নাটোরের বড়াইগ্রামে মোবাইলের বিকাশ একাউন্ট থেকে কৌশলে বয়স্ক ভাতার টাকা হাতিয়ে নেয়ার প্রতিবাদ করায় বৃদ্ধা দাদী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী দাদাকে পিটিয়ে বাড়ি ছাড়া করেছে নাতি ও নাতিন জামাই। তিনদিন পর বুধবার স্বজনদের অনুরোধে দাদাকে বাড়িতে উঠালেও দাদী এখনও আতœীয়-স্বজনদের আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন আর বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বলে জানা গেছে। সোমবার উপজেলার জোয়াড়ী ইউনিয়নের জোয়াড়ী সৈয়দ মোড় এলাকায় এ অমানবিক ঘটনা ঘটে। হতভাগ্য স্বামী-স্ত্রীরা হলেন জোয়াড়ী গ্রামের হুজুর আলী (৮০) ও তার স্ত্রী আদরী বেগম (৭৫)।
বুধবার সন্ধ্যায় থানার প্রধান ফটকের সামনে বড়াইগ্রাম পৌর মেয়র মাজেদুল বারী নয়নকে পেয়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে তার কাছে বিচার চান আদরী বেগম। পরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় আদরী বেগমের। তিনি জানান, তার স্বামী হুজুর আলীর মোবাইলের বিকাশ একাউন্টে গত ০৬ জুলাই তিন মাসের বয়স্ক ভাতার দেড় হাজার টাকা আসে। ১০ জুলাই তিনি নাতি লিটন হোসেন (২০) কে মোবাইলটি দিয়ে বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে টাকা বের করে আনতে বলেন। কিন্তু সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে মোবাইলে কোন টাকা আসেনি বলে জানায় লিটন। পরদিন আদরী বেগম নিজেই মোবাইলটি নিয়ে নিকটস্থ বিকাশ এজেন্টের কাছে গিয়ে জানতে পারেন যে, তার স্বামীর বিকাশ একাউন্টে টাকা এসেছে এবং আগের দিন তার লিটন তা তুলে নিয়ে গেছে। পরে বাড়িতে এসে বিষয়টি জানতে চাইলে তার ছেলে অহিদুল ইসলাম ও নাতি লিটন উত্তেজিত হয়ে উঠে। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে তারা আদরী বেগম ও তার স্বামীকে আমের ডাল ভেঙ্গে পিটিয়ে আহত করেন। এ সময় লিটন ও সেখানে উপস্থিত লিটনের ভগ্নিপতি নজরুল ইসলাম তাদেরকে জোর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। পরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন তারা। এদিকে, তিনদিন এদিক সেদিক থাকার পর বুধবার বিকালে হুজুর আলীকে বাড়িতে উঠালেও আদরী বেগমের জায়গা হয়নি সেখানে। উল্টো পুনরায় মারপিটের হুমকির কারণে তিনি এখন স্বজনদের বাড়িতে অসহায় জীবন যাপন করছেন।
বৃহস্পতিবার বড়াইগ্রাম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে আদরী বেগমের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দুজনের সঙ্গে খুবই অন্যায় করা হয়েছে। এ ব্যাপারে যা যা করণীয় সব কিছু করা হবে।