রোজাদার পথচারীদের জন্য রমজানের শুরু থেকেই চলছে বিনামূল্যে ইফতারী বিতরণ কার্যক্রম। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের উদ্যোগে বিগত বছর গুলোর ন্যায় এবছরও পুরো মাস জুড়ে চলবে এ কার্যক্রম। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৫ টা থেকে বিতরণ কার্যক্রম শরু হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সম্মুখে মুজিব সড়কে ইফতারী বিতরণ করা হয়। প্রতিদিন এ বিতরণ কার্যক্রম তদারকি করেন একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। বিতরণকৃত ইফতারী সামগ্রীর মধ্যে ছোলা-মুড়ি, খেজুর, বেগুনি, পেয়াজু, জিলাপী, কলা, মিনারেল ওয়াটার প্রভৃতি। প্রতিদিন কমপক্ষে শতাধিক পথচারীকে ইফতারী প্রদান করা হয়ে থাকে।
বিকেল পৌনে ৬ টায় ইফতারী পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন নোয়াই মাতুব্বর। তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ, ডাক্তার দেখাইতে আইছিলাম। এহন বাড়ি যাইতেছি। আমি রোজা আছি। ইফতার নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। ভাবছিলাম কোন দোকান থেকে একটু পানি খাইয়া নিবানি। কিন্তুক এহন আল্লা মিলায় দিছে। ডিসি সাবের জন্নি আমি দোয়া করি।’ শহরে রিক্সা চালায় আসলাম খা। তিনি একটা ইফতারী প্যাকেট পেয়ে বললেন, ‘ইফতার পাইয়া খুব উপকার হইছে। স্টেশন বাজার এলাকায় দুধ দিতে এসেছিলেন রিক্সা চালক আফাজদ্দিন। বললেন, ‘আমি সারাদিন রিক্সা চালাইন্যে। চুক্তিতে দুধ দিয়ে আসি। দুপুরে বাইরেই। সন্ধ্যায় বাড়ি যাইয়্যা ইফতার করি। আজ দেরি হইয়্যে গেছে। এখন ইফতারি পেয়ে খুব উপকার হইলো।’
অনিয়মিত ব্যক্তিদের পাশাপাশি কিছু অসহায় দরিদ্র ব্যক্তিও ইফতার নিতে আসেন। বিশেষ করে যারা অন্যর নিকট চেয়ে চিন্তে দিন কাটান। এরকমই একজন ফুল বানু। তিনি বলেন, ‘রোজার পয়লা দিন থ্যেই দু একদিন পর এই পথে আসলি ইসতার পাই। চা-য়ে চিন্তে খাই। ইসতার পাইলি উপকার হয়।’
উল্লেখ্য, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার যোগদানের বছর থেকেই রমজান উপলক্ষে প্রতি বছরই চলছে বিনামূল্যে পথচারীদের জন্য ইফতার বিতরণ কার্যক্রম। ২০২০ সালে বৈশ্বিক দুয়োর্গ করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে ফরিদপুরের সব মানুষই স্বাস্থ্যবিধি মেনে বসতবাড়িতে ছিল। তখন নানা জরুরী প্রয়োজনে যারা বাইরে আসত তাদের জন্য ছিল আয়োজন। ২০২১ সালে করোনা পরিস্থিতি কমে আসলে অসহায় দুঃস্থ সর্ব সাধারণ পথচারীদের জন্য ইফতার সামগ্রী প্রদান করা হয়। বিগত বছরের ন্যায় এবারেও মাসব্যাপী চলছে ইফতার বিতরণ কার্যক্রম; চলবে শেষ রোজা পর্যন্ত।