রাজধানীসহ আশপাশের এলাকায় কিউলেক্স মশার উপদ্রব শুরু হয়েছে। কোনো কোনো এলাকায় মশার উপদ্রব এতটাই বেড়েছে যে, সেসব এলাকায় মশক নিধন কর্মীরা আদৌ কোনো দায়িত্ব পালন করছেন কি না, এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সাধারণত লক্ষ করা যায়, মশার উপদ্রব বাড়লে সিটি করপোরেশনের তোড়জোড়ও বাড়ে। কিন্তু এখন সেটাও লক্ষ করা যাচ্ছে না। বস্তুত মশক নিধনের কাজটি বছরজুড়ে করা না হলে এর সুফল পাওয়া যায় না। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার বক্সকালভার্ট ও কাভার্ড ড্রেন রয়েছে, যেগুলোয় প্রচলিত পদ্ধতিতে মশার ওষুধ ছিটানো যায় না। পাশাপাশি প্লাস্টিক সামগ্রী, পলিথিন, ডাবের খোসাসহ বিভিন্ন আবর্জনায় রাজধানীর ড্রেনগুলো ভরাট থাকে; এতে পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি হয়। এই জমাটবদ্ধ পানিতে কিউলেক্স বংশবিস্তার করছে। মশার এসব প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে কর্তৃপক্ষের জোরাল পদক্ষেপ কাম্য। মশক নিধনে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। তারপরও নগরবাসীকে মশার উপদ্রব সহ্য করতে হচ্ছে কেন-এ প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। বস্তুত বাসাবাড়ি, অফিস, বাজার, উন্মুক্ত স্থান, সড়ক, খেলার মাঠ-সর্বত্রই মশার উপদ্রব বেড়েছে। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জোর কার্যক্রম চালানো হচ্ছে দাবি করা হলেও ভুক্তভোগীরা বলছেন, সিটি করপোরেশনের কাজ শুধুই লোক দেখানো। প্রধান সড়কের পাশে ওষুধ স্প্রে করা হলেও ভেতরের গলিতে মশক নিধন কর্মীদের খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না। এ-সংক্রান্ত আরেকটি অভিযোগ হলো, অভিজাত এলাকাকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়, অন্য এলাকাকে সেভাবে দেওয়া হয় না। মশা এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় যাতায়াত করতে পারে। এটি বিবেচনায় রেখে রাজধানীসসহ আশপাশের এলাকায়ও বছরব্যাপী মশক নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। মশা যেহেতু বিভিন্ন জটিল রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুর বাহক হিসাবে কাজ করে, সেহেতু মশক নিধন কার্যক্রমে কোনোরকম শৈথিল্য প্রদর্শন কাম্য নয়। এ ব্যাপারে নগরবাসীরও দায়িত্ব রয়েছে। বাসাবাড়ি ও এর আশপাশ এলাকা সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। বস্তুত মানুষ সচেতন না হলে কেবল সিটি করপোরেশন গৃহীত কার্যক্রমে কাক্সিক্ষত সুফল মিলবে না।