গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৫০ হাজার কোমলমতি শিশুদের করোনা পরবর্তি স্বাস্থ্য ঝুকিমুক্ত পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষে পাঠাভ্যাসের পাশাপাশি পরিচ্ছন্ন জীবন যাপনের অভ্যাস গড়ে তুলতে ২৫৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (সপ্রাবি) বিশেষ ব্যবস্থায় প্রস্তুত করা হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ২৫৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্কুল পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় (স্লিপ) এর ১ কোটি ৩৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। সারাবিশে^র ন্যায় বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাস দেখা দিলে বিদ্যালয় গুলো সরকারি ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। একারণে যথাসময়ে ঐ অর্থ ব্যয় না হওয়ায় উপজেলা শিক্ষা অফিস অর্থ গুলো যথানিয়মে উত্তোলন করে আলাদা ফান্ডে জমা রাখে। এদিকে বারবার সাবান পানি দিয়ে হাতধোয়ায় করোনা ভাইরাস থেকে প্রতিকার পাওয়া যায় বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত ব্যক্ত করলে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা হারুন-উর-রশিদ পরিকল্পনা গ্রহণ করেন ওই অর্থ দিয়ে প্রতিটি সপ্রাবিতে অন্যান্য কাজের পাশাপাশি হ্যান্ড ওয়াশ কর্ণার নির্মানের। যাতে করে কোমল মতি শিশুরা পাঠাভ্যাসের পাশাপাশি নিজেদের পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারে। এ ছাড়া তাদের মাঝে গড়ে উঠা অভ্যাস নিজেদের পরিবার কেও উদ্ধুদ্ধ করে। এ পরিকল্পনা মাথায় নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসারদের সাথে নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন। তিনি প্রতিটি সপ্রাবি এর প্রধান শিক্ষকদের ক্লাস্টার ভিত্তিক ডেকে নিয়ে বিষয়টি অবগত করিয়ে অর্থ ছাড় দেন। প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য স্কুল পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনার (স্লিপ) এর ৪০ হাজার টাকা করে হাতে পেয়ে প্রধান শিক্ষকগন অত্যান্ত আন্তরিকতার সাথে ৫/৭ টি ট্যাব সংযুক্ত টাইলস, লুকিং গ্লাস, সাবান, রাখার কর্ণার সম্বলিত হ্যান্ড ওয়াশ কর্ণার নির্মান করেন। পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করেন ট্যাং ও বৈদ্যুতিক মটর, যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে বিশেষ ব্যবস্থায় ট্যাব সম্বলিত বড় বড় বালতি রাখা হয়েছে। সরেজমীনে দেখা গেছে প্রতিটি সপ্রাবি এ হ্যান্ড ওয়াশ কর্ণার গুলো সুদৃশ্যমান। আবুল হোসেন, মমিনুল, বজলার রহমান, হামিদা খাতুন, কোরবান আলী, জাহাঙ্গীর হোসেন সহ সকল অভিভাবক জানান হ্যান্ড ওয়াশ কর্ণার গুলো নির্মান একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এতে করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সহ পরিচ্ছন্ন জীবন যাপন করতে পারবে তেমনি মরন ব্যাধি করোনা প্রতিরোধে সহায়ক হবে। আমরাও তাদের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবো। এতে করে উপজেলার ৫০ হাজার পরিবার পরোক্ষভাবে এর যে সুফল ভোগ করতে পারবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হারন-উর-রশিদ বলেন হ্যান্ড ওয়াশ কর্ণার গুলো শুধু শিক্ষার্থীদের জন্যই ভালো ফল বয়ে আনবে না পাশাপাশি তাদের মাধ্যমে পরিবার গুলো স্বাস্থ্য সুরক্ষায় পরিচ্ছন্ন থাকার ব্যপারে অভ্যাস্ত হবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী লুতফুল হাসান বলেন উদ্যোগ গ্রহণকারী প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য, এমন পরিকল্পনা গোটা দেশের প্রতিষ্ঠান গুলোতে নেয়ার মত। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম বলেন সপ্রাবি গুলোতে হ্যান্ড ওয়াশ কর্ণার নির্মান করায় আমি সংশ্লিষ্টদের সাধুবাদ জানাই। আমার মনে হয় এ থেকে অন্যান্যদেরও শিক্ষা নেয়া উচিত।