সারিয়াকান্দি উপজেলা এলাকায় যমুনা নদীতে পাহাড়ী ঢলের পানির কারণে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির কারণে যমুনা পাড়ের মানুষেরা আশা-নিরাশার দোলায় দুলতে শুরু করেছেন। কেউ কেউ বলছেন, পানি বৃদ্ধির ফলে আমাদের বিভিন্ন ফসলাদী ভালো হবে। আবার কেউ বলছেন, ৫ মাস পূর্বেকার ভাঙ্গন আজও ঠিকমতো মেরামত করতে না পারায় অনেক মানুষের মনে অজানা আতঙ্ক দানা বেধেঁছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যমুনার উজানে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমুর সহ বেশ কয়টি নদীর উৎসস্থল ভারতের পাহাড়ী এলকায়। এসব এলকায় এখন পাহাড়ের গা বেয়ে ঢলের পানি নামছে। এ পানি নামার ফলে সারিয়াকান্দির কাছে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধিতে চরাঞ্চলের হাজার হাজার মানুষের মনে আশার আলো দেখো দিয়েছে। চালুয়াবাড়ী, কাজলা, হাটশেরপুর, কর্ণিবাড়ী ও বোহাইল ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ দীর্ঘ দিন পর নদীতে পানি পেয়ে ফসল ফলানোর জন্য জমিতে মনের আনন্দে সেচ দিতে শুরু করেছেন। এর মধ্যই পাট, কাউন, আউশ ধান, ভুট্টো ও বিভিন্ন রকমের শাকসব্জির জমিতে নতুন পানির ছোঁয়া পেয়ে তরতর করে বেড়ে উঠছে ফসলগুলো।
অপর দিকে চরাঞ্চলের মনুষের সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ হলো যোগাযোগ ক্ষেত্রে। পায়ে হেটে দীর্ঘ বালুময় পথ চলা কঠিন হলেও পানি বৃদ্ধির কারণে সে কষ্টের লাঘব হবে বলে মনে করছেন চরাঞ্চলের মানুষেরা।
অপরদিকে গত শীত মৌসুমে সারিয়াকান্দির কামালপুর ইউনিয়নের টিটুর মোড় থেকে শুরু করে কামালপুর ফকিরপাড়া, দড়িপাড়া, রৌহদহ, হাওড়াখালী, গোদাখালী ও ইছামারা এলাকায় যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। অসময়ে ভাঙ্গনের কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মিত স্পার-বাঁধ ভাঙ্গনের মুখে পরেছে। তবে সে ভাঙ্গন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়ায় এ এলাকার হাজার হাজার মানুষের মনে অজানা আতঙ্ক দানা বেধেঁছে। বিশেষ করে চন্দনবাইশা, ভেলাবাড়ী ও কামালপুর ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছে।
গজারীয়া চর গ্রামের কৃষক আনছার আলী সর্দার বলেন, পানিতো বাড়ছে চৈত্র মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। সেই থেকে একটু-আদটু করে পানি বাড়ছেই। তবে এখন বাড়ছে হাতে হাতে। কাল যেখানে ছিলো বালু চর আজ সেখানে ঢলের পানি চলছে।
স্থানীয় সাংবাদিক মাইনুল হাসান মজনু বলেন, এ এলাকায় যমুনা নদীর ভাঙ্গনতো প্রায় ৫ মাস পূর্বেকার। দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় মানুষের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ বিরাজ করছে। উচিত সঠিকভাবে নদীর কাজ করে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয় বোর্ডের সারিয়াকান্দির উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এস.ডি.ই) আবদুর রহমান তাশকিয়া বলেন, যমুনায় পানি বাড়ছে এমন খবর আজ আমাদের হতে আসেনি। তবে পানি বাড়ছে শুনেছি। ৪/৫ দিন হলো কাজতো আমরা শুরু করেছি। প্রায় ৪ হাজার বালুর বস্তা এরইমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেগুলো ভাঙ্গন স্থানে ফেলা হবে। তবে এটি অস্থায়ী কাজ। স্থায়ীভাবে নদী ভাঙ্গন রোধ করার জন্য প্রকল্প গ্রহণের জন্য কাজ চলছে।