মহামারি করোনায় লকডাউনে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার ঘোষণায় সাতক্ষীরার সুন্দরবন কেন্দ্রিক স্পটগুলো প্রস্তুতির কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় এসব স্পটগুলো সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছিল। তাই দর্শকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এদিকে আগামী ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়ায়
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে নৌ মাঝিদের মধ্য ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেখানে রীতিমত আনন্দ বন্যা বইছে বলে জানান বুড়িগোয়ালিনী নীলডুমুর ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল হালিম।
তিনি বলেন, করোনাকালে দীর্ঘ লকডাউনের পর ট্রলার চালকরা সরকারের পক্ষ থেকে পর্যটন কেন্দ্র ও বিনোদন কেন্দ্র খুলে দেওয়ার ঘোষণায় নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছে। কেননা করোনাকালীন লকডাউনের দোফলা যাঁতাকলে ট্রলার মালিক ও চালকরা মানবেতর জীবন যাপন করে আসছিলেন। দীর্ঘদিন পর তারা আবার উজ্জীবিত হয়েছে। নৌকা, ট্রলার, লঞ্চসহ অন্যান্য জলযানগুলো ধুয়ে মুছে পরিস্কার করা হচ্ছে। জং ধরা ট্রলার ও নৌকা ধুয়ে মুছে রং করা হচ্ছে। পর্যটকদের পরিবহনের জন্য নৌকা ট্রলার ও লঞ্চ মালিকরা তাদের যানবাহনকে আবার প্রস্তুত করছেন বলে জানান, শ্যামনগর বুড়িগোয়ালিনী ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য শহিদুল ইসলাম, নীলডুমুর ঘাটের ট্রলার মাঝি আমিনুর রহমানসহ বেশ কিছু ট্রলার মাঝি। তারা তাদের ট্রলার ধোয়া মুছার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য এখনো পযর্ন্ত সরকারিভাবে লিখিত অনুমতি পায়নি পশ্চিম সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ।
তবে সুলতান আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় করতে বনবিভাগের সদস্যরা পরিষ্কার পরিছন্নতাসহ সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। সুন্দরবনের পর্যটন এলাকাগুলোতে বহুদিন পর্যটক না আসায় গাছ-গাছালি হওয়ায় সেগুলো লোকজন দ্বারা পরিষ্কার করা হচ্ছে।
বহুদিন পর পর্যটন এলাকা খুলে দেওয়া হচ্ছে এবিষয় সাতক্ষীরা জোন ট্যুরিস্ট পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিন আলেমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টুরিস্ট এলাকাগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে সে কারণে আমরা আমাদের কার্যক্রম যেটা আছে সব সময় পর্যটকদের নিরাপত্তাসহ সকল কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
প্রসঙ্গতঃ ১৯ আগস্ট থেকে সড়ক, রেল ও নৌপথে সব ধরণের গণপরিবহণ চলবে। অর্ধেক আসনে খুলছে পর্যটন, বিনোদনকেন্দ্র ও কমিউনিটি সেন্টার। আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের এই সিদ্ধান্তের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৯ আগস্ট থেকে সবধরণের গণপরিবহণ চলবে। একইসাথে পর্যটন কেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টারে ও বিনোদন কেন্দ্র ধারণ ক্ষমতার ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করা যাবে। তবে সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সবকটি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
কোন প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব নিতে হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।