নিজ বাসভূমি ছেড়ে কেউ সহজে বিদেশ বিভূঁইয়ে পড়ে থাকতে চায় না। একদিকে ভোগবিলাস ও প্রাচুর্যের হাতছানি, অন্যদিকে জীবনের রূঢ় কঠিন বাস্তবতা। এরইমধ্যে কিছু মানুষ জীবন বাজি রেখে বেঁচে থাকার উপায় খোঁজেন। অভাব-অনটন বেশি থাকা এবং আয়-উপার্জনের সুযোগ কম থাকায় প্রতিবছর বহু বাংলাদেশি বিদেশে পাড়ি জমায়। আবার একটি চক্র দীর্ঘদিন থেকেই বিদেশে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণাও করে আসছে।প্রতারণার ফাঁদ পেতে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এই প্রতারণা বহুকাল ধরে এ দেশে চলছে। মিথ্যা বিজ্ঞাপন প্রচারের দ্বারা অসংখ্য মানুষকে সর্বস্বান্ত করা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ বিপদে পড়ছে। মিথ্যা বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হয়ে অসংখ্য মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। প্রতারকরা এটি করতে পারছে আইনি ত্রুটির কারণে।
সম্প্রতি আকর্ষণীয় বেতনে চাকরির লোভ দেখিয়ে অর্ধশতাধিক গার্মেন্টসকর্মীর কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এক ব্যক্তি। বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের একটি প্যাডে জর্দানে আকর্ষণীয় বেতনে গার্মেন্টকর্মী নিয়োগের একটি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সেই বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে শ্রীপুর এলাকায় চাকরিরত অর্ধশত গার্মেন্টকর্মীর কাছ থেকে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেন এক প্রতারক। এখন সেই প্রতারকের কাছে টাকা ফেরত চাইলে ভুক্তভোগীদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। টাকা উদ্ধারের জন্য ছয় মাস ধরে অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। অবশেষে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে সুবিচারের আশায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সরকারের যথাযথ নিয়ন্ত্রণ ও সচেতনতামূলক অভিযান না থাকায় বেশি মুনাফার লোভে প্রতারকদের ফাঁদে পা দিচ্ছেন মানুষ। প্রতারণার কবল থেকে সাধারণ মানুষকে বিরত রাখতে প্রয়োজনে সারা দেশে ফিন্যানশিয়াল লিটারেসি ক্যাম্পেইন জোরদার করার পরামর্শ অনেক আগেই দিয়েছিলেন অর্থনীতিবিদসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এটি স্পষ্ট যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। তাই এ ধরনের কর্মকা-ে যাদের সম্পৃক্ততা আছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠিন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এটাই কাম্য।