১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস পালিত হলো নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে। এ বছর এ দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ‘আমাদের কর্মই আমাদের ভবিষ্যৎ, ভালো উৎপাদনে ভালো পুষ্টি, আর ভালো পরিবেশের উন্নত জীবন।’ অন্যদিকে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট চারটি গবেষণায় বলছে, বেগুন, ফুলকপি, শিম ও বরবটির নমুনায় ১১ থেকে ১৪ শতাংশের মধ্যে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকর মাত্রায় রাসায়নিক কীটনাশকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত এ গবেষণা আরো বলছে, আম ও পেয়ারায়ও রয়েছে ক্ষতিকর কীটনাশক। তাহলে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠবে আমরা এবারের বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় কি ভাবে আত্মস্থ করবো?
শুধু তাই নয়; বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে। চাল, চিনি, পেয়াজ থেকে শুরু করে সাবান, সোডা সব কিছুরই দামেই ঊর্ধ্ব গতি। সীমিত আয়ের মানুষগুলো তাদের জীবন যাপনে এ মূল্য বৃদ্ধিতে দারুণভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। পিঁয়াজ ৮০ টাকা কেজি যা ছিল ৩৫/৪০ টাকা কেজি, চিনি ৮০/৮৫ টাকা কেজি, আগে যা ছিল ৬০/৬৫ টাকা কেজি। তবে আশার কথা হলো বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রাককালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড পিঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক শূন্য করেছে। আগে ৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হতো। এ আদেশ বহাল থাকবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ ছাড়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চিনি আমদানিতেও আবগারি শুল্ক ১০ শতাংশ কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। আগে আমদানি শুল্ক ছিল ৩০ শতাংশ। ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ শুল্ক নির্ধারিত থাকবে।
তবে আশার কথা, বাজারে পিঁয়াজ, চিনির দাম কমতে শুরু করেছে। কিন্তু কাঁচা তরিতরকারির বাজারে দাম বেড়েই চলেছে। এখন ৫০ টাকা কেজির নিচে কোনো তরিতরকারি নাই। বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি ও পিঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্ব গতি হয়েছে। কেবল শুল্ক কমিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখা যাবে না। এ পদক্ষেপ সাময়িক সুবিধা দিতে পারে। তবে সঠিক ভাবে বাজার তদারকি বাড়িয়ে ও বিকল্প ব্যবস্থাপনায় নিত্য পণ্য সীমিত আয়ের মানুষের কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের খাবার ব্যবস্থা করতে হবে।
এমনিতে করোনার কারণে মানুষের আয়ের পথ রুদ্ধ। তাই সরকার টিসিবির মাধ্যমে শহরে যে নিত্য পণ্য জনগণের কাছে পৌঁছাচ্ছে, তেমনি গ্রামের মানুষের কাছেও পৌছাতে হবে। আর ফল, ফসলে কীটনাশকের ব্যবহার না করে ক্ষতিকর রাসায়নিক থেকে মানুষকে রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। আশা করি সরকার এদিকে নজর দেবেন।