রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ডের) মোছা: তাছমিনা খাতুনের বিরুদ্ধে খাস পুকুর ইাজারার টেন্ডার বাক্স প্রকাশ্যে না খোলার অভিযোগ উঠেছে। ডাইংপাড়া মৎস্যচাষী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মো: কামরুল ইসলাম গোপনে টেন্ডার বাক্স খোলাসহ নানান অভিযোগ তুলে ধরে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার এর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ ১২ সেপ্টেম্বর ( রোববার ) দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগের একটি রিসিভ কপি এই প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে।
ডাইংপাড়া মৎস্যচাষী সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি মো: কামরুল ইসলাম অভিযোগে উল্লেখ করেন, গোদাগাড়ী উপজেলার সরকারী খাস পুকুরসমূহ বাংলা ১৪২৮-১৪৩০ সন মেয়াদের পুনঃলীজ কার্যক্রম বর্তমানে চলমান রয়েছে। প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী দরপত্র দাখিল করার শেষ তারিখ ২৩ আগস্ট ২০২১ ইং। সেই মোতাবেক উপজেলার বিভিন্ন মৎস্যজীবি ও মৎস্যচাষী সমিতির পক্ষ থেকে যথাসময়ে প্রায় ৫৫০ টি দরপত্র টেন্ডার বাক্সে দাখিল করে প্রতিবারের মতই প্রকাশ্যে টেন্ডার ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
পরবর্তীতে জানতে পারে, প্রকাশ্যে জনসম্মুখে কোন টেন্ডার বা দরপত্র খোলা হবে না এবং ঘোষণাও করা হবে না। এ বিষয়ে জলমহাল কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছাঃ তাছমিনা খাতুনের নিকট জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তোর প্রদান করেননি। এতে টেন্ডারে অংশগ্রহণ কারিরা মনে করেন বিশেষ কোন ব্যক্তির স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সাথে টেন্ডার বাক্স ঘরবন্দী অবস্থায় খোলা হয়েছে। এর ফলে আমরা সাধারণ মৎস্যচাষীগণ সম্পূর্ণরূপে দিশেহারা ও নিরাশ হয়ে পড়েছে। কিন্তু গত ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১ ইং তারিখের প্রকাশিত ১ম বিজ্ঞপ্তির নির্দেশাবলীর আলোকে প্রকাশ্যে নিলাম ডাকের/ টেন্ডার বাক্স খোলার সময় নির্ধারণ করা থাকলেও গত ০২ আগস্ট ২০২১ তারিখের প্রকাশিত পুন:বিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশ্যে নিলাম ডাক/টেন্ডার বাক্স খোলার কোন সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়নি।
ইতোপূর্বে গোদাগাড়ী উপজেলার জলমহাল ইজারা কার্যক্রম স্বচ্ছতার সাথে প্রকাশ্যে ও জনসম্মুখে ঘোষণা করা হতো। কিন্তু গোদাগাড়ী উপজেলা ভূমি অফিসের দুর্নীতিবাজ সার্ভেয়ার মোঃ মুক্তার আলী পুকুরের ফাইল নেয়ার পর থেকে তিনি উপজেলা জলমহাল কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবকে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে টেন্ডার বাক্স না খুলে দুর্নীতির ফাঁদ পেতে বসেছেন। কিন্তু ১০ আগস্ট ২০২১ ইং তারিখে ৭৪৩ নং স্মারকে ইস্যুকৃত পত্রের ৪ নং ক্রমিকের নির্দেশনায় খাস জলাশয়, ভিপি/এপি পুকুরসহ অন্যান্য সায়রাত মহালের নিলাম ডাকের ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রচারণার মাধ্যমে নিলাম কার্যক্রমকে প্রতিযোগিতামূলক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলকভাবে সম্পন্ন করে বিশেষতঃ কমপক্ষে তিনজন নিলাম ডাককারীর উপস্থিতিতে নিলাম ডাক সম্পন্ন করে তা গ্রহণ/অনুমোদনের কথা বলা হয়েছে। অন্যান্য সময়ে তা মানা হলেও এবার প্রথমবারের মতো মানা হয়নি গোদাগাড়ী উপজেলা জলমহাল ইজারা প্রদান কার্যক্রমে। এটিই খুবই হতাশাজনক।
গোপনে টেন্ডার বাক্স খোলাসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মো: কামরুল ইসলাম অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, আমি সব সময় আইনকে সম্মান করি। আমি চাই পুকুর টেন্ডার আইন ও বিধি সম্মত হোক। তিনি আরো অভিযোগ করেন, আইন একটাই কিন্তু একেক ইউএনও ও এসিল্যান্ড এসে একেক নিয়ম চালু করছে। সব কিছুর সচ্ছতা হওয়া প্রয়োজন তাই এই অভিযোগ করা। আর এসবের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের কপি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক, রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও রাজশাহী জেলা সমন্বিত দুর্নীতি দমন উপ-পরিচালক বরাবর পাঠিয়েছেন বলে জানান।
এসব অভিযোগের বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা: তাছমিনা খাতুনের সাথে মোবাইলে একাধিক বার কল দিলে ফোন রিসিভ করেনি এমনকি এসএমএস দিয়ে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।