নির্মিত হলো নতুন নাটক ‘তোমার প্রতীক্ষায়’। সাগর আহমেদের রচনায় নাটকটি পরিচালনা করেছেন সাকিল সৈকত। রোমান্টিক-ট্র্যাজেডি গল্পে নির্মিত নাটকটিতে অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ, আয়েশা খান, হানিফ পালোয়ান প্রমুখ। পরিচালক জানান, রাজধানীর উত্তরা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রমনা পার্কসহ বিভিন্ন লোকেশনে নাটকটির শুটিং হয়েছে। শিগগির একটি বেসরকারি টেলিভিশনে নাটকটি প্রচার হবে। নাটকটি প্রযোজনায় মাইজদীটেইনমেন্ট, বং জেনেসিস। এর গল্পে দেখা যাবে, রূপম দেশের একজন স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী। তার ভীষণ মন খারাপ। সে তার গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে। পাশের সিটে তার গিটারটা। অবশেষে গাড়িটা লেকের পাশে গিয়ে থামে। রূপম ওর গিটারটা নিয়ে গাড়ি থেকে বেরিয়ে লেকের পাশে গিয়ে বসে। পানির দিকে তাকায়। গিটারে সুরের মৃদু মূর্ছনা তোলে। ওর চোখ বন্ধ হয়ে আসে, কণ্ঠে শোনা যায় গান আর ওর মন চলে যায় স্মৃতির রাজ্যে। এক বছর আগের কথা। রাস্তায় সিগনালে দাঁড়িয়ে রূপমের গাড়ি। সেদিন ওর ড্রাইভার গাড়িটা চালাচ্ছিল। আর রূপম ছিল পেছনের সিটে বসা। হঠাৎ গাড়ির জানালার কাঁচে একটা শব্দ শুনে সে তাকায়। নোটবুক হাতে সুন্দরী একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রূপম কাঁচ নামাতেই মেয়েটা খুবই এক্সাইটেড হয়ে জানায় যে সে রূপমের গানের ভীষণ ফ্যান; তার একটা অটোগ্রাফ চাই। সে রূপমের কোনো উত্তরের অপেক্ষা না করেই হাতের নোটবই আর কলমটা রূপমের হাতে দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। রূপম মেয়েটার নাম জানতে চায়। মেয়েটা হাসি দিয়ে ওর নাম বলে, ঈশিতা। রূপম আটোগ্রাফ দিতে যাবে এমন সময় সবুজ বাতি জ্বলে ওঠে। ড্রাইভার গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যায়। মেয়েটা কিছু দূর দৌঁড়ে এগিয়ে আসে। রূপমও কিংকর্তব্যবিমূঢ়। কিন্তু গাড়ি ততক্ষণে অনেক দূর। রূপম ড্রাইভারকে কড়া কথা বলে। যাহোক রাস্তার জ্যাম ঠেলে প্রায় দশ মিনিটের মাথায় রূপম তার গাড়ি ইউ-টার্ন করিয়ে আবার সেই জায়গায় এসে হাজির হয়। গাড়ি থেকে নেমে মেয়েটাকে অনেক খোঁজে। কিন্তু মেয়েটাকে আর পাওয়া যায় না। পরদিন একটা শপিং মলের ভিতর ঈশিতাকে দেখে রূপম গাড়িতে রাখা ঈশিতার নোট বুকটা নিয়ে আসতে যায়। কিন্তু ফিরে এসে রূপম ঈশিতাকে আর খুঁজে পায় না। তার পরদিন রেস্টুরেন্টেও একই রকম ঘটনা ঘটে। অবশেষে কাকতালীয়ভাবে রূপম তার এক বন্ধুর কাছ থেকে ঈশিতার ফোন নম্বর যোগাড় করে ঈশিতাকে ফোন দেয়। ঈশিতা বিশ্বাসই করতে পারে না যে দেশের এরকম একজন বিখ্যাত গায়ক তাকে ফোন দিয়েছে। ঈশিতা তাই ভীষণ আনন্দিত। অবশেষে রূপম ঈশিতার সাথে দেখা করে তার নোট বুক ফেরত দিয়ে বাড়ি ফিরে আসে। কিন্তু রাতে রূপমের বার বার ঈশিতার কথা মনে পড়ে। রূপম বুঝতে পারে সে মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেছে। অবশেষে একদিন রূপম ঈশিতাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ঈশিতা রূপমকে বোঝায় যে, কারো গান ভালো লাগা মানেই তার সাথে প্রেম করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। তাছাড়া ঈশিতা বাবা-মায়ের অমতে কিছু করতে চায় না। তাছাড়া সে মফস্বলে বাবা-মাকে রেখে ঢাকায় খালার বাসায় থেকে পড়াশুনা করে। তাই তাকে নিয়ে কোনো ঝামেলা হোক তা সে চায় না। ঈশিতা রূপমকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। রূপমও হাল ছাড়ার পাত্র নয়। অবশেষে একদিন রাতে রূপম ঈশিতার বাসার সামনে সারা রাত দাঁড়িয়ে রইলো। এতে ঈশিতার মন নরম হয়। সেও রূপমকে ভালবাসে। রূপম আর ঈশিতা দুজনে খুব ভালই ছিল। তারা বিয়ে করবে, সংসার করবে আরো কত স্বপ্নের মধ্য দিয়ে কেটে যাচ্ছিলো তাদের দিন। একদিন ঈশিতাকে ওর বাড়ি বরিশাল যাওয়ার প্রয়োজন পড়লো। রূপমও সাথে যেতে চাইছিলো কিন্তু একটা কনসার্টের শিডিউল থাকায় ও আর সাথে যেতে পারলো না। তবুও রূপম ওর গাড়িতে করে ঈশিতাকে লঞ্চে তুলে দিয়ে বাসায় ফিরে টিভি ছেড়ে দিয়ে কনসার্টে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলো। হঠাৎ টিভি নিউজে দেখতে পায় বরিশালগামী লঞ্চ হিমালয়-৬ চাঁদপুরের কাছে মেঘনা নদীতে প্রায় দেড়শতাধিক যাত্রী নিয়ে মর্মান্তিক এক দূর্ঘটনার শিকার হয়ে ডুবে গেছে। এই লঞ্চেই ঈশিতা ছিল। সে কি বেঁচে আছে? জানা যাবে নাটকে। ‘তোমার প্রতীক্ষায়’ নাটকে টাইটেল গানসহ দুটি গান রয়েছে। গান দুটি লিখেছেন সাগর শরীফুজ্জামান। সুর করেছেন আব্রাহাম তামিম। মিউজিক কম্পোজ করেছেন বেলাল মাহমুদ। গেয়েছেন শুভ্র সরকার।