শরীরে তখনও ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। তবে তামিম ইকবাল এমন আনন্দের সময়ে সেটাকে তুচ্ছই করলেন। আশিদা ফার্নান্দোর আগের বলে দারুণ এক চার মেরেছিলেন, পরের বলে এক রান নিতেই পূর্ণ হলো সেঞ্চুরি। কোনোরকমে রানটা শেষ করে এসেই হেলমেট খুলে ব্যাটটা উঁচিয়ে ধরলেন তামিম। আকাশের দিকেও তাকালেন, সেঞ্চুরির পর ‘বাবা তোমার জন্য’ বলতে। দারুণ সব ‘এফোর্টলেস’ শট খেললেন। দিনভর হয়ে থাকলেন দলের ভরসা। ক্লান্তিতে ক্রাম্প হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে দলকে রেখে গেলেন স্বস্তিতে। তার আলোয় উজ্জ্বল হলো বাংলাদেশের ইনিংস। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনশেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রান। লঙ্কানদের চেয়ে এখনও ৭৯ রানে পিছিয়ে টাইগাররা। মুশফিকুর রহিম ৫৩ ও লিটন দাস ৫৪ অপরাজিত আছেন। আগের দিনের ব্যাটিংটা দ্বিতীয় দিনেও টেনে আনেন দুই ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও তামিম ইকবাল। তাদের কল্যাণে পাঁচ বছর পর বাংলাদেশ পায় শতরান পাড় করা উদ্বোধনী জুটি। ২২ বছর আর ১২৩ টেস্টে কেবল অষ্টমবারের মতো। ওই স্বস্তি অবশ্য টেকেনি বেশিক্ষণ। শ্রীলঙ্কার পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম উইকেট হিসেবে সাজঘরের পথ ধরেন জয়। আশিদা ফার্নান্দোর লেগ সাইডের বল খেলবেন কি না এমন দ্বিধায় ছিলেন তিনি। শেষ অবধি গ্লাভসে লেগে বল চলে যায় উইকেটের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকা নিরোশান ডিকভেলার কাছে। ১৪২ বলে ৫৮ রান করেই থামতে হয় তাদের। এরপর ক্রিজে আসা নাজমুল হোসেন শান্তও ক্রিজে থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ। কনকাসন সাব হিসেবে খেলতে নামা রাজিথার ওভারে অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিয়ে সাজঘরে ফেরত যান তিনি। ২২ বলে করেন কেবল ১ রান। অধিনায়ক মুমিনুল হক উইকেটে আসার পর থেকেই ছিলেন অস্বস্তিতে। তার অফ ফর্মের ছাপ স্পষ্ট হয়েছে আউট হওয়ার ধরনেও। অফ স্টাম্পের একটু বাইরে পড়া বল সুইং করেছিল খানিকটা, ডিফেন্ড করতে গিয়েও পারেননি মুমিনুল, ফিরতে হয় বোল্ড হয়ে। ১৯ বলে ২ রান করেন তিনি। এ নিয়ে সর্বশেষ ছয় ইনিংসেই ফিরলেন সিঙ্গেল ডিজিটে। তার আউটের পর তামিমের অস্বস্তি বাড়তে থাকে। প্রচ- গরমে পানি শূন্যতা দেখা দেয়, ছাড়তে হয় মাঠও। রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এখন যে কেউ আউট হওয়ার পর সুস্থ বোধ করলে আবার নামতে পারবেন তামিম। ২১৭ বলে ১৩৩ রান করেছেন তিনি। দিনের শেষবেলাটা পাড় করেছেন লিটন ও মুশফিক। ২ চারে ১৩৩ বলে ৫৩ রান করেছেন মুশফিক, ১১৪ বলে ৫৪ রান এসেছে লিটনের ব্যাটে। লঙ্কানদের দিনের সবচেয়ে সফল বোলার কনকাসন সাব হয়ে নামা রাজিথা। ১১ ওভার বল করে কেবল ১৭ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন দুই উইকেট।