সিলেটের জকিগঞ্জে দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
সোমবার (৯ আগস্ট) জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে ‘এনার্জি সিকিউরিটি: মডার্ন কনটেক্সট, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ওয়ে ফরোয়ার্ড’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
মন্ত্রীর এ ঘোষণায় করোনা আতঙ্কের মধ্যেই প্রাপ্তির আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে স্থানীয়দের মাঝে। অনেকেই ফেসবুকে বিষয়টি লিখে প্রধানমন্ত্রী ও বাপেক্সকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
জকিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল খায়ের চৌধুরী বলেন, করোনার ভীতিকর পরিস্থিতির মাঝে আমরা একটি সুখবর পেলাম। পাশের উপজেলা বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জের মতো জকিগঞ্জবাসীও যখন রান্নার জন্য গ্যাসের লাইন পায় তখন আমাদের আনন্দ ষোলকলায় পূর্ণ হবে।
জকিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. আবদুল আহাদ বলেন, গ্যাস প্রাপ্তিতে জকিগঞ্জের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বেড়ে যাবে। জাতীয় পর্যায়ে জকিগঞ্জের পরিচিতিও বাড়বে।
জকিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমী আক্তার বলেন, জকিগঞ্জের সাধারণ মানুষের মতো আমি গ্যাস প্রাপ্তির খবরে আনন্দিত। জকিগঞ্জের মানুষের মতো আমিও খুশি। এটি জকিগঞ্জের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশাবাদী।
জকিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান লোকমান উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শোকের মাসে করোনার ভীতির মাঝে আমরা একটা বড় খুশির পেলাম। দেশের উন্নয়নে জকিগঞ্জ ভূমিকা রাখবে এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। গ্যাসের ব্যবহার ও কর্ম সংস্থানের ক্ষেত্রে জকিগঞ্জ অগ্রাধিকার পাবে বলে স্থানীয়দের দৃঢ় বিশ্বাস ও প্রবল প্রত্যাশা। জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী জানান, জকিগঞ্জে আমরা ইতোমধ্যে প্রায় ৬৮ পিসিএফ (প্রতি বর্গ ইঞ্চি) গ্যাসের সন্ধান আমরা পেয়েছি। প্রতিদিন প্রায় ১০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। যেখান থেকে প্রায় ১২ থেকে ১৩ বছর পর্যন্ত গ্যাস উত্তোলন করতে পারব। যার মূল্য প্রায় এক হাজার ২৭৬ কোটি টাকা।’
জকিগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম আনন্দপুর গ্রামে সন্ধান পাওয়া এটি দেশের ২৮তম গ্যাসক্ষেত্র। বাপেক্স বলছে, এটি থেকে উত্তোলনযোগ্য ৫০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ আছে। সেখান থেকে গ্রিডে দৈনিক ১০ মিলিয়ন যুক্ত হবে। আর ১০ থেকে ১২ বছর গ্যাস উত্তোলন সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এ- প্রোডাকশন কোম্পানি (বাপেক্স)' গত ১৫ জুন ডিএসটি (ড্রিল স্টিম টেস্ট) সৌভাগ্য শিখা জ্বালাতে সক্ষম হয়েছিল।বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী ওই সময়ই গণমাধ্যমকে জকিগঞ্জে গ্যাস প্রাপ্তির আশ্বাস দিয়েছিলেন।
কূপটির অভ্যন্তরে চাপ রয়েছে ৬ হাজার পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চি) আর ফ্লোটিং চাপ রয়েছে ১৩ হাজারের অধিক। প্রথমত একটি স্তরের টেস্ট চলমান। কূপটিতে মোট ৪টি স্তরে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখছে বাপেক্স।