তৈরি পোশাকশিল্পের বাইরেও যে গ্রিন ফ্যাক্টরি রয়েছে, সেগুলোর দিকেও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। সবুজশিল্পের প্রসার ছাড়া পরিবেশ রক্ষা করা কঠিন। এজন্য সারা বিশ্বই এখন গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট ও সাসটেইনেবল বিজনেসের দিকে ঝুঁকছে। আমাদেরও সময় এসেছে গ্রিন ব্যাংকিংকে গুরুত্ব দেওয়ার। অন্যথায় অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবী মানুষের জন্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে।
শিল্পায়ননির্ভর অর্থনীতির টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিগত চার দশকে একটি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার পেছনে আমাদের যে যাত্রা তার মূলে রয়েছে শিল্পের অভাবনীয় বিকাশ, বিশেষ করে শ্রমনির্ভর ম্যানুফ্যাকচারিং খাত। পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নেও আমাদের গার্মেন্টস খাত অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ধসে পড়েছিল নয় তলা ভবন রানা পস্নাজা। এটি ছিল দেশের পোশাকশিল্পে ঘটে যাওয়া সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি। ভবন ধসে প্রাণ হারান হাজারেরও বেশি মানুষ। রানা পস্নাজা ধসের পর থেকেই পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এরপরই বাংলাদেশে সবুজ শিল্পের যাত্রা শুরু হয়। প্রায় আট বছরে দেড় শতাধিক সবুজ কারখানা গড়ে উঠেছে। এর বাইরে আরও অন্তত ৫০০টি সবুজ কারখানা গড়ে উঠেছে। যারা সনদের অপেক্ষায়। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) নামের একটি সংস্থা সারা বিশ্বের সবুজ শিল্পের সনদ দিয়ে থাকে। এই সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০০টি সবুজ কারখানার ৩৯টি বাংলাদেশে স্থাপিত। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১৫০টি সবুজ কারখানা রয়েছে। এরমধ্যে ৪১টিই সবুজ কারখানা হিসেবে পস্নাটিনাম সনদ পেয়েছে। ক্রম পরিবর্তনশীল আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থেকে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনে শিল্পের ভূমিকার বিষয়টিকেও নজর রাখতে হচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের যুগে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় পরিবেশ ও জলবায়ুর বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
গ্রিন ইকোনমি বা সবুজ অর্থনীতির সেস্নাগান দিনে দিনে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পরিবেশবান্ধব শিল্প-কারখানা প্রতিষ্ঠা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের উদ্দেশ্যেই এখন নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। এজন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবেশকে উপেক্ষা করে উন্নত সমৃদ্ধ সমাজ, অর্থনীতি, সুন্দর জীবনযাপনের কথা ভাবা যায় না। সুন্দর অনুকূল পরিবেশ উন্নয়নের অন্যতম পূর্বশর্ত। জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশ যদি বিপন্ন হয়, তাহলে অর্থনীতিও বিপন্ন হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সামগ্রিক সমৃদ্ধির জন্য পরিবেশগত ভারসাম্য ও অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রতি এখন জোর দিচ্ছেন সবাই। অতীতে এ বিষয়ে তেমন কোনো সচেতনতা ছিল না। কিন্তু বিশ্বব্যাপী শিল্পায়ন ও নগর সভ্যতার ক্রম বিকাশের প্রভাবে জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি এবং ভয়ঙ্কর বিপর্যয় ঘটায় এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও এ বিষয়ে প্রতিকারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশ যখন হুমকির মুখে পড়েছে তখন গ্রিন ইকনোমির ধারণা জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। টেকসই উন্নয়নের জন্য সবুজ অর্থনীতির নানা কর্মকৌশল কার্যকর ও সুফলদায়ক হিসেবে প্রমাণিত হওয়ায় এখন বাংলাদেশে এ বিষয়ে মনোযোগী হয়ে উঠেছেন সবাই। যে সব অর্থনৈতিক কর্মকা- শুধু উৎপাদন, বণ্টন এবং সেবা ও পণ্যের ভোগকে কেন্দ্র করে আবর্তিত না হয়ে দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশের উপর ক্ষতিকর প্রভাব না ফেলে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিচালিত হয় সেগুলোকে গ্রিন ইকোনমির অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
