি। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা করা হবে।