দৃষ্টিনন্দন হচ্ছে রাজশাহী পদ্মাতীরে অবস্থিত হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (র:) দরগা শরীফ। রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) কর্তৃক প্রকল্পটির বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ৮৭ লাখ ২৭ হাজার টাকা। ইতিমধ্যেই সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.এ মান্নান প্রকল্পটির অনুমোদন দিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিশ্চিত করেছেন রাসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু।
মিশু বলেন, ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে জড়িত প্রায় হাজার বছর পূর্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ছুটে আসেন হযরত শাহ মখদুম রূপোশ (র:)। ইতিহাসের সাক্ষী হাজার বছরের পুরোনো এই দরগাহটি পরিদর্শনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ ছুটে আসেন। যেটি দৃষ্টিনন্দন করতে রাসিক মেয়রের পক্ষ থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে সুপারিশ করা হয়েছিল। যার প্রেক্ষিতে ঐতিহ্যবাহী এই দরগাহ শরীফের পুরো এলাকাটি সংস্কারের জন্য অনুমোদন হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে রাজশাহীর পদ্মপাড়ে অবস্থিত এই দরগা শরীফটি আরো আকর্ষনীয় ও দৃষ্টি নন্দিত হবে। ফলে পদ্মাপাড়ে প্রতিদিন যেভাবে পর্যটক ও দর্শনার্থীদের ভীড় জমে এই দরগা শরীফটির কাজ সম্পন্ন হলে পর্যটকদের আগমন আরো বেশী হবে।
প্রকল্পটির অনুমোদন হওয়ায় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি রাসিক মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন উল্লেখ করে জনসংযোগ কর্মকর্তা মোস্তাফিজ মিশু বলেন, শাহ মখদুম রূপোশ (র.) দরগাহ শরীফের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মসজিদ ও মাজার কমপ্লেক্স নির্মাণে স্থাপত্য নক্সা ও প্রকৌশল নক্সা প্রণয়ন ও নির্মাণ তদারকিতে পরামর্শক নিয়োগ, ৪ তলা মাজার কমপ্লেক্স-এর প্রশাসনিক ভবন নির্মাণ, ৪ তলা মিনারসহ মসজিদ নির্মাণ, মাজার নির্মাণ, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, প্রবেশ গেইট নির্মাণ ও ল্যান্ড স্কেপিং করা হবে।
বিভিন্ন সূত্র অনুসারে, রাজশাহী মহানগরীর নাম ছিল মহাকাল গড়। ওই সময় এই অঞ্চলে মানুষ বলী দেয়ার প্রথা প্রচলিত ছিল। এখানকার এই মহাকাল দেও এর বিখ্যাত মন্দিরে নরবলি দেয়া হতো। এর প্রেক্ষিতে হযরত শাহ্ মখদুম রূপোশ (রহ.) বাংলায় দেও জাতিকে ইসলামের সুমহান আদর্শে দিক্ষীত করার উদ্দেশ্যে ১২৮৯ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী অঞ্চলে আগমন করেন। তৎকালীন রাজার সাথে যুদ্ধজয়ের পর ১৩২৬ খ্রিষ্টাব্দে রাজশাহী মহানগরী বা সেকালের মহাকালগড়ে তিনি স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এরপর ১৩৩১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুর স্বাধ গ্রহণ করে পর্দা নেন। তবে তাঁর মৃত্যুর পরও দরগা শরীফকে কেন্দ্র করে ইসলাম প্রচারের কাজ চলতে থাকে।