জাতীয় পে-স্কেল ২০১৫-তে বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫% প্রবৃদ্ধি দেয়া হয়। এতে সরকারী ভাবমূত্তি অনেকটাই বৃদ্ধি পায়। আসলে শিক্ষক কর্মচারীদের ১% বেতন বৃদ্ধি হয়। হঠাৎ করে বেসরকারী শিক্ষক নেতারা প্রবৃদ্ধির বর্ধিত ৫% থেকে ৪% কেটে রাখেন অবসর ভাতা ও কল্যাণ ফান্ডের জন্য। এখন প্রশ্ন হলো, আগে অবসর ৪% এবং কল্যাণ ২% মোট ৬% টাকা কাটা হত। এ অবস্থায় শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ভাতা যা প্রদান করা হয়েছিল শিক্ষক সমাজ তা নিয়েই খুশি থাকতো। কিন্তু এখন ৬% এর স্থলে ১০% কর্তন করায় শিক্ষক ও কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ভাতা কিভাবে প্রদান করা হবে ?
প্রতিদিন শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর নিচ্ছেন। তাদের প্রাপ্য অবসর ও কল্যাণ কিভাবে প্রদান করা হচেছ তা শিক্ষক ও কর্মচারী সমাজ জানে না। তাই অনতিবিলম্বে ৬% কর্তনে কত প্রদান ও অতিরিক্ত কর্তনে কত প্রদান করা হচ্ছে বা হবে তা গেজেট আকারে চিঠি দিয়ে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে দিলে শিক্ষক সমাজ উপকৃত হবে।
বেসরকারী শিক্ষকদের চাকুরীসীমা ৬০ বছর পূর্ণ হলেই অবসর। কিন্তু অবসরের টাকা প্রদান করা হয় ৪/৫ বছর পর। এই দীর্ঘ সময়ে একজন শিক্ষক তার পরিবার পরিজন নিয়ে কি খেয়ে বাঁচবেন। এটা কখনো দেশ, জাতি, শিক্ষক নেতারা চান কি শিক্ষামন্ত্রী ভেবে দেখেছেন। যদি ভাবতেন তাহলে বেসরকারী শিক্ষকদের আজ করুণ অবস্থা না খেয়ে মৃত্যুবরণ করতে হতনা।
আমি দেশের একজন নাগরিক হিসেবে বলতে চাই, শিক্ষক অবসর নেয়ার পর যেমন আপনাআপনি এমপিও থেকে নাম মুছে যায় তেমনি অবসর ও কল্যাণের টাকা অবসরের সাথে সাথে পাওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। যদি সে ব্যবস্থা করতে বিলম্ব ঘটে তাহলে বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের চাকুরী শেষেই অবসর পেনশন চালু করতে হবে।
যদি এ ব্যবস্থা চালু করতে ব্যর্থ হন তাহলে সকল শিক্ষক কর্মচারীদের অতিরিক্ত ৪% কর্তনের সমুদয় টাকা এমপিওর মাধ্যমে বকেয়া হিসেবে ফেরত দেয়া হোক। কারণ শিক্ষক নেতারা যা বলবেন তাই হবে এটা হতে পারে না। যখন ৪% টাকা কর্তন করা হয় তখন শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে পরামর্শ ছাড়াই কেন কের্তন করা হয়।
প্রত্যেক উপজেলায় ১টি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ১টি করে কলেজ জাতীয়করণ করায় বৈষম্যভাবের সৃষ্টি হয়েছে। বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় যদি একবারে জাতীয়করণ করা যায়, বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় কেন জাতীয়করণ করা যাবে না? ইতোমধ্যে বেসরকারী শিক্ষকদের এনক্রিমেন্ট ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান করা হয়েছে।
শুধুমাত্র শতভাগ উৎসব ভাতা ও বাড়ী ভাড়া প্রদান করলেই সকল বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের পর্যায়ে পড়ে। তাই মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের স্বাধীনদেশে বসবাসযোগ্য পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যথাযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি।