গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষ যেন পরিত্যক্ত গুদাম ঘর। দেখে কোন বোঝার উপায় নেই এটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম। বাপ-দাদার জমিতে স্কুল প্রতিষ্টা করা হয়েছে তাই স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম এই স্কুলের ক্লাস রুমগুলো কখনো সরিষার গুদাম, কখনো পাটের গুদাম, কখনো বা পেয়াজের গুদামসহ ব্যাক্তিগত কাজে ব্যবহার করে বলে স্থানীয়দের দাবী। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা নিতে নানা অসুবিধার সম্মুখিন হতে হচ্ছে।
হদলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, দুটি রুমে ৫ম ও ৩য় শ্রেণীর ক্লাস চলছে। পাশের একটি শ্রেণী কক্ষ তালাবদ্ধ। স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায় এই ক্লাস রুমটি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে স্কুলের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। চরের বিভিন্ন পন্য কিনে এই রুমে স্টক করে রাখে। দাম বাড়লে বিক্রি করে। তালাবদ্ধ শ্রেনী কক্ষটি স্কুলের দপ্তরীকে খুলতে বললে তিনি জানান, এই ক্লাস রুমের চাবি সভাপতির কাছে। সভাপতি বাড়িতে না থাকায় পরে সভাপতির স্ত্রী এসে রুমটি খুলে দেয়। রুমে প্রবেশ করে দেখা যায় এই রুমটিতে কৃষি কাজে ব্যবহত ইঞ্জিন চালিত শ্যালো মেশিন, প্লাষ্টিক পাইপ ও কিছু স্থানে পাট পরে আছে। স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, এই স্কুলটির সভাপতি মনগড়া ভাবে চলে। প্রতিষ্টানের সম্পদ নিজের মনে করে ভোগ করে। ক্লাস রুমগুলো নিজের প্রয়োজনে ব্যবহার করে। এসব বিষয়ে বাধা বা নিষেধ করলে স্কুলের জমি নিজের বাবার বলে দাপট খাটায়।
এই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো: আবদুর রশিদ জানান,“আমরা সভাপতিকে অনেক বার বলেছি কিন্তু আমারাদের কথা শোনেননি। শিক্ষা কর্মকর্তা স্কুল পরিদর্শনে এসে চলতি মাসে দুই দিন রুমটি তালা বন্ধ দেখে এবং রুমটি ছেড়ে দিতে বললেও তিনি শোনেন নি।”
প্রধান শিক্ষক মো: লুৎফর রহমান জানান, ক্লাস রুম থেকে পাট অপসারণ করতে স্কুল কমিটির সভাপতিকে একাধিকবার মৌখিক জানানোর পরেও রুমের চাবি দেয়নি। তাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। একজন প্রধান শিক্ষক হিসাবে স্কুলের সভাপতির বিরুদ্ধে আর কি করার থাকে।”
রুমটি দখলে রাখার অভিযোগ স্বীকার করে স্কুল কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান,“ক্লাস রুমটি পরিত্যক্ত ছিল। তাই আমার চেনা কিছু ব্যবস্যায়ী এই রুমের দরজা জানালা মেরামত করে পাট রাখে। আমরা পাটগুলো রুম থেকে সরিয়েছি। প্রধান শিক্ষক চাইলে রুমটি দিয়ে দিবো। আমার ব্যবহারিক জিনিস পত্র সরিয়ে নিবো।”
সাঘাটা সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ জানান, প্রধান শিক্ষক একটি লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরে রুমটি খালি করতে স্কুলের সভাপতিকে বার বার তাদিগ দিয়েছি তিনি রুমটি খালি করেনি। আমরা এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো।”
সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা নিতে বলবো।