দিঘলিয়া উপজেলাবাসীর স্বপ্নের ভৈরব সেতুর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হতে আর কোন বাধা থাকছে না। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র দিতে সম্মতি প্রদান করেছে। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভৈরব সেতুর কার্যাদেশ পায়। ছাড়পত্র সংক্রান্ত জটিলতার কারণে সেতু বাস্তবায়নকারী সংস্থা খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবনা পাঠাতে বিলম্ব করে।
গত সোমবার বেলা সাড়ে ৩ টায় খুলনা সার্কিট হাউজে ভৈরব সেতু বাস্তবায়নের অগ্রগতি সংক্রান্ত এক যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, খুলনা সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ, কেডিএ’র প্রতিনিধি, দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহবুবুল আলম সহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ এবং অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাবৃন্দ।
সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ৬ এপ্রিল, মঙ্গলবার সকাল ১০ টায় মাননীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্টরা ভৈরব সেতুর সেতু নির্মান এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।
উল্লেখ্য যে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির সভায় ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ভৈরব সেতুর কাজ দেওয়ার ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে একই বছরের ২৬ নভেম্বর ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কার্যাদেশ পাওয়ার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দিঘলিয়া উপজেলার দেয়াড়া ইউনাইটেড ক্লাব মাঠে অফিস বেজ ক্যাম্প প্লাস ষ্টক ইয়ার্ড তৈরী করে সেতু তৈরীর ইকুইপমেন্ট ষ্টক করতে শুরু করে। কিন্তু সেতু বাস্তবায়নকারী সংস্থা সড়ক ও জনপথ অন্যান্য অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পেলেও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র না পাওয়ার কারণে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবনা দিতে বিলম্ব করে। যে কারণে বিলম্বিত হয় ভৈরব সেতুর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করতে।গত সোমবারের বৈঠকে কেডিএ ছাড়পত্র প্রদানের সম্মতি প্রদানের মাধ্যমে ভৈরব সেতুর কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করার ক্ষেত্রে আর কোন বাধা রইলো না। ভৈরব সেতুর পশ্চিম সাইট নগরীর কুলিবাগান থেকে রেলিগেট ফেরিঘাট এলাকা কেডিএ’র ‘ডিটেল এ্যাকশন প্লানের’ আওতাভুক্ত হওয়ায় প্রথমে কেডিএ ছাড়পত্র দিতে অসম্মতি প্রদান করে।
ভৈরব সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হবে ১ দশমিক ৩১৬ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ব্যায় ধরা হয়েছে ৬১৭ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০৩ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮১ কোটি টাকা। বাকী টাকা সেতু সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে। সেতুটি হবে নগরীর কুলিবাগান আকাক্সক্ষা পাট গোডাউনের পাশ দিয়ে রেলিগেট ঢাকা ট্রেডিং হাউজ লিঃ এর মধ্য দিয়ে দিঘলিয়ার নগরঘাট থেকে দেয়াড়া কুকুরমারা মোড় পর্যন্ত।