জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী ভ্যান চালক তাহাজ্জত শম্পার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন অবশেষে 'মাদার অফ হিউম্যানিটি নামে খ্যাত বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। পাশাপাশি তিনি শম্পার বাবা শরিফুল ইসলামের চিকিৎসার খরচ বহন, শম্পার জন্য মানসম্মত বাসস্থানসহ তার পড়াশুনা এবং তার পরিবারে ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর এমন মানবিকতায় আবেগ আপ্লুত হয়ে শম্পা ও তার পরিবারসহ নাকাটিবাসী খুশীর বন্যায় মাতুয়ারা হয়ে পড়েন। তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করে মোনাজাত করেন।
জেলা প্রশাসন সুত্রে জানাযায়, গত বুধবার(২ডিসেম্বর)প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সকাল সাড়ে ১০টায় সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের নাকাটি গ্রামে জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ এনামুল হক এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াসমিন সম্পার বাড়িতে উপস্থিত হন। পরে শম্পার অসুস্থ বাবা শফিকুল ইসলাম ভাসানীর উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক এবং সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শম্পার পরিবারের বসবাসের জন্য ১লাখ ৭৫হাজার টাকায় নির্মিতব্য বাসগৃহের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন কালে কেন্দুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ মো: মাহবুবুর রহমান মঞ্জু,কেন্দুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক নুরল,সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খান সোহেল, স্থানীয় ইউপি সদস্য সৈয়দুর রহমান সরকারসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়,গত ৫ বছর আগে জামালপুর শহর থেকে বাড়ি ফেরার সময় সড়ক দূর্ঘটনায় ডান পা ভেঙ্গে যায় শম্পার বাবা শফিকুলের। প্রথমে জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৭ লাখ টাকা খরচ করে চিকিৎসার পরেও ভালো হয়নি শফিকুল ইসলাম ভাসানীর ডান পা। এরপর থেকেই সবসময় বিছানায় থাকতে হয় শরিফুল ইসলামকে। তাই শম্পার মা নেবুজা বেগম সবজি বিক্রি করে সংসারের হাল ধরেন। কিন্তু সেই উপার্জনেও যখন সংসার চলে না বাবার ওষুধ ক্রয়ের টাকা থাকেনা তাই বাধ্য হয়ে দেড় বছর আগে থেকে ভ্যান চালানো শুরু করে শিশু শম্পা।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, ক’দিন আগে শম্পার পরিবারের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তাই তিনি বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশ পেয়ে জেলা প্রশাসক সড়ক দূর্ঘটনায় পঙ্গু শরিফুল ইসলাম এর বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সাথে কথা বলেন এবং খোঁজ খবর নিয়ে একটি রিপোর্ট পেশ করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে।
তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা শম্পার পরিবারের সকল দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।শরিফুল ইসলামের চিকিৎসা, তাদের নতুন ঘর নির্মাণ ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন ইতোমধ্যে বাবাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন সবসময় তার পরিবারের খোঁজ খবর নিবে এবং সহায়তা করবে বলে তিনি জানান।