বাগেরহাটের মোল্লাহাটে প্রতিবেশী গৃহবধূকে দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়া উত্ত্যক্তের অভিযোগ/মামলা টাকা দিয়ে মিথ্যা প্রমান করতে (ঢাকতে) চাইছেন শিক্ষক ফণি ভুষণ মৃধা ওরফে মিত্র। ইতোমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা ও সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে প্রকাশ্য অপতৎপরতার অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে। যার ধারাবাহিকতায় অভিযোগের বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধসহ অনুসন্ধান টিমের সাংবাদিকদের টাকা দেয়ার (প্রভাবিত করার) চেষ্টাও করেন ফণি ভুষণ মৃধা ওরফে মিত্র। নিজে ব্যার্থ হয়ে একই পেশার আরেক শিক্ষক’কে সঙ্গে নিয়ে মোল্লাহাট এসে সাংবাদিকদের আবারও ম্যানেজের চেস্টা করেন ফণি ভুষণ মৃধা ওরফে মিত্র।
অনুসন্ধানীতে জানাযায়, গাংনী গ্রামের মৃত কেষ্ট মৃধার ছেলে ৬৪ নং রহমত পাড়া এস এ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফনি ভুষন মৃধা/মিত্র প্রতিবেশী ওই গৃহবধু (৩৫)’কে প্রায় ২০বছর ধরে সিমাহীন উত্ত্যক্ত করে চলেছে। ওই ঘটনায় একাধিকবার ফণি ভুষনের স্ত্রীর কাছে নালিশ দিয়েছেন ওই গৃহবধু। এরপরও ওই শিক্ষক নিজেকে না সামলে বারবার ওই গৃহবধুর বাড়িতে গিয়ে এবং পথে-ঘাটে যেখানে-সেখানে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করেন। গত ১৩/০৭/২০২০ তারিখ বিকাল ৫টার দিকে গৃহবধুর বাড়িতে গিয়ে অন্য কেউ না থাকার সুযোগে জাপটাইয়া/জড়িয়ে ধরে এবং টানা হেছড়া করে। তখন নিজের ইজ্জত রক্ষার্থে নিরুপায় হয়ে এবং কৌশলে বাশের লাঠি দিয়ে ফণি ভুষণকে পেটাতে পেটাতে তার বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যায় ওই গৃহবধু।
এরপর ফণি ভুষন তার স্ত্রী’র সামেন ওই গৃহবধুর পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চায় এবং ভবিষ্যতে আর কোন বিরক্ত না করার প্রতিশ্রুতি দেয়। ফণি’র স্ত্রী ও তার স্বামীর দায় নিয়ে বলেন, আর কোন দিন তোমাকে (গৃহবধু) বিরক্ত করবে না। এরপর ওই রাতেই প্রতিবেশী শিক্ষক প্রফুল্য মন্ডল ও তার স্ত্রী এবং ফণি ভুষনের স্ত্রীসহ জনৈক লিপু সরদার গৃহবধুর বাড়িতে গিয়ে তাকে মামলা না করার জন্য অনুরোধ করেন এবং ভবিষ্যতে আর বিরক্ত করবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর মাত্র কয়েক দিন বিরত থাকলেও গত ২৭/১০/২০২০ ইং একই গ্রামের বাবার বাড়ি হতে স্বামীর বাড়ি যাওয়ার পথে জনৈক কমল দের বাড়ির সামনে ফাকা যায়গা পৌছলে ওই গৃহবধুকে একা পেয়ে টানা হেছড়া করে ফনি ভুষন। এবার ফণি ভুষনকে পায়ের জুতা খুলে পিটিয়ে নিজেকে রক্ষা করেন। এরপর নিরুপায় হয়ে তিনি অভিযোগ করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। ওই অফিস থেকে কাঙ্খিত কোন প্রতিকার না পাওয়ায় গত ১৯/১১/২০ ইং তারিখে বাগেরহাট নারী ও শিশু বিশেষ ট্রাইবুনালে অভিযোগ/মামলা করেন গৃহবধু।
এমামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই এর উপ-পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম’কে প্রভাবিত করতে তার সাথে প্রকাশ্য সখ্যতা গড়ে তুলছেন ফণি ভুষণ মৃধা।
