মহান স্বাধীনতার ৫০বছর কেটে গেলেও লালমনিরহাটের রতœাই নদীর উপর নির্মিত হয়নি একটি সেতু। অনেকে নির্বাচনের আগে সেতু নির্মানে প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচিত হলেও কেউ কথা রাখেনি।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের রতœাই নদীর উপর একটি পাকা সেতুর অভাবে ২ পাড়ের ১৫-২০হাজার মানুষের চলাচলে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। একটি বাঁশের টারের উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি ও দ্রব্য সামগ্রী মাথায় নিয়ে পারাপার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে সাধারণ মানুষ।
শনিবার (৬ মার্চ) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের বাড়ীবনমালী গ্রামে রতœাই নদীর উপর ১৫-২০হাজার মানুষ অস্থায়ী বাঁশের টার দিয়ে লালমনিরহাট জেলার লালমনিরহাট সদর উপজেলাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছে। বাশেঁর টারের এক পার্শে এক হাত উপর হাতে ও মাথায় মালামাল নিয়ে নিয়ে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে প্রতিদিন এভাবেই পারাপার হচ্ছে।
কুলাঘাট ইউনিয়নের ৭০ বছরের বৃদ্ধ রজব আলী জানান, এই রতœাই নদীর বাঁশের টারের দক্ষিণে বাড়ীবনমালী, চরবুদারু গ্রাম ও আলোকদিঘি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলাখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর বাঁশুরীয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। করোনার কারণে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে পারাপার না হলেও স্কুল কলেজ খোলা থাকলে এই ঝুকিঁপুর্ন বাশেঁর টারের উপর দিয়েই তারা পারাপার হচ্ছে। দ্রুত এখানে একটি সড়ক সেতু নির্মান করে না দিলে যেকোন মুহুর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
অপরদিকে রতœাই নদীর বাঁশের টারের উত্তরে চরখাটামারী, চর সোনাইকাজি, কোদালকাটি, বস্তিখাটামারী, ধনিরাম গ্রাম ও চরখাটামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরখাটামারী নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় অবস্থিত।এ এলাকাগুলো কৃষি নির্ভর এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানে ধান, পাট, ভুট্টা, আলু, শাক সবজিসহ নানা ধরনের ফসল উৎপাদন হয়। এ এলাকা শস্য ভান্ডার খেত। পাকা ব্রীজ না থাকায় এ এলাকায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কৃষকসহ সাধারণ মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সর্বদা। বাঁশের টারের উপর দিয়ে পারাপার হচ্ছে ১৫-২০হাজার মানুষ। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা পাকা সেতু নির্মাণের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কেউ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি অনেকেই অভিযোগ করেন।
চরখাটামারীর এক কলেজ ছাত্র সোহরাব হোসেন বলেন, আমাদের এই এলাকা থেকে বড়বাড়ি কলেজে যেতে অনেক কষ্ট করতে হয়। ভোগান্তী লাঘবের জন্য এই বাড়ীবনমালী ও চরখাটামারী এলাকার মাঝখানে একটি সেতু নির্মানর দাবি জানান ওই কলেজ ছাত্র।
কুলাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রীস আলী মাষ্টার জানান, পর পর দুই ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে ওই স্থানে একটি সেতু নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করার পরেও সেখানে সেতু নির্মান হচ্ছে না। এজন্য তিনি সরকারের দায়িত্ব হীনতাকে দায়ি করেছেন। কেননা তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন, তাই জনগনের দিক চিন্তা করেও কিছুই করতে পারছেন না।
লালমনিরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার রায় জানান, বিষয়টি তিনি এখানে যোগদানের পরই শুনেছেন। সেখানে একটি সেতু নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবগত করেছেন। এ বছরেই বরাদ্দ পাওয়ার কথা রয়েছে। বরাদ্দ এলেই সেখানে দ্রুত সেতু নির্মানের কাজ শুরু করা হবে।