প্রতিবছর বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অনিয়ম-দুর্নীতি ও দীর্ঘসূত্রতা প্রতিরোধে (স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি) উল্লেখযোগ্য সুপারিশ রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সরকারের কাছে পেশ করে থাকেদুর্নীতি দমন কমিশন -দুদক। করোনার কারণে এবার দুই বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন একসঙ্গে তৈরি করা হয়েছে। আজ রোববার দুদকের ‘বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২০ ও ২০২১’ রাষ্ট্রপতির কাছে উপস্থাপন করা হবে। দুদক মনে করছে, দেশে দুর্নীতি দমনে সমন্বিত উদ্যোগের কোনো বিকল্প নেই। আর এই সমন্বিত উদ্যোগকে শক্তিশালী করতে সরকারের প্রতিটি দপ্তর বা সংস্থার নিজ নিজ দায়িত্ব রয়েছে। কারণ, সরকারি সংস্থাগুলোই সর্বাধিক রাষ্ট্রীয় সেবা দিয়ে থাকে। প্রতিবছরের মতো এবারও তাই দুদক সরকারের চারটি দপ্তরে দুর্নীতির ৩২টি উৎস খুঁজে বের করেছে এবং দুর্নীতি নির্মূলে ৩৯টি সুপারিশ করেছে। সংস্থাগুলো হলো-ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ, সাবরেজিস্ট্রি অফিস এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। দুদক মনে করছে, চার দপ্তরের দুর্নীতি দমনে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নযোগ্য এবং এসব বাস্তবায়িত হলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে সরকারি পরিষেবা প্রদানে ঘুস, দুর্নীতি, হয়রানি, দীর্ঘসূত্রতা হ্রাস পাবে। বলতেই হবে, দুর্নীতি দমনে দুদক যে কর্মপদ্ধতি গ্রহণ করেছে, তা প্রশংসার যোগ্য। দুর্নীতি দমন করতে হলে এর উৎসগুলো সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা চাই। দুদক যেহেতু এবার চারটি দপ্তরে দুর্নীতির ৩২টি উৎস খুঁজে পেয়েছে, আমরা মনে করি এসব উৎস ধরে ধরে দুর্নীতি শনাক্ত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারলে দুর্নীতি দমন সহজ হয়ে উঠবে। তবে সবচেয়ে বড় কথা দুদকের সুপারিশগুলোর বাস্তবায়ন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান যথার্থই বলেছেন, দুর্নীতি প্রতিরোধে শুধু সুপারিশ করলেই হবে না, সেগুলোর বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা মনিটর করতে হবে। খুব সহজ কথা, দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব এককভাবে দুদকের ওপর ছেড়ে দিলে চলবে না। দুর্নীতি সংঘটিত হচ্ছে যেসব দপ্তরে, সেগুলোর কর্তৃপক্ষ যদি দুদকের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন না করে, তাহলে দুর্নীতির প্রসার রোধ করা সম্ভব হবে না। দুদকের ৩৯টি সুপারিশের প্রতিটিই সফলভাবে বাস্তবায়ন করাই মূল কথা। আমরা আশা করি সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক হবে।