ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শিবলী নোমানীর পিতা আলহাজ¦ মাওলানা আবদুল মুবিন (৯৭) বার্ধক্য জনিত কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মরহুমের মেঝ ছেলে মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের আখচাষী কল্যাণ সমিতির সাধারন সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদুর রহমান মন্টু জানান, গত এক সপ্তাহ আগে আমার আব্বা অসূস্থ্য হলে যশোর ২৫০ হাসপাতালের করোনারী ইউনিটে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে আইসিইউতে প্রেরন করেন। গত তিনদিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে তিনি মারা যান।
মরহুম আলহাজ¦ মাওলানা আবদুল মুবিন ছিলেন নিভৃতচারী দ্বীন শিক্ষার এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ও জ্ঞানসাধক। ধর্মীয় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়াই ছিলো তার জীবনের অন্যতম লক্ষ্য। তিনি ৫০ এর দশকের শেষের দিকে কুমিল্লা থেকে কালীগঞ্জে এসে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন। এবং এ অঞ্চলে মুসলমানদের ধর্মীয় শিক্ষার প্রসারে নিজেকে অত্মনিয়োগ করেন। তার নিজহাতে প্রতিষ্ঠিত দুইটি দ্বীনি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান উল্লেখযোগ্য। একটি শোয়াইব নগর কামিল মাদরাসা অপরটি আড়পাড়া এতিমখানা। তিনি ১৯৫৭ সালে শিবনগর ফোরকানিয়া মাদরাসা স্থাপন করেন। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৬২ সালে তা দাখিল ও ১৯৬৭ সালে আলিম হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এরপর ১৯৬৭ প্রতিষ্ঠানটি শিবনগর হতে আড়পাড়ায় জংলী শাহ পীরের দরগায় স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৭৭ সালে তিনি জংলী শাহ কারিগরি এতিমখানা স্থাপন করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন জায়গায় মসজিদ ভিত্তিক মকতব চালু করেন। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বই পড়ে এবং ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে সময় পার করেছেন। তিনিই কালীগঞ্জের সবচেয়ে প্রবীণ আলেম।
আলহাজ¦ মাওলানা আবদুল মুবিন শোয়াইবনগর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপার ও কালীগঞ্জ উপজেলা হাজী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য। তিনি সারাজীবন বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, চার পূত্র, চার কন্যাসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার বড় ছেলে ফৈরদাউস অনেক আগেই ডিভি লটারি পেয়ে আমেরিকায় স্থায়ী ভাবে বসবাস করছেন। শুক্রবার বাদ জুম্মা আড়পাড়া দরগাহতে তার জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।