চলতি বছর শেরপুরে গমের বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা। গম লাভজনক ফসল হওয়ায় ধানের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে এ ফসল উৎপাদন করতে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা। শেরপুরে ধানের পাশাপাশি প্রতিবছর বাড়ছে গম চাষ। উৎপাদন ও খাদ্যের দিক দিয়ে দানা ফসল হিসেবে গমের অবস্থান দ্বিতীয়। অর্থাৎ ধানের পরই গমের অবস্থান। কম খরচে বেশী লাভ হওয়ায় গম চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গম চাষে কৃষকদের উদ্বুুদ্ধ করতে প্রণোদনা হিসেবে জেলার প্রায় আড়াই হাজার কৃষককে বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। এদিকে, আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় গমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনায় চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে। তাছাড়া গমের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে আলু চাষ করায় কৃষকরা দ্বিগুন লাভের আশা করছেন। বাণিজ্যিকভাবে গম উৎপাদনে মাঠ পর্যায়ে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। চলতি বছর জেলায় ১ হাজার ৪শ ৮২ একর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন।
সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের কৃষক হাতেম আলী জানান, ধানের চেয়ে গম লাভজনক। তাছাড়া গম কেটে পাট চাষ করতে পারব। এবার ৩ বিঘা জমিতে গমচাষ করেছি। বিঘাপ্রতি খরচ হয়েছে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। এবার প্রতি বিঘায় ১৮ থেকে ২০ মণ গম উৎপাদন হবে। এবার গমের দানা খুব ভালো এসেছে। আবহাওয়া শেষ পর্যন্ত গমের অনুকূলে এবং বাজারদর ভালো থাকলে গতবারের মতো এবারও ভালো দাম পাবো।
কৃষক আজাহার আলী জানান, এ বছর বাজারে গমের দাম আশানুরূপ হওয়ায় বাম্পার ফলনে তারা লাভের আশা করছেন। এ ছাড়া কৃষি প্রণোদনার আওতায় কৃষি বিভাগের কাছ থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়েছেন, এটা তাদের জন্য বাড়তি জোগান। আরেক কৃষক হাসেম আলী জানান, এ বছর তিনি ১১২ শতাংশ জমিতে গম চাষ করেছেন। এতে খরচ হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। অবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তার ১১২ শতাংশ জমিতে ২৫-২৬ মণ গম উৎপাদন হবে এবং ২৮-৩০ হাজার টাকার গম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা তার।
এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহিত কুমার দে বলেন, ‘রবি ফসলের মধ্যে গম একটি লাভজনক আবাদ। এ কারণে জেলার কৃষকেরা গম চাষে ঝুঁকেছেন। এপ্রিলের শুরুতে কৃষকরা গম কাটা শুরু করতে পারবেন। এবার বাম্পার ফলনের আশা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘গম চাষে আগ্রহী করতে তালিকাভুক্ত চাষিদের ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চফলনশীল উন্নত জাতের বারি-৩৩ গম বীজ ও সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ এবং সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’