রাজশাহীতে মঙ্গলবার বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে কঠোর অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এদিকে, রাজশাহী থেকে সোমবার আকস্মিক সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা। সোমবার দুপুর পর্যন্ত সমাবেশের জন্য অনুমতি মেলেনি দলটির। এর পরও যেকোনো মূল্যে সমাবেশ সফল করতে চায় বিএনপি। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাজশাহীতে বিভাগীয় সমাবেশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছে মহানগর বিএনপি। সোমবার দুপুরে মহানগরীর পদ্মা গার্ডেনের একটি কনভেনশন সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বলা হয়, মঙ্গলবার (আজ) বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও প্রশাসন সমাবেশের স্থান গণকপাড়া, জিরোপয়েন্ট, মনিচত্বরের একটিও নির্দিষ্ট করেনি এবং সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। অপরদিকে আশপাশের জেলা থেকে সব ধরনের বাস বন্ধ করে দিয়েছে। এতে প্রমাণিত হয় সমাবেশ করতে দিতে ভয় পাচ্ছে সরকার। বিএনপি নেতাদের দাবি, বিভাগীয় সমাবেশের বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে কথা বললেও তারা বিষয়টি সুরাহা করেননি। তাদের অভিযোগ, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে রাজশাহীতে কঠোর অবস্থানে গেছে প্রশাসন। সমাবেশ বানচাল করতে প্রশাসন ও সরকারি দল নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে সমাবেশ করার ব্যাপারে অনড় তারা। সব বাধা উপেক্ষা করে মঙ্গলবার সমাবেশে ঠিকই জনগণ আসবে বলেও দাবি করেন বিএনপি নেতারা। এ সময় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনসহ শীর্ষ নেতারা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন এবং ভোট চুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে এ বিভাগীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে বিএনপি। সমাবেশে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত ছয় মেয়র প্রার্থীসহ স্থানীয় ও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন।
রাজশাহী থেকে হঠাৎ সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ
রাজশাহী থেকে হঠাৎ সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়া এ বাস ধর্মঘটে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। মঙ্গলবার বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ। সে কারণে রাজশাহীর সঙ্গে সারা দেশের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রাজশাহীর পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের দাবি, বাস চলাচল করলে হামলার আশঙ্কা আছে। তাই শ্রমিকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তারা বাস চলাচল আপাতত বন্ধ করে দিয়েছেন। পরিস্থিতি বুঝে পরে তারা আবারও বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নেবেন। এ বিষয়ে রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো বলেন, যেহেতু রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। এর কারণে তারা বিশৃঙ্খলা ও যানবাহনে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা করছেন। এ কারণে তারা সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। যদিও রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন দাবি করে বলেন, বগুড়ায় তাদের এক শ্রমিককে মারধর করা হয়েছে। মারধরকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। এদিকে রাজশাহী থেকে হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধের কারণে দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ যাত্রীরা। তারা অনেকেই কাউন্টারে এসে ফিরে যাচ্ছেন। এ ছাড়া বিকল্প পথে হিসেবে অন্য যানবাহনে নিজ নিজ গন্তব্যে রওয়ানা দিচ্ছেন। এ ছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ কাউন্টারগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, এখন পর্যন্ত তাদের বিভাগীয় সমাবেশের অনুমতি ও স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। এর ওপর সকাল থেকে হঠাৎই রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এর কারণ বিভাগীয় সমাবেশে যেন মানুষ না আসতে পারে। এ ছাড়া আর কিছু না। এটি রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ নস্যাৎ করার অপচেষ্টা বলেও দাবি করেন বিএনপির এ নেতা।