গ্রিন ইকোনমির জন্য দেশে গ্রিন ব্যাংকিং কার্যক্রম জোরদার করা জরুরি হলেও বাংলাদেশে এটা আজও প্রত্যাশিত অবস্থানে পৌঁছতে পারেনি। গত বছর বাংলাদেশ ব্যাংক আলাদাভাবে গ্রিন ব্যাংকিং কার্যক্রম তদারকি এবং যথাযথভাবে পরিচালনার জন্য গ্রিন ব্যাংকিং অ্যান্ড সিএসআর বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছে। আধুনিক উন্নত বিশ্বের ব্যাংকগুলো তাদের অর্থায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ ঝুঁকিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে। আমাদের দেশেও এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে এটি আশার কথা নিঃসন্দেহে। আরও আগে আমাদের এখানে যেভাবে গ্রিন ব্যাংকিং কার্যক্রম চলে আসছিল সাম্প্রতিক সময়ে তা আরও জোরদার হয়েছে এটা মানতেই হবে। দেশের ব্যাংকিং অঙ্গনে গ্রিন ব্যাংকিংয়ের ব্যাপারে এক ধরনের উদ্দীপনা ভাব লক্ষ্য করা গেলে এ বিষয়ে আরও সচেতন সুদৃঢ় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গ্রিন ইকোনমির মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে- পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর শিল্প ও ব্যবসায় ঋণ প্রদান কমানো অথবা একেবারেই ঋণ প্রদান না করা, মোট ঋণের একটি নির্দিষ্ট অংশ বা অধিকাংশ পরিবেশবান্ধব শিল্প ও ব্যবসায় বিনিয়োগ করা, পরিবেশবান্ধব পণ্য উদ্ভাবন এবং উদ্ভাবিত পণ্য উৎপাদন প্রকল্পে অর্থায়ন, গ্রিন ফাইন্যান্সের আওতায় পরিবেশগত অবকাঠামোসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব খাতে অর্থায়ন। যেমন- নবায়নযোগ্য জ¦ালানি প্রকল্প, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্প, দূষিত পানি বিশুদ্ধকরণ প্রকল্প, বায়োগ্যাস প্রকল্প, জৈবসার প্রকল্প, বনায়ন প্রভৃতি। পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর প্রকল্পে অর্থায়ন বা অন্য কোনোরূপ সংশ্লিষ্টতা এড়িয়ে পরিবেশ সুরক্ষায় অবদান রাখার ব্যাপারে সব মহলকে তৎপর হওয়াই গ্রিন ইকনোমির মূল প্রতিপাদ্য বিবেচনা করতে হবে। সবুজ অর্থনীতি বিকাশের লক্ষ্যে পরিবেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন সংবেদনশীল সেক্টর ও অন্যান্য প্রকল্পে আলাদা নীতিমালা ও কৌশলপত্র প্রণয়ন করতে হবে। এ প্রসঙ্গে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প ও ব্যবস্থা (পোল্ট্রি ও ডেইরি), কৃষি খামার, ট্যানারি, মৎস্য চাষ, চিনি শিল্প ও হাউজিং, রাবার বাগান ও শিল্পে ঋণ প্রদানের লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর বিশেষ কর্মপন্থা প্রণয়নের কথা বলা যায়। আর্থিক ক্ষেত্রে গ্রিন ব্যাংকিং ধারণার বিকাশ সময়ের দাবি হয়ে উঠেছিল। বর্তমানে যা দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। টেকসই অর্থনীতির জন্য গ্রিন ব্যাংকিং ধারণার অনুসারী হয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গৃহীত হচ্ছে। যার চমৎকার ফলাফল ক্রমেই অর্থনীতিতে সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। একইভাবে গার্মেন্টশিল্পে গ্রিন ফ্যাক্টরি ধারণার পরিপূর্ণ বিকাশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নেবে- আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। গ্রিন ফ্যাক্টরি কার্যক্রমকে বিশেষ প্রণোদনা প্রদানের ব্যাপারে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে এ ক্ষেত্রে চমৎকার গতির সঞ্চার হবে আশা করা যায়।
সমকালীন অর্থনীতি বিশারদরা পরিবেশগত ঝুঁকি যথাসম্ভব হ্রাস করে মানুষের জন্য উন্নত জীবনযাপন নিশ্চিত করতে নতুন উন্নয়ন মডেল হিসেবে গ্রিন ইকোনমির উদ্ভাবন করেছেন। নতুন ধারার এই অর্থনীতির প্রসারের ফলে অপেক্ষাকৃত উন্নত পণ্য ও সেবা লাভ অনেকটা নিশ্চিত হয়েছে। পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক কর্মকা- ব্যক্তি, পরিবার, বিভিন্ন শ্রেণি, পেশা, প্রতিষ্ঠান সামগ্রিকভাবে গোটা দেশের জন্য শুভ ও অনুকূল ফলাফল বয়ে আনবে বলে আশাবাদী সবাই। এর মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়াও জোরালো হয়ে উঠতে পারে। সবুজ অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের সহায়ক উপাদান হিসেবে ইতিমধ্যেই বিবেচিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিশেষ কোনো শ্রেণি বা পেশার মানুষের স্বার্থ নয়, বরং গোটা সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণ সাধিত হয়। বিশেষ করে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি, অবহেলিত দুর্যোগপূর্ণ জনপদের উন্নয়ন, কৃষিক্ষেত্রে ভর্তুকি প্রদান, প্রাকৃতিক সম্পদের পরিপূর্ণ ব্যবহার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম, সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প প্রতিষ্ঠা ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রিন