১৯ বছর ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার নাছরীন নবী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন হাসিনা আক্তার। দীর্ঘ এই সময়টায় একই বিদ্যালয়ে থেকে তিনি ‘মানুষকে মানুষ মনে করেন না বলে’ অভিযোগ তুলে তাঁকে ওই বিদ্যালয় থেকে বদলির দাবি তুলেছেন উপজেলা শিক্ষা কমিটির সকল সদস্য।
প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তারের বদলির একই দাবি করেছেন ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এস এম আব্দুল্লাহ মনসুর। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে দেওয়া এক আবেদনে তিনি ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ আনেন।
তবে প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তার বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে এক অভিভাবকের কাছ থেকে আট ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, বরাদ্দ না পেলেও টাকা আত্মসাতের মতো অবাস্তব অভিযোগ আনা হয়েছে। মূলত পছন্দের একজন প্রধান শিক্ষককে এখানে পদায়ন করতে এটা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, নিজ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক করোনাকালীন নিয়মিত বিদ্যালয়ে না আসায় ব্যবস্থা নেওয়া ও প্রতিবাদ করায় তার পিছু লেগেছে বলেও অভিযোগ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে নাছরীন নবী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এস এম আব্দুল্লাহ মনসুর অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন বরাদ্দ তছনছ করেছেন প্রধান শিক্ষক। এ ছাড়া পরীক্ষায় সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। এ বিষয়ে সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গত ২৩ মে তদন্ত করেন।
এদিকে গত ২২ মে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় প্রধান শিক্ষক হাসিনা আক্তারের বিষয়ে অভিযোগ সম্পর্কে পূর্ব নির্ধারিত আলোচনা হয়। সভার রেজুলেশন অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও, বর্তমানে বদলি) রুমানা আক্তারের সভাপতিত্বে ওই সভায় পৌর মেয়র মো. তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. মুরাদ হোসেন, নাছরিন শফিক আলেয়া, ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে হাসিনা আক্তারক বদলির ‘সিদ্ধান্ত’ নেওয়া হয় বলে রেজুলেশনে উল্লেখ রয়েছে।
ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. লুৎফুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় ওই শিক্ষককে বদলির বিষয়ে সভার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হয়েছে। জেলা থেকেও তদন্ত হয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’