ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত অসহায় এক যুবকের নাম মো. সামির (২৭)। সামির উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের আখিঁতারা গ্রামের বশির মিয়ার ছেলে। বর্তমানে বসবাস করছেন সরাইল সদরের উচালিয়াপাড়া গ্রামে। মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত সামির অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পারছে না। দরিদ্র অসহায় সামিরের পাশে অর্থ সহযোগিতা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন বন্ধু ফাউন্ডেশন নামের একটি সামাজিক সংগঠন। গতকাল রোববার দুপুরে সামিরের বাড়িতে ছুটে যান সংগঠনের সভাপতি মৃধা মাহবুব এলাহি প্রদ্যুৎ। চিকিৎসার জন্য সামিরে হাতে তুলে দেন ১০ হাজার টাকা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান, সাহিত্য সম্পাদক মো. জহিরূল ইসলাম রিপন, বন্ধু ফাউন্ডেশনের কার্যকরী সদস্য মোহাম্মদ আবদুল মমিন ও মেজবাহ উদ্দিন রবিন। টাকা হাতে পেয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সামির। আবেগ আপ্লোত হয়ে বলেন, আমি বাঁচতে চাই। বাবা বেঁচে নেই। আমার বড় কোন ভাইও নেই। ছোট একটি ঘরে কোন রকমে গিজাগিজি করে থাকি মা সহ ৫ জন। সংসারের অবস্থা নুন আনতে পানতা পুড়ায়। কোথায় পাব টাকা? এত ব্যয়বহুল চিকিৎসা করার ক্ষমতা আমার পরিবারের নেই। আপনারা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি আপনাদের কাছে চির কৃতজ্ঞ। আমি আপনাদের সংগঠনের প্রবাসী দুই ভাই সহ সকলের কাছে ঋণী হয়ে গেলাম। এই ঋণ কোন দিনও শোধ করতে পারব না। দোয়া ছাড়া কিছুই তো দেয়ার নেই আমার। সরাইল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খান বলেন, অসহায় মানুষের সেবায় এগিয়ে এসেছে বন্ধু ফাউন্ডেশন। এর আগেও তারা সামিরকে ২১ হাজার টাকা সহায়তা করেছেন। টকবগে যুবক সামিরকে বাঁচাতে সকলেরই সহায়তা করা প্রয়োজন। আমি সকলকে অনুরোধ করব আসুন বন্ধু ফাউন্ডেশনের মত আমরা সকলেই তাকে সহযোগিতা করি। মানুষ মানুষের জন্য এ সত্য প্রতিষ্ঠায় বিত্তশালীদেরও সামিরের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করছি। প্রসঙ্গত: মা, ২ ভাই, ২ বোন সহ ৫ সদস্যের পরিবারে সামির সবার বড়। সংসারের দায়িত্বও তার। ছোট দু’চালা একটি টিনের ঘরে খুবই কষ্টে বসবাস করছে তারা। ২০১২ সালে অনেক কষ্টে প্রবাসে গিয়েছিল সামির। দেখেছিল সুখের স্বপ্ন। প্রথম দিকে ভালই চলছিল কর্মজীবন। কিন্তু ভাগ্য ফিরে তাকায়নি। চাকরিটি ছিল বেকারীতে। আগুনের তাপের মধ্যে কাজ করতে হতো। ২-৩ বছর পরই অসুস্থ হয়ে যায় সামির। সেখানকার চিকিৎসা গ্রহন করে। ধরা পড়ে ব্লাড ক্যান্সার। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে সামির। কারণ সামির বুঝেছিল এটা মরণব্যাধি। এরপরও সেখানে চিকিৎসা করে অনেক টাকা খরচ করেছে। সবশেষে চলে আসে দেশে। সংসার চালানোই যখন কষ্টের। সেখানে চিকিৎসা করবে কিভাবে। সহযোগিতা চেয়ে জহিরূল ইসলাম রিপন প্রথমে ফেসবুকে একটি ষ্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে সাড়া মিলেছে। প্রথম সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন বন্ধু ফাউন্ডেশন। একটি জীবন বাঁচাতে পর্যায়ক্রমে অনেকেই আসবেন এমন আশায় এখনো বাঁচার স্বপ্নই দেখছে সামির। সামিরের মা বলেন, চোখের সামনে ছেলের কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। যন্ত্রণায় কলিজা ছিড়ে যাচ্ছে। দেখানোর জায়গা নেই। অর্থাভাবে চিকিৎসা করতে পারছি না। মা হয়ে আমি সন্তানের মৃত্যু কোন ভাবেই সইতে পারব না। আমি যেন এর আগেই মারা যায়। আপনারা দয়া করে আমার ছেলেটাকে বাঁচাতে চিকিৎসায় সহযোগিতা করূন। আমার আত্মা আপনাদের জন্য দোয়া করবে।