ইকোনমির কর্মকা- ইতোমধ্যে আমাদের জনজীবনে অনুকূল প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। প্রত্যেক মানুষই উন্নত আরামদায়ক জীবনের স্বপ্ন দেখে। বিশ্বের সব দেশেই সাধারণ মৌলিক চাহিদাগুলো প্রায় একই রকম। বাঁচার জন্য খাদ্য, বস্ত্র, আশ্রয় চায় সব মানুষই। তবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষের আয় স্তর বিভিন্ন হওয়ায় মৌলিক চাহিদার মান কিছুটা ভিন্ন হতে পারে। বিভিন্ন দেশ ও সমাজ ভেদে ফ্যাশন, প্রযুক্তি এবং লাইফস্টাইলে বৈচিত্র্যের প্রকাশ থাকে বটে। তবে সব দেশে সব সমাজেই সুন্দর সুস্থ পরিবেশে বাঁচার আকাক্সক্ষা সব সময়েই প্রবল। আর সেই পরিবেশবান্ধব অর্থনৈতিক কর্মকান্ড, ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প উন্নয়নকে কেন্দ্র করেই সবুজ অর্থনীতি এখন দেশে দেশে জনপ্রিয় ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে ক্রমেই আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে। মাথাপিছু আয় বাড়ছে, গড় আয়ু বাড়ছে। জীবনমানেরও উন্নতি হচ্ছে দিনে দিনে। নতুন সময়ের প্রেক্ষাপটে সবুজ অর্থনীতির কার্যকারিতা ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। সমাজের সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ সবুজ অর্থনীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আর এটা সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সবুজ অর্থনীতি বা গ্রিন ইকোনমি শক্তিশালী ইঞ্জিন হিসেবে কাজ করতে পারে।
নানা প্রতিকূলতা অতিক্রম করে পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পে বিনিয়োগ বাড়ছে। টেকসই ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য করোনা মহামারির মধ্যেও পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে ব্যাংকগুলো। এই সবুজ বিনিয়োগ এখন শুধু তৈরি পোশাক খাতে সীমাবদ্ধ নেই। তৈরি পোশাক খাতের বাইরে পস্নাস্টিক, হালকা প্রকৌশল খাতেও সবুজ বিনিয়োগ বাড়ছে। এ খাতে বর্তমানে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। তবে সবুজ শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আগ্রহ এখনো অনেক কম। ২০১১ সালে বাংলাদেশ গ্রিন ব্যাংকিং নীতিমালা করলেও তা এখনো জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি ব্যাংকগুলোর কাছে। এ খাতে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগে আরও বেশি অগ্রণী ভূমিকা রাখা উচিত। কেননা এখন বিশ্বব্যাপীই তুলনামূলক কম কার্বন নিঃসরণ করে পরিবেশকে রক্ষা করে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাই পৃথিবীবাসীর জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ। দিন যত যাচ্ছে পৃথিবীতে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য পরিবেশটা ততই চ্যালেঞ্জিং হচ্ছে। এটার জন্য মানুষই দায়ী। আমরা আমাদের পরিবেশকে নষ্ট করে ফেলছি। শিল্পায়নের ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতি মানছি না। তাই আমাদের পরিবেশ আমাদেরই রক্ষা করতে হবে। একজন উদ্যোক্তা শিল্প-কারখানা করছেন। কিন্তু এটাতে মানুষ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তা ভাবছেন না। যারা সেখানে কাজ করবেন, তাদের কাজের সুন্দর পরিবেশের কথাও ভাবছেন না। অপরিকল্পিত শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার ফলে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে, যার ফলে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। জীবনকে করে তুলছে অতিষ্ঠ। তাই নিজেদের বাঁচাতে, পরিবেশকে বাঁচাতে সবুজ কারখানা গড়ে তোলার পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন করতে গেলে সবুজ শিল্পায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শুধু ব্যবসায়িক দিক দেখলেই হবে না। পরিবেশের কথাও ভাবতে হবে। তবে এ খাতে সরকারের নীতিগত সহায়তা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এ ছাড়া তৈরি পোশাকশিল্পের বাইরেও যে গ্রিন ফ্যাক্টরি রয়েছে, সেগুলোর দিকেও বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। সবুজশিল্পের প্রসার ছাড়া পরিবেশ রক্ষা করা কঠিন। এজন্য সারা বিশ্বই এখন গ্রিন ইনভেস্টমেন্ট ও সাসটেইনেবল বিজনেসের দিকে ঝুঁকছে। আমাদেরও সময় এসেছে গ্রিন ব্যাংকিংকে গুরুত্ব দেওয়ার। অন্যথায় অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবী মানুষের জন্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে।
রেজাউল করিম খোকন : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার, কলাম লেখক