গত ২০/১২/২০ তারিখে পিবিআই’র বাগেরহাট কার্যালয়ে উভয় পক্ষকে ডাকেন। ওই দিন আমরা (ভিকটিম) সাক্ষী দিয়ে বের হয়ে আসার পর ফণি মৃধা ওরফে মিত্র ও তার স্ত্রী দীর্ঘ প্রায় ২ঘন্টা ওই কর্মকর্তার কক্ষে থাকেন। এমনকি সে কোন কোন সাক্ষীকে বলেছে দারোগাকে ম্যানেজ করছি এতে আমার কিছু হবেনা। তোমরা আমার পক্ষে কথা বল্লে তোমাদের লাভ আছে, যা লাগে দেবো।
গৃহবধু আরো জানান তিনি ওই গ্রামেরই বধু এবং মেয়ে, বিয়ের পূর্ব থেকেই (প্রায় বিশ বছর ধরে) বিভিন্ন উপায়ে অশালীন/অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছে। শুরু থেকেই মান সম্মান বিবেচনায় ও লজ্জায় কারো কাছে না বলে কৌশলে তাকে এড়িয়ে চলছেন এবং মামা বলে সম্বোধন করেন তাকে। তবু সে নিজেকে সামলানো তো দুরের কথা দিন দিন আরো বেশী নির্লজ্জ ও বেপরোয়া হয়ে উঠছে। তিনি এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবী করেন।
গাংনী এলাকার কয়েক শিক্ষক, নারী ও পুরুষ জানান-শিক্ষক নামের কলঙ্ক ফণি ভুষনের অত্যাচারে তাদের প্রতিবেশী কালাচান তার স্ত্রী’কে নিয়ে দেশ ত্যাগ করে ভারতে চলে গেছেন। শিক্ষার্থীদের নারী অভিভাবকরা তার কু-প্রস্তাব এড়াতে কাছের স্কুল ছেড়ে দুরের স্কুলে ছেলে-মেয়েকে পড়াতে বাধ্য হণ। এমনকি স্কুলের মেয়ে শিশুদের সাথেও খারাপ আচারণ করার দৃষ্টান্ত আছে। জনৈক মহিলা জানান, তাদের পরিবারের সঙ্গে ফণির অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক ছিলো। কোন একরাতে নিজেদের মাঝে ঝগড়া হওয়ায় তার স্বামী রাগ করে ফণির বাড়িতে যান।
ফণি এটাকে সুযোগ ভেবে ওই মহিলার ঘরের দরজায় কড়া নাড়ে। নিজের স্বামী আসছেন ভেবে দরজা খুলতেই মহিলাকে ঝাপটে ধরে খারাপ উদ্দেশ্য চরিতার্থের চেস্টা করে ফণি ভুষণ। তখন ওই মহিলা বুঝতে পারেন সে নিজের স্বামী না। এরপর তিনি জোর প্রতিবাদ করেন এবং ফণি তখন তার কাছে ক্ষামা চেয়ে পার পন। লোক-লজ্জায় তিনি এ ঘটনার বিচার চান নাই। এমন কু-কর্মের অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সকলের দাবী ফণির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নজরুল ইসলাম বলেন, তাকে ম্যানেজের বিষয় সঠিক না। তিনি তদন্তে যা সঠিক পাবেন তাই প্রতিবেদন দিবেন।
শিক্ষক ফণি ভুষন নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন-আমি (ফণি ভুষন) শুনলাম যে, আমি নাকি মোল্লাহাট যেয়ে চা দোকানে বা কোন অফিসে কোন মিটিংএ বলেছি ওই মহিলা খারাপ ই-টি, কিন্তু এই কথা শুনে ওই মহিলা কষ্ট পাইছে। এ ছাড়া তার সাথে আমার কোন রূপ বিরোধ নাই।
সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে ফণি ভুষনের ডাকে আসা প্রতিবেশী ও শিক্ষক প্রফুল্য মন্ডল বলেন-যে মহিলা অভিযোগ করছে সে ইতি পূর্বে এধরনের অভিযোগ অন্য কারো বিরুদ্ধে করে নাই এবং কখনও তার কোন খারাপ চলাফেরা চোখে পড়ে নাই। অভিযোগের ঘটনা কিছু ঘটলে ঘটতেও পারে। অনুরূপ বলেন ফণি ভুষনের ডাকে আসা জনৈক লিপু সরদার।