সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলায় এখন জোরেশোরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। কারিগরেরা দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে অধিকাংশ প্রতিমার মাটির কাজ শেষ হয়েছে। আর কয়েক দিন পরেই পড়বে রং-তুলির আঁচড়। এরপর ঢাকঢোল পিটিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী চলবে দুর্গোৎসব। দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে তৈরি করা হয়েছে প্রতিমা দুয়ারে কড়া নাড়ছে দেবী দুর্গার আগমন বার্তা। মহালয়ার ভোরে চ-ীপাঠ শোনার অপেক্ষায় ভক্তকূল। আর মাত্র কয়েকদিন পর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। ১১অক্টোবর পঞ্চমী তিথিতে শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। কারিগররা তাঁদের নিপুণ হাতের ছোঁয়া দিয়ে দিন-রাত কাজ করেই চলেছেন। তাঁদের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়ায় যেন জীবন্ত হয়ে উঠছে প্রতিমা। উপজেলায় এ বছর ৫৪টি ম-পে দুর্গাপূজার আয়োজন হবে। মন্দিরে মন্দিরে শেষ হয়েছে প্রতিমা তৈরির কাজ। তবে এবার স্থানীয় কারিগর পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে প্রতিমাপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ বেড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্রতিমা কারিগর সুনীল চন্দ্র জানান ভিন্ন ভিন্ন আটটি প্রতিমা মিলিয়ে এক সেটের মজুরি নিচ্ছেন ২৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। একটি সেট তৈরিতে প্রায় ১০ দিন সময় লাগে। এতে দুর্গার সঙ্গে রয়েছে অসুর, সিংহ, মহিষ, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিক ও লক্ষ্মীর প্রতিমা। প্রতিমা কারিগর সুশীল চন্দ্রের স্ত্রী ছবিতা রানী বলেন, ‘এ বছর কাঠ, খড় ও মাটির দাম বেশি। প্রতিমা তৈরিতে খরচ একটু বেশি হচ্ছে। তেমন একটা লাভ থাকছে না। কোনোমতে টিকে আছে বাপ-দদার এ পেশা। অন্য সময় দিনমজুরি করে সংসার চলে আমাদের। স্থানীয় হাটখোলা দুর্গা মন্দিরের সভাপতি স্বন্দীপ সাহা জানান, গত বছর প্রতিমা তৈরিতে ২৬ হাজার টাকা খরচ হলেও এ বছর লাগছে ৩৫ হাজার টাকা। ইতোমধ্যে প্রতিমার কাঠামোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন অপেক্ষা রং-তুলির আঁচড়ে রঙিন করে সাজিয়ে তোলা।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ রাণীশংকৈল উপজেলা শাখার সভাপতি ছবিকান্ত দেব বলেন, এ বছর রাণীশংকৈলে প্রায় ৫৪টি ম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছরের মতো ধর্মীয় সম্প্রতি বজায় রেখে সর্বজনীন এই উৎসব হবে। উৎসবকে কেন্দ্র করে ম-প কমিটিগুলো এখন প্রতিমা স্থাপনের কাজ করছে। এ লক্ষ্যে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা কারিগরেরা।
এসময় আ.লীগ সভাপতি অধ্যক্ষ সইদুল হক বলেন- স্বাস্থ্যবিধি মেনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা গত বছর বৈশ্বিক মহামারির কারণে উৎসব পালনে বিঘœ হয়েছিল-এবছর উৎসব মূখর পরিবেশে পালন হবে শারদীয় দুর্গাপূজা। উপজেলা আ.লীগের পক্ষ থেকে সকল ধরনের সার্বিক সহায়তা প্রদান করবে।
থানা পরিদর্শক (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবাল জানান- প্রতিমা তৈরি, পুজা উদযাপন এবং প্রতিমা বিসর্জন সহ দুর্গাপূজার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক থেকে দ্বায়িত্ব পালন করবেন।