মহান স্বাধীনতা দিবসে রোগীদের জন্য সরকারীভাবে বিশেষ বরাদ্দের খাবারের টাকা আত্মসাৎ করতে বেডে রোগী না থাকা সত্বেও রেজিষ্ট্রারে রোগী ভর্তি দেখানো হয়েছে। “কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই” চাঞ্চল্যকর এ তথ্য উদ্ঘাটনের পর থেকেই বিষয়টি ধামাচাঁপা দেয়ার জন্য স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে বিভিন্ন মহল থেকে তদবির শুরু হয়েছে। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫০শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের মোট ১২টি বেড খালি রয়েছে। অথচ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের রেজিষ্ট্রারে দেখা গেছে সকল বেডসহ অতিরিক্ত বেডে রোগী ভর্তি দেখানো হয়েছে। হাসপাতালের স্টাফ নারায়ণ, স্টাফ মোরশেদা পারভীন, স্টাফ মাসুদ হোসেন, তাদের আত্মীয় ফুলজান বেগম, রিজিয়া বেগম, শাহজাহান, সিরাজ খান, মিজানুর রহমানসহ আটজনকে ভর্তি দেখানো হয়েছে। ভর্তিবহিতে প্রত্যেককে দুর্বলতার জন্য ভর্তি দেখানো হলেও হাসপাতালের বেড তো দূরের কথা হাসপাতালে দুই ঘন্টা অবস্থান করেও এসব ভুয়া রোগীদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
সূত্রমতে, ৫০শয্যার হাসপাতালে শয্যার অধিক রোগী থাকলে তাদের ফ্লোরে বেড দেয়া হয়। যা এক্সটা বেড বলে খাতায় লেখা হয়। কিন্তু হাসাপতালের ১২টি বেড খালি থাকা সত্বেও হাসপাতালের স্টাফ ও তাদের স্বজনদের নামে “এক্সট্রা” বেড দেয়ার বিষয়টি রহস্যজনক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে, মহান স্বাধীনতা দিবসে সরকারের বিশেষ খাবার পরিবেশনের জন্য রোগী প্রতি দুইশ’ টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে। সরকারের বিশেষ বরাদ্দের টাকা হাতিয়ে নিতে হাসপাতালের একটি চক্র সকল সময়ে তৎপর থাকে। ওই চক্রটি শুধু বিশেষদিন নয়; মাসের অন্তত ২০দিন এহেন কাজ করে রোগী ভর্তি দেখিয়ে তাদের নামের খাবারের অর্থের ১২৫ টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে মাস শেষে ঠিকাদারের কাছ থেকে ভাগাভাগি করে নেয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ বখতিয়ার আল মামুন বলেন, হাসপাতালের পুরো বেডে রোগী ভর্তির পরেই কেবলমাত্র এক্সট্রা বেড ব্যবহার করা হয় বা লেখা হয়। দিন শেষে কত রোগী ভর্তি আছে এমন একটি কাগজে তার স্বাক্ষর নেয়া হয়। তবে তিনি রোগীগুনে ওই কাগজে প্রতিদিন স্বাক্ষর করেন না। রোগী ভর্তির গোজামিলের বিষয়ে তিনি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মানোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। এটা হওয়া কোন রকমেই উচিত নয়। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।