ঘুঘু পাখি বাসা বেধেঁছে সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপারের বাংলোতে। এর ফলে গোলঘরে বসতে পারছেন না তিনি। লিচু বাগানেও কীটনাশক স্প্রে করতে পারছেন না কারণ ওই পাখিদের যাতে কোন ক্ষতি না হয়। বর্তমানে চলছে বসন্তকাল। পড়ছে প্রচন্ড গরম। আর এ গরমে তিনি এসি বন্ধ করে ঘুঘু পাখিদের নিরাপদ আবাস গড়েছেন, সৈয়দপুর রেলওয়ে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সিদ্দিকী তাঞ্জিলুর রহমান। কারণ তার বাংলোর বিভিন্ন জায়গায় ৩০টি বাসা গড়েছে ঘুঘু পাখি। ওই পাখিরা যাতে স্বস্তিতে ডিম পাড়তে পারে এজন্য বাংলো ও এর চারপাশে কড়া সতর্ক নজর রেখেছেন তিনি।
সৈয়দপুর শহরের রেলওয়ে অফিসার্স কলোনিতে প্রায় ২ একর জমির ওপর বিশাল বাংলো পুলিশ সুপারের। এর দক্ষিণে রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব। আর পূর্বপাশে দেশের বৃহত্তম সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাবধায়কের (ডিএস) বাংলো। মাঝে বিমানবন্দর সড়ক। ওই বাংলোতে স্ত্রী সন্তানসহ পুলিশ সুপারের বসবাস। ভবনের চারপাশ জুড়ে মনোরম পরিবেশ, ছিমছাম সুন্দর বাগান। সেখানে রয়েছে বেশকিছু লিচু গাছ। বাংলোর সামনে গোলঘর, গেট, লিচু বাগান, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের কুলার এর চারপাশে বাসা বেঁধেছে ঘুঘু পাখি।
দেখা যায়, পুলিশ সুপার সিদ্দিকী তাঞ্জিলুর রহমান নিজ মনে বাগান পরিচর্যা করছেন। কথা হল তাঁর সাথে। তিনি জানান, ভবনের ৩০টি স্থানে ঘুঘু পাখি বাসা বেঁধেছে। এর কারণে প্রচন্ড গরম সত্বেও এসি ছাড়তে পাচ্ছি না। পাখিগুলো যাতে নিরাপদে ডিম পাড়তে পারে সেজন্য সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি বলেন, আমার সাথে দেখা করতে আসা দর্শনার্থীদের সাথে গোলঘরে বসা হচ্ছে না। কেউ উচ্চৈঃস্বরে কথা বলছে না। লিচু বাগানে ফল এসেছে। এ সময় কীটনাশক স্প্রে করতে হয় কিন্তু আমি আমার লোকদের তাও মানা করেছি।
পাখিপ্রেমি পুলিশ সুপার হেসে হেসে বললেন, ছেলেবেলায় এয়ারগান দিয়ে কত পাখি মেরেছি। অথচ এখন দেখুন পাখিদের জন্য মায়া হচ্ছে। ওদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পরিবারসহ কষ্ট করছি।
তিনি আরো বলেন, ঘুঘু পাখির চরম শক্র হচ্ছে তালুয়া পাখি। ওই পাখি যাতে ঘুঘুর ডিম খেয়ে না ফেলে এজন্য বাংলোয় পুলিশ পাহারা বসিয়েছি। পালাক্রমে বিরামহীন খোঁজ রাখছেন তারা। আমি নিজেও এনিয়ে তদারকি করছি। পাখিদের দেখে আমার কত যে ভালো লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।