চলমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সারা দেশেই সকল প্রতিষ্ঠান সাধারণ ছুট ঘোষনা ও সিমীত আকারে সরকারি অফিসগুলোর কার্যক্রম চালানোর নিদের্শ দেন সরকার। আর এভাবে অফিস চললে
বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী সহ অন্যান্য দুস্থ্য ব্যাক্তিরা সময় মত তাদের প্রাপ্য ভাতা নাও পেতে পারে। এই কথা ভেবে করোনাকালীন সময়ে অফিস বন্ধের দিনেও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করে যাচ্ছেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিস।
জানা যায়, করোনা পরিস্থিতিতে যেন বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধীরা আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের আগেই তাদের প্রাপ্য ভাতা হাতে পান সে লক্ষে সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়ের সেবা ও ভাতা বিতরণ কার্যক্রম জরুরী সেবার আওতাভুক্ত করণের মাধ্যমে এ২চ পদ্ধতিতে সরাসরি উপকার ভোগীর নিকট প্রেরণের জন্য হিসাব খোলার নির্দেশ দেন সমাজকল্যান মন্ত্রনালয়। এর আলোকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার ও শনিবারেও নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অতিরিক্ত সময় কাজ করে যাচ্ছেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসের ৫ জন কর্মচারী। এ অফিসে মাঠ প্রশাসনের ৯ জন কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও ১ জন মার্তৃত্বকালীন ছুটি ও ৩ টি পোস্ট শূন্য থাকায় অল্প জনবল নিয়েই কাজ করছেন তারা।
সরেজমিনে ১ মে শনিবার সকালে সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ১০ টি ইউনিয়ন থেকে বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধি, স্বামী নিগৃহীতা, প্রতিবন্ধি শিক্ষার্থী ও শিক্ষা উপবৃত্তি গ্রহিতারা এসেছেন সমাজসেবা কার্যালয়ে। তাদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করছেন কর্মকর্তার কাছে।
সমাজসেবা অফিসে আসা খামারকান্দি ইউনিয়নের পারভাবনীপুর গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে শতবর্ষি বয়স্ক ভাতাভোগি জয়নাল আবেদিন, বিশালপুর ইউনিয়নের নায়েরপাড়া গ্রামের মৃত রবিউল করিমের স্ত্রী বিধবা ভাতাভোগি বিলকিস খাতুন, ভবানীপুর ইউনিয়নের বেলগাড়ি গ্রামের আয়নাল হকের স্ত্রী প্রতিবন্ধি ভাতাভোগি আয়েশা খাতুন বলেন, আমরাতো ভেবেছিলাম এই করোনার মধ্যে রোযার ঈদের আগে আমাদের ভাতা পাবোনা। এই নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করেই উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে ফোন দিল যে আজ (১ মে শনিবার) অফিসে আসতে হবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে। ভাতা প্রদানের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। আমরা এখন ভিষন খুশি এই ভেবে যে, কর্মকর্তা কর্মচারীদের আপ্রান চেষ্টায় ঈদের আগেই আমরা ভাতা পাবো।
এ ব্যাপারে সমাজসেবা কার্যালয়ের কারিগরি প্রশিক্ষক মো. আরিফুল ইসলাম জানান, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক আমরা অফিস বন্ধের দিনেও কাজ করে যাচ্ছি। সবাই জানে যে অফিস বন্ধ কিন্তু আমরা প্রত্যেককে ফোন দিয়ে ডেকে এনে ভাতার কাজ করছি। জনবল ক থাকায় আমাদের একটু বেশি পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল হক বলেন, দুস্থ্য উপকারভোগীদের কথা ভেবেই সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন সরকার। সে লক্ষেই আমরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছি। ঈদের আগেই উপকারভোগীরা তাদের প্রাপ্য ভাতা হাতে পেলেই এই পরিশ্রম সফল হবে বলে আমি মনে করছি।