গাইবান্ধা জেলা পরিষদ কার্যালয়ের প্রবেশমুখে বহু বছরের পুরনো জলাধারটি ভরাট করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বালিও ফেলা হয়েছে। জলাধার ভরাট বন্ধে কর্তৃপক্ষকে পত্র দিয়েছে পৌরসভা। গাইবান্ধা জেলা পরিষদের জলাধার ভরাট করে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি, মার্কেট নিয়ে তালবাহানা ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ব্যবসায়ীরা। জেলা পরিষদ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের আয়োজনে গতকাল শহরের ডিবি রোডের হকার্স মার্কেটের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন জেলা পরিষদ দোকান মালিক সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম, শাহিদুদ্দোজা চৌধুরী সুমন, নুর মোহাম্মদ বাবু, আইনুল মিয়া, রফিকুল আজাদ, আহসান হাবীব, জেলা যুব জোটের সভাপতি সুজন প্রসাদ। এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, নিজের মেয়াদকালের শেষ সময়ে জলাধার ভরাট করে মার্কেট নির্মাণ ও জায়গা লীজ দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার পায়তারা করছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার। জলাধারটি ভরাট হলে শহরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে দাবী করে ব্যবসায়ীরা বলেন, দুই বছর আগে মার্কেটে দোকান বরাদ্দের নাম করে ৬২ জন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোন রসিদ ছাড়াই প্রায় অর্ধকোটি টাকা নেয়া হয়। এখন মার্কেটও নাই, দোকানও নাই, ব্যবসায়ীদের টাকা ফেরৎ বা কোন রসিদ দেয়ারও নাম নাই। জেলা পরিষদ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম বলেন, রাতের বেলা তার বাসায় বিছানায় বসে তিনি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকার বান্ডিল ব্যাগে ভরে নিয়েছেন। মানববন্ধনে বক্তারা জলাধার ভরাট বন্ধ করে মার্কেট নির্মাণ, টাকা ফেরৎ ও প্রকৃত ব্যবসায়ীদের দোকান বরাদ্দের দাবী জানান। মানববন্ধনে জেলা পরিষদের ব্যবসায়ীরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অংশ নিয়ে দাবীর সাথে একাত্বতা প্রকাশ করেন। এদিকে জেলা পরিষদের প্রবেশমুখে জলাধার ভরাট বন্ধ করতে শনিবার প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান বরাবরে পত্র দিয়েছেন গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মতলুবর রহমান। পানি নিষ্কাশনের জলাধার ভরাট ইমারত নির্মাণ বিধিমালার পরিপন্থি’ উল্লেখ করে জলাধার ভরাটের উদ্দেশ্যে রাস্তায় রাখা বালি অপসারনের অনুরোধ করেন পৌর মেয়র। কিন্তু গাইবান্ধা-নাকাইহাট সড়কে জেলা পরিষদের প্রবেশমুখে জলাধার ভরাটের উদ্দেশ্যে রাখা বালির ¯তুপ অপসারণ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, জলাধার ভরাটের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তই তিনি জানেন না। সিইও বলেন, কেন, কি কারণে জলাধার ভরাট করা হচ্ছে, ভরাটের জন্য কত টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে তাও তার অজানা। তবে তিনি পৌরসভার একটি পত্র পেয়েছেন। পত্র মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এনিয়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকার বলেন, এটি কোন জলাধার নয়, এটি নীচু একটি ডোবা। ডোবার ড্রেণেজ ব্যবস্থা সচল করতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে দাবী করে তিনি বলেন, মামলা মোকদ্দমাসহ নানা জটিলতা শেষে টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। মন্ত্রণালয় মার্কেট নির্মাণের যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি করেছে। কমিটির প্রতিবেদনের পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। দোকান বরাদ্দের জন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।