নেত্রকোনার দুর্গাপুরে কাকৈরগড়া ইউনিয়নের বায়রাউড়া গ্রামের জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গৃহবধূ নাসরিন আক্তার (৪৫) দেশীয় অস্ত্র রামদার কুপে ডান পায়ের গুড়ালির উপরের অংশে তেইশটি সেলাই অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। গৃহবধূকে মারপিট ও তাঁর পুত্র কাওসার খান(১৫) কে হত্যার উদ্দেশ্যে এ উপর্যপুরি হামলার ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে একই এলাকার ইসলাম উদ্দিন খান(৪৫), আলমগীর খান(২২), মোশারফ খান(২০),রাসেল খান (২৮), রাবেল খান(২৫),মিজানুর রহমান খান (২০),কুদ্দুছ খানের পুত্র স্বপন খান এর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে ওই বিরোধ পূর্ণ জমি সহ আঃ রাজ্জাক খানের তফসিল বর্ণিত ভূমির ৩২২ দাগে ৪৮শতাংশ, ৩০২ দাগে উনিশ কাটা, ৩৫৫ দাগে চল্লিশ শতাংশ, ৪০৯ দাগে ২৪ শতাংশ ভূমিতে জোরপূর্বক পানি ভিজিয়ে হালচাষ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গৃহবধূকে বেধড়ক মারপিট ও প্রাণনাশের ঘটনায় একমাত্র কন্যা রিতু আক্তার(২০) বাদী হয়ে দুর্গাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। নাসরিন আক্তার ঐ গ্রামের আবদুর রাজ্জাক খান এর স্ত্রী। অভিযোগ দায়েরের পর থেকে ঘটনায় এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, ঐ ইউনিয়নের বায়রাউড়া গ্রামের আঃ রাজ্জাক খানের খতিয়ান এস.এ-২২, বি.আর.এস-১৪১,দাগ এস.এ-৩৫৪, বি.আর.এস-৫৪০ এর ৫৫ শতাংশের খাতের ১৬ শতাংশ স্বত্বদখলীয় নি¤œ তফসিল বর্ণিত ভূমিতে গত ২৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কাজ করতে গেলে বাঁধা প্রদান করে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে কাউসার খানকে কাঁদা মাটিতে উপুর করে ধরে রাখে। তার চিৎকারে মা নাসরিন আক্তার দৌঁড়ে গেলে তখন রামদা দিয়ে কুপ দেয়। সেই কুপ খেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যান তিনি। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। পায়ের সেই জখমি জায়গায় তেইশটি সেলাই লেগেছে বলে জানান ভুক্তভোগীর স্বামী আঃ রাজ্জাক খান। সরকারি হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই বিবাদী পক্ষ হাসপাতালে গিয়ে বিভিন্ন ধরণের হুমকি ও চিকিৎসা করেত দিবে না উচ্যবাচ্য আচরণ করছে বলে জানান বাদী রিতু আক্তার। ইসলাম উদ্দিন খান গংদের নানা অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বিবাদীগনের বিরুদ্ধে ফৌঃকাঃবিঃ ১০৭/১৭(৩) ধারায় আদালতে আবেদন দাখিল করা হয়। দুর্গাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয় এদের বিরুদ্ধে। সেটি তদন্ত করে দুর্গাপুর থানার নন এফ.আই.আর নং ১১/২০২১ইং এএসআই এনামুল হাসান গত ১৮.০১.২০২১ তারিখে ৫০০/৫০৬(২) পেনাল কোড ১৮৬০ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার পর থেকে ইসলাম উদ্দিন গংরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
মারপিটের অভিযোগ ওঠা সাইদুল ইসলাম খানের মুঠোফোনে বার বার ফোন দিলে রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য নেওয়া যায়নি। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাসরিন আক্তারকে বিবাদী পক্ষ চিকিৎসায় বাঁধা প্রদানের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিক্যাল কর্মকর্তা ডা.ফাতেহ আকরাম এ প্রতিবেদককে বলেন, মারপিটের গটনায় উভয় পক্ষয়ই হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। নাসরিনকে উচ্যবাচ্য ব্যবহার করার বিষয়টি আমাদের জানালে তাৎক্ষণিত থানাকে অবহিত করেছি। পুলিশ এসেছে, তদন্ত করেছে।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ওসি শাহনুর এ আলম প্রতিবেদককে জানান, দুটি পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগটি তদন্ত চলমান। তবে এ বিষয়ে মারপিটের ঘটনায় উভয়েই পক্ষের আহতরা সরকারি হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রুজু করা হবে।