অবশেষে বহুল আলোচিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা বোর্ড ময়মনসিংহের এক আদেশে ভেঙ্গে দেওয়া হল শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি। একই সাথে বিদ্যালয়টি সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনার স্বার্থে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলাম কে এডহক কমিটি গঠন করার অনুমতিও প্রদান করা হয়েছে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নয়াবিল উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বেলায়েত হোসেন খসরু অভিযোগ আনায়ন করে প্রধান শিক্ষক আঃ লতিফ কে গত ১৯ জানুয়ারী সাময়িক বহিস্কার করে। এরপর ওই ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের ১নং সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলাম কে দায়িত্ব না দিয়ে ৪র্থ সহকারী শিক্ষক মনি কুমার সাহা কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়। পরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপনটি উপস্থাপন করলে ২৬ জানুয়ারী/২০২১ ইং তারিখে ১নং সিনিয়র শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলাম কে রেজুলেশন এর মাধ্যমে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং নয়াবিল স্কুলে আমিরুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে ৫মাস যাবত দক্ষতার সহিত দায়িত্ব পালন করছেন। এবস্থায় বিদ্যালয়ের বিষয়ে প্রধান শিক্ষককে বহিস্কার, অভিভাবক সদস্যকে বহিস্কার ও নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ম্যানেজিং কমিটির বিরোদ্ধে অত্র ব্যাক্তিগন আদালতে ৪টি মোকদ্দমা দায়ের করে। বহিস্কৃত প্রধান শিক্ষক আঃ লতিফ এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক একটি তদন্ত প্রতিবেদন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকশিক্ষা বোর্ড ময়মনসিংহে প্রেরন করা হয়। বিদ্যালয় মানেজিং কমিটির সভাপতি বেলায়েত হোসেন খসরু ১০ ই জুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলামকে নিয়োগ প্রক্রিয়া করতে বলেন। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আদালতে মোকদ্দমা ও শিক্ষা র্বোডে অভিযোগের নিস্পত্তি না হওয়ায় তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়া করতে অস্বীকৃতি জানান। এর প্রেক্ষিতে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বিষয়টি অন্য ভাবে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন উপেক্ষা করে তার পুত্র বধু কে ১২ জুন ৫ম সহকারী শিক্ষক জোলেখা বেগম কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব দেয়। ১৩জুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলাম শিক্ষা বোর্ডে একটি অভিযোগ দায়ের করায় ১৭ জুন শিক্ষা বোর্ড (৫) কর্ম দিবসের মধ্যে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। জবাব সন্তোষ জনক না হওয়ায় এক আদেশে ২৯ জুন সর্বশেষ শিক্ষা বোর্ড বিধি অনুযায়ী ম্যানেজিং ভেঙ্গে দেয়।
এলাকাবাসী মোঃ সাকাওয়াত হোসেন বলেন, ইতি পূর্বের কমিটি নিয়োগ বানিজ্য ও বিদ্যালয়ে অনিয়মের কারণে এলাকাবাসী ও অবিভাবকবৃন্দ খুবই ক্ষুব্দ ও অসন্তুষ্ট ছিল। বর্তমানে বির্তকিত কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ায় এলাকাবাসী ও অভিভাবকবৃন্দ সন্তুষ্টি প্রকাশ করছেন। আমাদের দাবী হল, বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান উন্নয়নে ও সুষ্ঠ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সুন্দর একটি ম্যনেজিং গঠন করা আবশ্যক।
নয়াবিল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলাম বলেন, বিধি মোতাবেক ও নীতিমালা অনুযায়ী আমি এখন নয়াবিল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে বিদ্যালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি। এদিকে ২৬ জানুয়ারীর পর থেকে অদ্যবদি পর্যন্ত প্রাক্তন সভাপতি বিদ্যালয়ের নোটিশ ও রেজুলেশন খাতা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আমিরুল ইসলামের নিকট হস্তান্তর করেননি। যা বিদ্যালয়ের নীতি বিধি বর্হিভূত কাজ।
বোর্ড কর্তৃক পত্রস্থ নয়াবিল স্কুলের প্রাক্তন সভাপতি বেলায়েত হোসেন খসরু নিকট এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষা বোর্ড যেটি ভাল মনে করেছেন সেটি করেছেন। এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।