কখনো মা অসুস্থ্য, আবার কখনো বা বৃদ্ধ নানী অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর পথ যাত্রী। সালিশ দরববারের মাধ্যমে এমন খবর মেয়েটির কানে দেওয়া হচ্ছিল বার বার। কখনো বা মেয়েটির হাতে পায়ে ধরে আগত স্বজনদের কান্না-কাটি। কিন্তু কিছুতেই বাড়িতে আর ফিরে যেতে চাচ্ছেন না। এমনি ভাবে তিনদিন ধরে বুঝিয়ে - সুঝিয়ে মেয়েটাকে নিতে পারলেন না বাবা। অবশেষে গতকাল রোববার দুপুরে ইউসুফ আলী (২৪) এর বাড়ির আঙ্গীনায়। সালিশ দরবার করে ব্যর্থ হওয়ায় ফিরে গেলেন মেয়েটির বাবা আবুল কাশেম। এ ঘটনাটি ঘটেছে ,বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কামালপুর ইউনিয়নের বিবিরপাড়া গ্রামে। জানা গেছে ওই গ্রামের ময়েন উদ্দিনের ছেলে ইউসুফ আলী ৩ বছর আগে বি,এ পাস করার পর চট্রগ্রাম হালিশহরের একটি কোম্পানিতে চাকুরি করেন। চাকুরির ৬মাসের মাথায় আনন্দ ভ্রমণে যান মেহেরপুর জেলা সদরে। সেখানে গিয়ে পরিচয় হয় মেহেরপুর সরকারি কলেজে অর্নাস ৪র্থ বর্ষে পড়-য়া নুসরাত তামান্নার সাথে। তামান্না মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আবুল কাশেম এর মেয়ে। তামান্নার সাথে প্রায় ৩ বছর ধরে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। এ সুবাদে গত ১৮ আগস্ট বাড়িতে থেকে বেড়িয়ে উভয়ই রেজিষ্ট্রেরি করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এ দিকে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসার পর থেকে মেয়েটির পরিবারের লোকজন হলদিল হয়ে পড়েন। গত ২২ আগস্ট সন্ধান পান মেয়েটি বগুড়ার সারিয়াকান্দির কামালপুর ইউনিয়নের বিবিরপাড়া গ্রামে রয়েছে। খবর পেয়ে ২৭ আগস্ট আবুল কাশেম তার পরিবারের লোকজন নিয়ে ছুটে আসেন বিবিরপাড়া গ্রামে। আসার পর থেকে মেয়েটিকে বিভিন্ন ভাবে বুঝানোর চেষ্টা চলছিলো বাড়িতে মায়ের কাছে ফিরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কোন কাজ না হওয়ায় গতকাল রোববার দুপুরে এক সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের মাধ্যমে মেয়েটির মামা আশরাফু জ্জামান, চাচা কামাল হোসেন, খালু মোঃ মিজানুর রহমান সহ সাথে আসেন আরো ৮ জন। তারা বার বার বুঝাচ্ছিলেন বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কিছুতেই রাজি হচ্ছিলেন না মেয়েটি। সালিশ বৈঠকে সবার সামনে সাফ জানিয়ে দেন আমি আর বাবার বাড়িতে ফিরে যাব না। মরি- বাঁচি আমি স্বামীর বাড়িতেই থাকবো। ওই সালিশী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কামালপুর ইউপির ২নং ওয়ার্ড সদস্য রেজাউল করিম ঠান্ডু সহ বিবিরপাড়া গ্রামের পাশর্^বতী গ্রামের ৩শতাধিক নারী পুরুষ। ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, আমরা বিভিন্ন ভাবে বুঝিয়েছি কিন্তু মেয়েটি স্বামীর বাড়ি ছাড়তে নারাজ। অপর দিকে সালিশী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হেদাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন আমরা তো মেয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারি না। অপহরণ ও পালিয়ে নিয়ে এসে ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে আসা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হলেও আসলে তা নয়। মেয়েটি সত্যিকারের ভালবাসার টানে বেড়িয়ে এসে বিয়ে করার কথা প্রতিয়মান হয়েছে। তাদের ভালবাসার বন্ধন চির দিন অটুট থাকুক এটাই আমাদের কামনা।