মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহীর পুলিশ সদস্যদের বীরত্বগাঁথা স্থায়ীভাবে ধরে রাখতে খুব শীঘ্রই পুলিশ লাইন্স গণকবরের পাশে একটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি যাদুঘর স্থাপন করা হবে। এছাড়াও মহান মুক্তিযুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা নিয়ে একটি বই প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক। শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে আরএমপির পুলিশ লাইন্স কনফারেন্স রুমে আয়োজিত মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী রাজশাহী অঞ্চলের বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ৩৯ জন পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এবং ৫ জন শহীদ পুলিশ বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যকে সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরএমপি কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাঁদের সম্মান জানাতে পেরে আমরা অত্যন্ত গর্বিত। জীবন বাজি রেখে তাঁরা যুদ্ধ করেছেন বলেই আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি।
তিনি বলেন, রাজশাহী পুলিশ লাইন্সে মহান মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাজশাহী'র পুলিশ সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। যে কারণেই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ হতে ২৭ মার্চ তিন দিন রাজশাহী পুলিশ লাইন্স হতে আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। সেই যুদ্ধে একসাথে ১৮ জন পুলিশ সদস্য পাক হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এছাড়াও পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দুই জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ধরে নিয়ে যায় পাক হানাদার বাহিনী। তারাও শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের শহীদ হওয়ার ঘটনা রাজশাহীতেই ঘটেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বীর পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা উপহার এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে অনেকেই এই মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতার সংগ্রামের প্রত্যক্ষ ঘটনাবলী স্মৃতিচারণ করেন। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্য এবং শহীদ পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন) মো. সুজায়েত ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এ- অপারেশন) মো. মজিদ আলী বিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মো. রশীদুল হাসান পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) মো. সাজিদ হোসেনসহ আরএমপির ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।