জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে ভূয়া চিকিৎসকের ছড়াছড়ি। গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো ওইসব ভূয়া চিকিৎসকদের কাছে গিয়ে প্রতিনিয়ত হচ্ছেন প্রতারিত। ভেজাল ওষুধ বিক্রি ও টেষ্ট বাণিজ্যের রমরমা ব্যবসার কাছে একপ্রকার জিম্মি হয়ে পরেছেন গ্রামের মানুষগুলো।
অনতিবিলম্বে ওইসব প্রতারকদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা। সূত্রমতে, একজন অনুমোদিত ও দক্ষ চিকিৎসক দ্বারা রোগীদের জন্য ব্যবস্থাপত্র লেখার নিয়ম থাকলেও বাজার কমিটি ও কতিপয় ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের যোগসাজসে এনজিও কর্মীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে প্রতারনার বিস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভূক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে জেলার গৌরনদী উপজেলার বাকাই বাজার ঘোষেরহাটে গিয়ে জানা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে কুমিল্লা জেলা থেকে আসা কথিত চিকিৎসক ডাঃ সুশান্ত আর্শ্চায্য স্থানীয় বাজার কমিটির কতিপয় নেতৃবৃন্দ ও কয়েকটি ওষুধ কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধিদের যোগসাজসে ওই এলাকার সাধারণ রোগীদের সাথে প্রতারনা করে আসছেন। রোগীদের ব্যবস্থাপত্র, টেস্ট বাণিজ্য ও ওষুধ বিক্রির নামে কথিত ওই চিকিৎসক প্রতিদিন হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা।
অসংখ্য ভূক্তভোগীরা জানিয়েছেন, কথিত ওই চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ সেবনে একাধিক রোগীরা অসুস্থ হয়ে পরেছেন। পরবর্তীতে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারী হাসপাতালে নিতে হয়েছেন। কথিত চিকিৎসকের প্রতারনার শিকার ভূক্তভোগীরা অনতিবিলম্বে ওই কথিত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সূত্রমতে, শনিবার বিকেলে স্থানীয় চারটি বেসরকারী ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা কথিত চিকিৎসকের অপচিকিৎসার কথা জানতে পেরে সংবাদ সংগ্রহের জন্য ঘটনাস্থলে যান। এ সময় বাজার কমিটির কতিপয় নেতৃবৃন্দর মদদে সংবাদকর্মীদের প্রায় দুইঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পরবর্তীতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট আরিফুল ইসলাম প্রিন্স থানা পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পূর্বেই বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ দত্তের নেতৃত্বে কথিত চিকিৎসককে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়।
অবরুদ্ধ সংবাদকর্মীরা জানান, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কথিত চিকিৎসক সুশান্ত আর্শ্চায্য তার নিজ এলাকায় একজন এনজিও কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেখান থেকে প্যারা মেডিকেলের কোর্স করেই নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক পরিচয় দেয়। দীর্ঘদিন পূর্বে তিনি (সুশান্ত) ঘোষেরহাট বাজার কমিটির কতিপয় নেতৃবৃন্দর যোগসাজসে একটি ফার্মেসী প্রতিষ্ঠা করে চিকিৎসার নামে রমরমা প্রতারনার ব্যবসা শুরু করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সংবাদকর্মীদের কাছে খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম প্রিন্সকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিলো। তবে তিনি (ম্যাজিস্ট্রেট) ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পূর্বেই কথিত ওই চিকিৎসক আত্মগোপন করেছেন। ইউএনও আরও বলেন, অভিযুক্ত সুশান্ত আর্শ্চায্য ও তার আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।